নির্বাচনকে ঘিরে মানুষের রয়েছে নানান জল্পনা কল্পনার, সেই সাথে রয়েছে উত্তেজনাও। চলমান ইউপি নির্বাচন নিয়ে সারা বাংলাদেশেই চলছে উত্তেজনা। বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে বিভিন্ন ধরনের খবর আসছে। কোথাও করছে সহিংসতা মতো ঘটনা কোথাওবা আবার ভোট কারচুপির মতো ঘটনা। সম্প্রতি নরসিংদীর একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী অ্যাডভোকেট জুটন চন্দ্র দত্ত কেন্দ্রের ভোটের অনিয়মের অভিযোগ করেছেন সাংবাদিকদের কাছে। কষ্টের অভিযোগগুলো করতে করতে এক পর্যায়ে তিনি কেঁদেই ফেললেন।
নরসিংদীর পলাশ উপজেলার জিনারদী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগে তিন স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন।
রোববার বেলা সোয়া ১১টা থেকে দুপুর পৌনে ১টার মধ্যে পৃথকভাবে তিন প্রার্থী এই ঘোষণা দেন।
তিন স্বতন্ত্র প্রার্থী হলেন- ঘোড়া প্রতীকের মাসুদ খান, টেলিফোন প্রতীকের কাজী রফিকুল ইসলাম ও আনারস প্রতীকের অ্যাডভোকেট জুটন চন্দ্র দত্ত। জিনারদী ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে মোট ৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
তিন স্বতন্ত্র প্রার্থী অভিযোগ করে সাংবাদিকদের জানান, সকাল থেকে বেশির ভাগ ভোটকেন্দ্রে তাদের এজেন্ট ঢুকতে দেওয়া হয়নি। যেসব কেন্দ্রে এজেন্ট ছিল তাদেরকেও মারধর করে ভয়ভীতি দেখিয়ে বের করে দেওয়া হয়। প্রায় সব কেন্দ্রে প্রকাশ্যে ব্যালটে সিল মারাসহ ভোটারদের প্রকাশ্যে নৌকা প্রতীকে সিল মারতে বাধ্য করা হয়। এতে ভোটাররা তাদের পছন্দমতো প্রার্থীকে ভোট দিতে পারেননি। এসব অনিয়মের অভিযোগ ফোনে প্রশাসনকে বারবার জানানো হলেও কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
ইউনিয়নের কুড়াইতলী বাজারে সাংবাদিকদের ডেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী অ্যাডভোকেট জুটন চন্দ্র দত্ত বলেন, নৌকা প্রতীকের প্রার্থী কামরুল ইসলাম গাজীর সমর্থকরা ভোটের প্রচারের শুরু থেকেই বিভিন্নভাবে আমার কর্মীদের ভয়ভীতি দেখিয়ে বাধার সৃষ্টি করে আসছিল। এসব অভিযোগসহ ভোটের দিন বহিরাগত সন্ত্রাসীদের এনে ভোট মারা হবে এমন আশঙ্কা করে একাধিকবার রিটার্নিং অফিসারের নিকট লিখিত অভিযোগ দেওয়া হলেও কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। এ সময় সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করার পরপরই তিনি কান্নায় জড়িয়ে পড়েন।
একইভাবে নানান অনিয়মের অভিযোগ করেন অন্য দুই স্বতন্ত্র প্রার্থী মাসুদ খান ও কাজী রফিকুল ইসলাম।
এসব অভিযোগ সম্পর্কে জানতে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও ফোন রিসিভ করেননি নৌকা প্রতীকের প্রার্থী কামরুল ইসলাম গাজী।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং অফিসার মোসাম্মাৎ জোবাইদা খাতুন বলেন, জিনারদী ইউনিয়নের তিন স্বতন্ত্র প্রার্থী ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন বলে শুনেছি। তবে যেসব অনিয়মের অভিযোগে তারা নির্বাচন বর্জন করেছেন সেসব বিষয়ে আমরা কোনো কেন্দ্র থেকে অভিযোগ পাইনি। অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
অভিযোগকারীদের মুখ থেকে শোনা যায় এক রকম কথা ভোটকেন্দ্রের ভিতরে গেলে তাদের মুখ থেকে শোনা যায় অন্য রকম কথা। কোনটা সত্য কোনটা মিথ্যা এটা সাংবাদিকদের বোঝা খুবই কষ্টের। দরকার সুষ্ঠু তদন্ত তাহলেই হয়তো সঠিক খবর পাওয়া যাবে। তবে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ তারা প্রশাসনের কাছে রিপোর্ট করেছিল কিন্তু প্রশাসন থেকে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এখন প্রশ্ন চলে আসে, তাহলে কি প্রশাসনই এই অনিয়ম এর সাথে জড়িত!