চলমান ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রায় আসছে নানা অনিয়মের অভিযোগ। এরই জের ধরে এবার প্রকাশ্যে নৌকায় সিল মারতে না দেয়ায় প্রিসাইডিং কর্মকর্তাকে হুমকী দেয়ার অভিযোগ উঠেছে এক আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে। আর এ ঘটনায় গোটা একলাজুড়ে চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে।
এব্যাপারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রকাশ্যে নৌকায় সিল মারতে না দেওয়ায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে একটি কেন্দ্রে প্রিসাইডিং কর্মকর্তাকে হুমকি দিয়ে নৌকার প্রার্থী মো. মুজিবুর রহমান সওদাগর বলেন, ‘আমি প্রিসাইডিংয়ের বাপ।’ এ সময় উত্তেজনার সৃষ্টি হলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
জানা গেছে, সকাল ৮টার পর লাউর ফতেহপুর ইউনিয়নের হাজীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কেন্দ্রে আসেন আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী মুজিবুর সওদাগর। কেন্দ্রে পৌঁছেই তিনি চেয়ারম্যান পদে নৌকা প্রতীকে প্রকাশ্যে ভোট নেওয়ার জন্য প্রিসাইডিং কর্মকর্তা আবুল খায়েরের ওপর চাপ সৃষ্টি করেন। এ সময় উত্তেজনা দেখা দিলে পুলিশ এসে আওয়ামী লীগ প্রার্থী কেন্দ্র থেকে বের করে দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
প্রিসাইডিং কর্মকর্তা আবুল খায়ের অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগের প্রার্থী এসে প্রকাশ্যে ভোট নেওয়ার জন্য আমাকে চাপ প্রয়োগ করেন। আমি রাজি না হয়ে গোপন কক্ষে ভোট দেওয়ার কথা বললে তিনি আমাকে হুমকি দিয়ে বলেন, ‘আমি প্রিসাইডিংয়ের বাপ।’
এদিকে দুপুরের পর বেলা ৩টার দিকে নৌকার প্রার্থী মজিবুর সওদাগর তার লোকজন নিয়ে ওই কেন্দ্রে আবারও উত্তেজনা সৃষ্টির চেষ্টা করেন। এ সময় প্রিসাইডিং কর্মকর্তার কাছ থেকে ব্যালট ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে তারা। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শক্ত অবস্থানের কারণে তারা কেন্দ্র ত্যাগ করেন বলে প্রিসাইডিং কর্মকর্তা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।
লাউর ফতেহপুর ইউনিয়ন নির্বাচনে পুলিশের স্টাইকিং ফোর্সের ইনচার্জ ও পুলিশ পরিদর্শক কাজী মাসুদ ইবনে আনোয়ার বলেন, প্রিসাইডিং অফিসারের ফোন পেয়ে কেন্দ্রে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। কাউকে ভোটকেন্দ্রে বিশৃঙ্খলা করতে দেওয়া হয়নি।
তবে এ অভিযোগের আলোকে নৌকার প্রার্থী মো. মুজিবুর রহমান সওদাগরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তার বিরুদ্ধে ওঠা এ অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি সংবাদ মাধ্যমকে দাবি করেন, প্রকাশ্যে ভোট দেওয়ার জন্য কাউকে হুমকি দেননি তিনি। তবে প্রিসাইডিং কর্মকর্তার দাবি, প্রকাশ্যে সিল মারতে না দেয়ায় তিনি এমনটাই হুমকি দিয়েছেন তাকে।