Monday , December 23 2024
Breaking News
Home / Countrywide / প্রতারককে জব্দ করতে বিপুল পরিমান অর্থ দেনমোহরানায় বিয়ে করলেন নারী ব্যাংকার

প্রতারককে জব্দ করতে বিপুল পরিমান অর্থ দেনমোহরানায় বিয়ে করলেন নারী ব্যাংকার

দেশের উন্নতির পাশাপাশি পিছিয়ে নেই প্রতারকরও। প্রতারণার নানা ধরনের ডিজিটাল কায়দাও বেরকরেছেন প্রতারকেরা। বিভিন্ন ধরনের অভিনব কায়দায় প্রতারকরা তাদের অসামাজিক কর্মকাণ্ড চাইলিয়ে যাচ্ছে। হাতিয়ে নিচ্ছে সাধারণ মানুষের কোটি কোটি টাকা। এসকল প্রতারকদের কাছে সহজেই বোকা বোনে যাচ্ছে সাধারণ মানুষ। মানুষের বিভিন্ন প্রকার বিয়ের কথা শুনেছেন অনেকেই। বিপুল পরিমাণ দেনমোহর আনার বিয়েও অস্বাভাবিক কিছু নয়। তবে এক প্রতারক আর এক প্রতারককে কায়দায় ফেলে ১০ কোটি টাকা দেনমহর আনায় বিয়ে করার বিষয় নিয়ে সংবাদ মাধ্যম ও যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আলোচনা সমালোচনা সৃষ্টি হয়েছে।

আলমগীর হোসেন কোটি টাকার নিচে কোনো লেনদেন করেননি। প্রতারণার জন্য রাজধানীর গুলশানে আল-তাকদির ( Al-Taqdir Gulshan ) নামের এক ভুয়া ঠিকাদারকেও প্রায় দেড় কোটি টাকা খরচ করেছেন তিনি। এরপর শুরু হয় আলমগীরের প্রতারণা। আলমগীরের লোকজন হাজার হাজার কোটি টাকার ভুয়া ওয়ার্ক অর্ডার তৈরি করে সরবরাহকারীদের আকৃষ্ট করে চলেছে। বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে তিনি জনগণের কাছ থেকে অন্তত ১০০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন[১] আলমগীর ও তার লোকজন।

এসব প্রতারণামূলক লেনদেনের বিষয়ে আলমগীর একটি বেসরকারি ব্যাংক ( Bank )ের কর্মকর্তা সালমা সুলতানা ( Salma Sultana ) সুইটির সঙ্গে দেখা করেন। একপর্যায়ে ওই নারীর সঙ্গে তার বন্ধুত্বও গড়ে ওঠে। ব্যাংক ( Bank ) কর্মকর্তা আলমগীরকে ( Alamgir ) আশ্বস্ত করেন যে তিনি অনুদান হিসেবে ব্যাংক্যে মাধ্যমে ২,০০০ কোটি টাকা এবং ১,২০০ কোটি টাকার এলসি নগদ করবেন।

এমন আশ্বাস পেয়ে গত বছরের জুলাইয়ে প্রথম স্ত্রীকে না জানিয়ে সালমা সুলতানা সুইটিকে বিয়ে করেন আলমগীর। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সাম্প্রতিক তদন্তে আলমগীরের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের বিবরণ উঠে এসেছে।

আলমগীরের বিরুদ্ধে প্রায় ডজনখানেক মামলা রয়েছে। বুধবার রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে আলমগীর ও তার দুই সহযোগীকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি। গ্রেফতার অপর দুইজন হলেন শফিকুল ইসলাম ও ইমরান হোসেন।

বৃহস্পতিবার মালিবাগে সিআইডির প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে আলমগীরের প্রতারণার বিষয়ে বিস্তারিত জানান সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি ইমাম হোসেন।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সালমার সঙ্গে বিয়ের পর মাসিক দুই লাখ টাকা ভাড়ার চুক্তিতে গুলশানে একটি বাসা ভাড়া নেন তারা। কিন্তু পরবর্তীতে এলসি না থাকায় দ্বিতীয় স্ত্রীর সঙ্গে তার পরকীয়া হয়। একপর্যায়ে গত নভেম্বরে তাদের বিচ্ছেদ হয়। সালমাকে ১০ কোটি টাকার মধ্যে নগদ ৪ কোটি টাকা এবং স্বর্ণালঙ্কার ৭৫ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে। এদিকে দেনমোহরের বাকি টাকা আদায়ের জন্য আলমগীরের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছেন ওই নারী ব্যাংকার।

সিআইডি জানায়, আলমগীরের গুলশান অফিসে কাজের চুক্তি করতে আসা ব্যবসায়ীরা নামীদামী রেস্তোরাঁয় শতাধিক খাবারের ব্যবস্থা করেন। এছাড়া বিভিন্ন রিসোর্টে বেশ কয়েকবার বড় পার্টির আয়োজন করা হয়। এমনকি সাব-কন্ট্রাক্টরদের আনুগত্য অর্জনের জন্য আলমগীর প্রকল্প এলাকায় বালি সরবরাহের জন্য তার নিজস্ব ডাম্পিং পয়েন্ট উদ্বোধন করেছিলেন। এভাবে চাকরির চুক্তির নামে সরবরাহকারীদের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিতেন।

জালিয়াতির মাধ্যমে টাকা আত্মসাৎ করে আলমগীর ও তার সহযোগীরা আত্মগোপন করে। এদিকে বালু নিক্ষেপের অভিযোগে আলমগীরের সঙ্গে যোগাযোগ করে ভুক্তভোগীরা । তবে তাদের মোবাইল ফোন বন্ধ ছিল। এমনকি তিনি গুলশানের আল-তাকদিরের সাথে যোগাযোগ করে সেখানে তালা ঝুলতে দেখেন। তবেই তারা প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পারে। পরে তারা সিআইডিকে জানায়।

উল্লেখ্য, দিনে দিনে বেড়েই চলেছে বিভিন্ন ধরনের প্রতারক চক্র। এদের কবলে পড়ে অনেক সাধারণ মানুষ তাদের সর্বোচ্চ হারিয়েছেন। ভুক্তভুগিরা আলমগীরের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির পাশাপাশি তাদের অর্থ ফিরে পাওয়ার আশা ব্যক্ত করেছেন। এই পর্যন্ত এই প্রতারক বাহিনী কমপক্ষে সাধারণ মানুষের থেকে ১০০ কোটি টাকারও বেশি হাতিয়ে নিয়েছে বলে জানান সিআইডি।

About Nasimul Islam

Check Also

তারেক রহমানের ৩১ দফা বাস্তবায়নে ধানমন্ডি যুবদলের ব্যতিক্রমী উদ্যোগ

ধানমন্ডি থানা যুবদল পরিবেশ রক্ষায় একটি ব্যতিক্রমী এবং প্রশংসনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করেছে, যা এলাকাবাসীসহ সারা …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *