সম্প্রতি ঘটনা স্যেশ্যল মিডিয়ায় বেপক ভাইরাল হয়েছে। যে ঘটনায় এক কলেজ পড়ুয়া ছাত্রী চিরকুটে তার বাবাকে দায়ী করে আ’ত্মহনন করেছেন। দিন যাচ্ছে আর এই ঘটনার একেরপর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য গন মাধ্যমে প্রকাশিত হচ্ছে। এবার এই ঘটনা সম্পর্কে আত্মহননকারী সানজানা নামের ওই তরুণীর মায়ে দেওয়া গনমাধ্যমের বেক্তব্য সাড়া ফেলেছে অনলাইনে।
রাজধানীর দক্ষিণখান থানার মোল্লারটেক এলাকার অ্যাপার্টমেন্ট থেকে লাফিয়ে পড়ে আ/ ত্মহত্যা করা সেই সানজানা মোসাদ্দিকা ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। সানজানা মৃ/ত্যুর আগে একটি চিরকুট লিখে বলেছেন, তার বাবা একজন রে/ পিস্ট ছিলেন, তার হাত থেকে একজন কাজের মেয়েও নিস্তার পায়নি। এদিকে তার মৃ/ ত্যুর পর তার বন্ধুরা গতকাল রবিবার রাজধানীর মহাখালী ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে একটি মানববন্ধন করেছেন। ওই মানববন্ধনে বলা হয়, সানজানা মোসাদ্দিকাকে হ/ ত্যা করা হয়েছে, এটা আ/ ত্মহত্যা নয়।
এমনসব অভিযোগের পর সোমবার রাতে এক সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা বলেছেন সানজানার মা উম্মে সালমা মনি। ঢাকা টাইমসকে উম্মে সালমা মনি বলেন, ‘আমি ও আমার মেয়ে সব সময় ভয়ভীতির মধ্যে থাকতাম।
সংবাদ মাধ্যমে দেয়া তার সাক্ষাৎকার তুলে ধরা হলো-
ঢাকা টাইমস: সানজানার বাবা তার সঙ্গে কেমন ব্যবহার করতেন?
উম্মে সালমা: সব সময়ে আমিও আমার বাচ্চা ভয়ভীতির মধ্যে থাকতাম।
ঢাকা টাইমস: কী রকম ভয়ভীতি ?
উম্মে সালমা: অনেক টর্চার করতো। ও আমাকে আমাকে বলতো তোর মৃ/ .ত্যু হবে আমার হাতে। এতে আমার বাচ্চা ভয় পেতো। ও পরোকীয়া করতো। ২০১৭ সালে বিয়ে করেছে। আমার মেয়েতো বাচ্চা মানুষ। ও আমাকে মারধোর করতো। আমার শরীরে চিহ্ন আছে। ও যেইদিন মারা গেছে শনিবার ওইদিনও আমাকে বলেছে, তুমি থানায় জিডি করো। ও একটি মেয়েকে বিয়ে করেছে, সেই ঘরে আরেকটি মেয়ে সাত মাসের অন্ত:স্বত্তা। আমার মেয়ে আপত্তি করেনি। আমার মেয়ে বলতো পড়াশোনা করবো।
ঢাকা টাইমস: কে জিডি করতে গেছেন?
উম্মে সালমা: আমাকে জিডি করতে পাঠিয়েছে, আমার মেয়ে। ওনার হিংস্রতা আমার মেয়ে মেনে নিতে পারেনি। শনিবারও আমাকে আমার মেয়েকে মারধোর করেছে। তখন আমার মেয়ে বলেছে, মা তুমি কী এখনও জিডি করবে না। এখনও তুমি তাকে ডিভোর্স দিয়েছো, তাহলে তুমি কেন তাকে এখনও সহ্য করছো ? আমি অ্যাপার্টমেন্টের লোকজনকে বলেছি ওনাকে ঢুকতে দিয়েন না। তখন অ্যাপার্টমেন্টের লোকে বলেছেন, আপনারা প্রশাসনের মাধ্যমে করে যেটা করতে চান। সবাই ভদ্র লোক কেউ দায়িত্ব নিতে চাননি। আমি তো জানিনা যে, আমার বাচ্চার এমন হবে। আমি থানাতে গেছি, কিন্তু থানা থেকে বাসায় আসতে পারিনি। থানা থেকে রাস্তায় তখন নিরাপত্তাকর্মী ফোন করে বলেছেন, যে আপনার বাচ্চা পড়ে গেছেন। তখন আমি উত্তরা কসাইবাড়ি এলাকায়। খবর পেয়ে আমি হাসপাতালে যাই। আমার মেয়ে তিন ঘন্টা বেঁচে ছিল। যাবার আগে ও আমাকে অনেক কথা বলে গিয়েছে
ঢাকা টাইমস: সানজানার বাবা কি পলাতক?
উম্মে সালমা: আপনি খোঁজ করেন। আমি তো ওর খোঁজ করি না। আমার রুচি নেই। তবে পুলিশ বলছে, ও পলাতক রয়েছে।
এ ঘটনায় গত শনিবার রাতে দক্ষিণখান থানায় একটি মামলা করেছেন উম্মে সালমা মনি। মামলায় সানজানার বাবা শাহীন আলমকে একমাত্র আসামি করা হয়েছে। মামলা নম্বর-৫৮। মামলাটি তদন্ত করছেন দক্ষিণখান থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রিজিয়া খাতুন। রিজিয়া খাতুন ঢাকাটাইমসকে বলেন, শনিবার যখন সানজানা মারা যায় তখনই ওর বাবা ছিটকে পালিয়ে যায়। তখন থেকেই তার মোবাইল বন্ধ। হাসপাতাল থেকে সানজানার ডিএনএ পরীক্ষা করতে দিয়েছে, ওই ডিএনএ প্রতিবেদন পাওয়ার পর ময়না তদন্ত প্রতিবেদন করা হবে। ওই প্রতিবেদন পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমি দুয়েকের মধ্যে ডিএনএ করে ফেলবো। পরে ময়না তদন্তের প্রতিবেদন চাইবো।
এই ঘটনার পর থেকে প্রয়াত সেই তরুণীর বাবা পলাতক রয়েছে। তাকে এখনো সনাক্ত করতে সক্ষম হয়নি পুলিশ। এ বিষয়ে সানজানার মায়ে সাথে পুলিশ যোগাযোগ করলে সেই কিছুই বলতে পারেনা বলে তাদের জানিয়ে দেয়।