বাংলাদেশের প্রায় চল্লিশটি মতো রাজনৈতিক দল রয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলো তাদের দল পরিচালনা করার জন্য ব্যয় নির্বাহ করে থাকে। তাহলে অনেকের নিকট প্রশ্ন আসে কিভাবে এসে থাকে রাজনৈতিক দলগুলো পরিচালনার জন্য দরকারী বিপুল পরিমাণ অর্থ। দলীয় ফরম বিক্রিসহ দলের সম্পত্তি থেকে এই আয় এসে থাকে। এই অর্থ দলের ভেতর থেকেই আসে। নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দলগুলোর আয় ব্যয়ের কত সেটা জমা দিতে হয় নির্বাচন কমিশনে। এবার ক্ষমতাসীন দল আ. লীগের আয়-ব্যয় তুলে ধরলেন দলটি।
২০২১ সালের ক্যালেন্ডার বছরের নিরীক্ষিত হিসাব-নিকাশের প্রতিবেদন নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে জমা দিয়েছে আওয়ামী লীগ। রোববার সকালে আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ এইচএন আশিকুর রহমানের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল নির্বাচন কমিশন সচিবের কাছে এ প্রতিবেদন জমা দেয়।
প্রতিনিধি দলে ছিলেন প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বুড়ুয়া, উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান, অর্থ ও পরিকল্পনা উপ-কমিটির সদস্য জাফরুল শাহরিয়ার জুয়েল। পরে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের আয়-ব্যয়ের সারসংক্ষেপ সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরা হয়।
২০২১ সালের ক্যালেন্ডার বছরে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মোট আয় ছিল ২১ কোটি ২৩ লাখ ৪৬ হাজার ১০৬ টাকা। ২০২০ পঞ্জিকা বছরে মােট আয় ছিল ১০ কোটি ৩৩ লাখ ৪৩ হাজার ৫৩৩ টাকা। ২০২০ পঞ্জিকা বছরের তুলনায় ১০ কোটি ৯০ লাখ ২ হাজার ৫৭৩ টাকা বেশি হয়েছে।
আয় বৃদ্ধির কারণ: মনোনয়ন ফরম বিক্রি এবং প্রাথমিক সদস্য সংগ্রহ ফরম বিক্রি। আয়ের প্রধান ক্ষেত্র: মনোনয়ন ফরম বিক্রি, প্রাথমিক সদস্য সংগ্রহ ফরম বিক্রি এবং সম্পত্তি থেকে আয়।
ব্যয়: ২০২১ পঞ্জিকা বছরে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মোট ব্যয় ছিল ৬ কোটি ৩০ লাখ ১৯ হাজার ৮৫২ টাকা। ২০২০ সালের ক্যালেন্ডার বছরে মোট ব্যয় হয়েছে ৯ কোটি ৯৪ লাখ ৪৯ হাজার ৯৩১ টাকা। ২০২০ ক্যালেন্ডার বছরের চেয়ে ৩ কোটি ৬৪ লাখ ৩০ হাজার ৭৯ টাকা কম।
ব্যয় হ্রাসের কারণ: ২০২০ সালের ক্যালেন্ডার বছরে, বিশ্বব্যাপী চলমান রোগের প্রদুর্ভাবের কারনে চলাকালীন দলীয় নেতাদের আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছিল। কিন্তু ২০২১ ক্যালেন্ডার বছরে নগদ বিতরণের পরিমাণ কম ছিল। প্রধান ব্যয়ের ক্ষেত্র: কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন-ভাতা, প্রতিষ্ঠান ব্যবস্থাপনা ব্যয়, অফিস ভাড়া, প্রচার ও প্রকাশনা ব্যয়।
উদ্বৃত্ত: ২০২১ সালের ক্যালেন্ডার বছর শেষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উদ্বৃত্ত ছিল ১৪ কোটি ৯৩ লাখ ২৬ হাজার ২৫৪ টাকা। ২০২০ ক্যালেন্ডার বছরে ১৪ কোটি ৫৪ লাখ ৩২ হাজার ৬৫৩ টাকা বেশি।
স্থিতি: ২০২১ সালের ক্যালেন্ডারে বছর শেষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের স্থিতি ছিল ৭০ কোটি ৪৩ লাখ ৭০ হাজার ১৬৬ টাকা। ২০২০ সালের ক্যালেন্ডার বছর শেষে বাকি ছিল ৫০ কোটি ৭৬ লাখ ৩৭ হাজার ১৯৪ টাকা। ২০২০ ক্যালেন্ডার বছরের চেয়ে ১৪ কোটি ৯৩ লাখ ২৬ হাজার ২৫৫ টাকা বেশি।
উল্লেখ্য, রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচন কমিশনের যে হিসাব আয়-ব্যয়ের প্রতিবেদন জমা দিয়ে থাকেন, সেটা ছাড়াও আরো এক ধরনের খরচ রয়েছে সেটি হল গোপন আয়। অনেক সময় প্রার্থীদেরকে মনোনয়ন দিতে বিপুল পরিমাণ অর্থ নিয়ে থাকে। অভিযোগ রয়েছে, দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার জন্য বড় অঙ্কের টাকা দাবি করে থাকে বিভিন্ন নেতারা।