পরিবারের মুখের দিকে তাকিয়ে দেশের মায়া ত্যাগ করে বিদেশে পাড়ি দিয়েছিলেন অনেকেই আগেই। খেয়ে না খেয়ে বাড়ি টাকা পাঠিয়েছেন প্রতি মাসেই। কিন্তু ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস, দীর্ঘদিন বিদেশ থেকে দেশে ফিরলেও যেন তাকে চিনছে না কেউই। এ ঘটনায় গোটা এলাকাজুড়েই শুরু হয়েছে ব্যাপক শোরগোল।
ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় নিজ বাড়িতে ঢুকতে না পেরে গেটের সামনে স্ত্রীকে নিয়ে অবস্থান করছেন প্রবাস থেকে ফেরা এক যুবক।
শনিবার (১২ নভেম্বর) সন্ধ্যায় সরেজমিনে এ দৃশ্য দেখা যায়। শুক্রবার (১১ নভেম্বর) সকাল থেকে তারা সেখানে অবস্থান করছেন। এ ছাড়া বাড়ির অন্য সদস্যরা গেটে তালা লাগিয়ে ভেতরে রয়েছেন।
নিহত রায়হান আলী (২৭) উপজেলার বড়পলাশবাড়ী ইউনিয়নের উজিরমুনি গ্রামের আইজুল ইসলামের ছেলে। জীবিকার সন্ধানে প্রায় পাঁচ বছর আগে তিনি মালয়েশিয়া যান। ছয় মাস আগে তিনি মালয়েশিয়া থেকে দেশে আসেন।
ভুক্তভোগী রায়হান জানান, মালয়েশিয়ায় অবস্থানকালে তিনি প্রতি মাসে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা দেশে পাঠান। পরে সেই টাকা দিয়েই পরিবারে সচ্ছলতা ফিরে আসে। ইতিমধ্যে বাড়িটি তৈরি করা হয়েছে। তার বাবা ও তিন ভাই একটি করাত কল দিয়েছে।
তিনি আরও জানান, শ্বশুর বাড়ি থেকেও প্রায় পাঁচ লাখ টাকা নিয়ে বাবাকে দিয়েছি। প্রায় তিন মাস হয়ে গেল বাবা একটা তুচ্ছ ঘটনায় আমার স্ত্রীসহ আমাকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে। বউ নিয়ে কোথায় যাবো? এ কারণে বাড়ির গেটের সামনে অবস্থান নিয়েছি। কিন্তু আমাকে দেখে তারা গেটে তালা লাগিয়ে দেয়। আমি যখন বিদেশ থেকে টাকা পাঠাচ্ছিলাম তখন ভালোই ছিলাম। এখন যখন আমি বাড়ি ফিরেছি, আমি সবার কাছে খারাপ।
রায়হানের বাবা আজিজুল ইসলাম বলেন, আমার ছেলে ও স্ত্রীকে ঘরে রাখব না। ইউপি চেয়ারম্যানের মাধ্যমে চারশতক জমি রেজিস্ট্রি ও এক লাখ টাকা দিয়েছি। অন্য জায়গায় বাড়ি করতে। আমি আমার ছেলেকে বাড়িতে আনব না।
এদিকে এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান সাহাবুদ্দিন মিঞার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি সংবাদ মাধ্যমকে এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, পিতা-পুত্রের ঝামেলা একবার মীমাংসা করা হয়েছিল, কিন্তু আবারো তাদের মধ্যে ঝামেলা দেখা দিয়েছে। পারিবারিক বিষয়ে কিছু করার থাকে না বলেও জানান তিনি।