Monday , December 23 2024
Breaking News
Home / Sports / প্রতারকের প্রেমের ফাঁদে বাংলাদেশ দলের নারী ক্রিকেটার, করেছেন বিয়ে

প্রতারকের প্রেমের ফাঁদে বাংলাদেশ দলের নারী ক্রিকেটার, করেছেন বিয়ে

বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা ক্রিকেট দলের অলরাউন্ডার স্বর্ণা আক্তারের বাড়িতে চুরির ঘটনা ঘটেছে। দিনাজপুর থেকে আল-আমিন দেওয়ান ওরফে আজানকে (২৯) গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। এ সময় চোরাই আইফোনসহ অন্যান্য মালামাল উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তার আল আমিন ফেসবুকে দেখা হওয়ার 17 দিন পরে একজন মহিলা ক্রিকেটারকে গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তা হিসাবে পরিচয় দিয়ে বিয়ে করেছিলেন। বিয়ের পর বাড়ি থেকে চুরি করে পালিয়ে যায়। গতকাল বিকেলে কাওরান বাজার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বাহিনীর লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এসব কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, গত ২৯ জানুয়ারি বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা ক্রিকেট দলের অলরাউন্ডার স্বর্ণা আক্তার সতীর্থদের সঙ্গে অনুশীলন করছিলেন, তখন তার দুটি আইফোন চুরি হয়। একই দিন তার বাড়ি থেকে ৩৫০০ ডলার, ব্যাংকের চেক বই ও ভিসা কার্ডসহ মূল্যবান জিনিসপত্র চুরি হয়। এ ঘটনায় ক্রিকেটার স্বর্ণা আক্তার বাদী হয়ে শেরেবাংলা নগর থানায় চুরির মামলা করেন। ঘটনাটি ব্যাপক আলোচিত হয়। চুরির ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিকে ধরতে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ায় র‌্যাব।

এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার রাতে র‌্যাব-১৩ ও র‌্যাব-২ এর একটি দল দিনাজপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে চুরির সাথে জড়িত একমাত্র আসামী মোঃ আল-আমিন দেওয়ান ওরফে আজানকে গ্রেফতার করে। চারটি আইফোন, প্রাইম ব্যাংকের একটি চেক বইয়ের পাতা, প্রাইম ব্যাংকের একটি মাস্টার কার্ড, বেশ কয়েকটি বৈদেশিক মুদ্রা, তিনটি ঘড়ি, চারটি চেইন, একটি নাকেরপিন, একটি ব্রেসলেট, দুটি আংটি ও একটি হাত ব্যাগসহ ৫টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আল আমিন র‌্যাবকে জানায়, সে প্রতারণার টার্গেটে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভিন্ন আইডি খুলে নিজেকে বড় ব্যবসায়ী পরিচয় দিয়ে সুন্দরী নারীদের আকৃষ্ট করতে নিয়মিত বিভিন্ন স্টাইলে ছবি পোস্ট করত। এছাড়াও, তিনি নিজেকে দেখানোর জন্য টিকটক ভিডিও তৈরি করতেন এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোড করতেন। এভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সুন্দরী নারীদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলতেন। পরে গ্রেফতার আল আমিন নারীদের বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তাদের আস্থা অর্জন করে নিয়মিত দেখা করত। অনেক ক্ষেত্রে, বিবাহিত বা অবিবাহিত মহিলারা সুবিধাজনক সময়ে তাদের নগদ টাকা এবং মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে আত্মগোপন করতেন। সে সময় তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে নিজ নিজ ফেসবুক আইডি ডিলিট করতেন। পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে কয়েকদিন পর তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আরেকটি আইডি খুলে কাউকে প্রতারণা করতেন এবং একই কাজ করতেন। মঈন বলেন, একই টার্গেট নিয়ে গ্রেপ্তার হওয়া আল আমিন নিজেকে গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তা হিসেবে পরিচয় দিয়েছিলেন এবং একজন নারী ক্রিকেটারকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরিচিত করেছিলেন কারণ তিনি বর্তমানে ছুটিতে ছিলেন তাই তিনি পোশাক ব্যবসা করছেন। পরে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে ওঠে।

একপর্যায়ে ১৭ দিন ডেটিং করার পর ১২ জানুয়ারি আল আমিন ওই নারী ক্রিকেটারকে বিয়ে করেন। ক্রিকেটার স্বর্ণা আক্তারসহ ভুক্তভোগী নারী ক্রিকেটারসহ ৪ জন প্রায় ৩ বছর ধরে রাজধানীর পূর্ব রাজাবাজারের একটি ফ্ল্যাটে বসবাস করছিলেন। মহিলা ক্রিকেটারকে বিয়ে করে ওই ফ্ল্যাটেই নতুন স্ত্রীকে নিয়ে আলাদা ঘরে থাকতে শুরু করেন আল আমিন। এসময় তাদের সাথে প্রতারণার সুসম্পর্ক গড়ে তোলে এবং ব্যবসাসহ বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে বিভিন্ন সময় টাকা পরিশোধের আশ্বাস দিয়ে তাদের কাছ থেকে প্রায় দুই লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। গত ২৯ জানুয়ারি সকাল সাড়ে ৯টার দিকে স্বর্ণা ও তার ৩ রুমমেট সতীর্থদের নিয়ে রাজধানীর তেজকুনিপাড়া ক্রীড়া মাঠে অনুশীলনে যান। এ সময় আল-আমিন বাড়িতেই অবস্থান করছিলেন। পরিকল্পনা মোতাবেক স্বর্ণার রুমের আলমারির ড্রয়ারের তালা ভেঙ্গে রুমমেটের ব্যাগ থেকে একটি ডলার, ১টি চেক বই, ভিসা কার্ড, ৬৫০০ টাকা এবং তাদের ব্যবহৃত ব্যাগ নিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে তেজকুনিপাড়া ক্রীড়া মাঠে আসেন।

. এ সময় অলরাউন্ডার স্বর্ণা আক্তার দুই ব্যাগ থেকে ব্যবহৃত আইফোন নিয়ে তাদের অনুশীলনের ভিডিও করার কথা বলে কিছুক্ষণ ছবি তুলে মাঠ থেকে পালিয়ে যান। স্বর্ণার ব্যবহৃত একটি আইফোন রাজধানীর পুরনো পণ্যের বাজারে ১১ হাজার টাকায় বিক্রি হয়। ঢাকা থেকে বাসে করে দিনাজপুর গিয়ে প্রথমে রংপুর গিয়ে একটি হোটেলে রাত কাটান। পরের দিন রংপুর থেকে দিনাজপুর হোটেলে থাকা। অনুশীলন শেষে স্বর্ণা আক্তার আল আমিন আরেক নারী ক্রিকেটারের মোবাইল ফোন থেকে তার মোবাইলে কল করলে তাকে দেখতে পাননি এবং ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। পরে তারা বাসায় ফিরে ফ্ল্যাটের প্রধান দরজা তালাবদ্ধ অবস্থায় খেয়ে ফেলে। এ সময় বাড়ির দারোয়ানের সহায়তায় তালা ভেঙে ঘরে ঢুকে ঘরের সব জিনিসপত্র এলোমেলো অবস্থায় দেখতে পান।

র‌্যাব জানায়, আল-আমিন ২০১১ সালে রাজধানীর একটি স্কুল থেকে এসএসসি পাস করেন। তিনি রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে কাপড়ের দোকানে কাজ করতেন। 2016-2017 সাল থেকে সে নারীদের সাথে অনৈতিক সম্পর্ক তৈরি করে বিভিন্ন ধরনের প্রতারণা করতে থাকে।

About Zahid Hasan

Check Also

সাকিব ইস্যুতে বাংলাদেশকে ‘নিষিদ্ধ’ করতে পারে আইসিসি

সাকিব আল হাসানকে দেশের মাটিতে শেষ টেস্ট খেলার সুযোগ দেওয়ার দাবিতে তার ভক্তরা নানা কর্মসূচি …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *