প্রতিমন্ত্রীর কাছে ঠিক এই কথাটি শোনার জন্যই বাংলার মানুষ অধীর আগ্রহে অপেক্ষমান ছিল

নসরুল হামিদ হলেন বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের একজন সক্রিয় রাজনীতিবীদ। তিনি দলের প্রতি শ্রদ্ধাবনত থেকেই সব সময় কাজ করে যাচ্ছেন। নসরুল হামিদ তার এলাকা ঢাকা-৩ কেরানীগঞ্জ আসন থেকে সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। সম্প্রতি তিনি তার এক বক্তব্যে বলেছেন লোডশেডিং এর সমস্যা বেশিদিন আর বাংলার মানুষকে সইতে হবে না। খুব তাড়াতাড়ি এই সমস্যার সমাধান করা হবে।

বিদ্যুৎ উৎপাদন ঘাটতির কারণে সারাদেশে চলমান লোডশেডিং বেশিদিন স্থায়ী হবে না বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। তিনি বলেন, পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের দ্বিতীয় ইউনিট, রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং ভারত থেকে আমদানি করা ১৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ চলতি বছরের মধ্যে জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে। তাই আশা করি এই অবস্থা বেশিদিন থাকবে না। মঙ্গলবার রাতে প্রতিমন্ত্রী তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া রোগ-১৯ এর প্রভাব দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে সর্বত্র অনুভূত হচ্ছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বিশ্বকে গভীর সঙ্কটে নিমজ্জিত করেছে ঠিক যেমন সবাই বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া রোগ -১৯ আক্রমণ থেকে পুনরুদ্ধার করছে। এই সংকট শুধু উন্নয়নশীল দেশেই নয়, অনেক উন্নত দেশেও রয়েছে। যুদ্ধের প্রভাব জ্বালানি বাজারকে অত্যন্ত অস্থির করে তুলেছে। আন্তর্জাতিক খাদ্য বাজারও অস্থির। এই বৈশ্বিক সংকট আমাদের বিপদে ফেলেছে।

“বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য আমাদের ১৬০০-১৭০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস প্রয়োজন,” তিনি যোগ করেন। সেখানে আমরা মাত্র 900 মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করতে পারি।

আমরা আর গ্যাস দিতে পারছি না। কারণ কৃষি ও শিল্পকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। কৃষিকাজের জন্য সার অপরিহার্য। সার উৎপাদনের জন্যও আমাদের প্রচুর গ্যাস দিতে হয়। বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কেও জানাচ্ছি, আমাদের দৈনিক গ্যাস উৎপাদন হচ্ছে ২৩০০ মিলিয়ন ঘনফুট। বাকি চাহিদা এলএনজি আমদানি করে জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হচ্ছে। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পরও দৈনিক গ্যাস উৎপাদন ছিল মাত্র ১৭৪৪ মিলিয়ন ঘনফুট। সেখান থেকে আমরা উৎপাদন ক্ষমতা দৈনিক ২৭৫০ মিলিয়ন ঘনফুটে উন্নীত করেছি। ২০১৭ সাল পর্যন্ত আমরা এই ক্ষমতায় গ্যাস উৎপাদন করেছি। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, খনির মজুদ কমে যাওয়ায় আমাদের নিজস্ব গ্যাস উৎপাদন কমতে শুরু করেছে।

আমরা এলএনজি আমদানির জন্য কাতার ও ওমানের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির আওতায় এলএনজি পাচ্ছি। এ ছাড়া আমরা আন্তর্জাতিক স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি আমদানি করতাম। বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া রোগ-১৯-এর আগে আমরা ৪ ডলারে এলএনজির একটি ইউনিট আমদানি করতাম, কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে তা ১ ডলার ছাড়িয়েছে। এত বেশি দামে আমদানি আমাদের অর্থনীতিতে বিরাট চাপ সৃষ্টি করবে। শুধু গ্যাসের দাম নয়। সব ধরনের জ্বালানি তেলের দাম বেড়েছে। ২০২১ সালের জুলাইয়ে ডিজেল ব্যারেল প্রতি ৭৭ ডলার ছিল; সেটা এ বছরের জুনে ১৭১ ডলারে দাঁড়িয়েছে।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার নিজস্ব জ্বালানি অনুসন্ধান করছে, উৎপাদন বাড়াচ্ছে এবং বিদ্যমান কূপের গভীরে খনন করছে। ইতিমধ্যে, আমাদের আগামী ৩ বছরের জন্য একটি আপগ্রেড, একটি ওয়ার্কওভারের জন্য একটি স্বল্পমেয়াদী পরিকল্পনা রয়েছে, যাতে প্রতিদিন ৬১৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস ৪৬টি কূপ থেকে জাতীয় গ্রিডে পুনরায় সংযোগ করা যায়।

প্রসঙ্গত, বিদ্যুত হলো মানুষের জীবনে খুব প্রয়োজনীয় একটি জিনিস। বিদ্যুত ছাড়া কোনোকিছুই করা সম্ভব না। নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুত থাকার কারণেই বাংলাদেশ আজ এগিয়ে যাচ্ছে উন্নতির শিকরে। আর এমনটি সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার জন্য।