মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় নিজ বাসভবনে আয়োজিত সভায় তৃণমূল বিএনপির মনোনয়ন ফরম ছিঁড়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) এম এম শাহীন।
বুধবার (২৯ নভেম্বর) বিকেলে কুলাউড়া উপজেলা সদরের মাগুরা গোশাগুল এলাকায় নিজ বাসভবনে সাবেক সংসদ সদস্য এম এম শাহীন এক আলোচনা সভা আহ্বান করেন। এর আগে মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) তিনি তৃণমূল বিএনপির মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন বলে জানা গেছে। ফলে তার ডাকা আলোচনা সভায় হাতে গোনা কয়েকজন নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনা সভায় তৃণমূল বিএনপির মনোনয়ন ফরম ছিঁড়ে ফেলেন এম এম শাহীন। এ সময় তিনি নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, যে দলের মা নেই, বাপ নেই, ঠিকানা নেই… সেই দলে আমি যেতে চাইনি। কিন্তু কুলাউড়ার মানুষের স্বার্থে সেই দলের হয়ে নির্বাচন করতে চেয়েছিলাম। যেহেতু আপনারা সেটি চাননি, তাই আমি তৃণমূল বিএনপির মনোনয়ন ফরম ছিঁড়ে ফেললাম। আমি আর নির্বাচন করব না।
এ সময় নেতাকর্মীরা এমএম শাহীনকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার অনুরোধ জানান। নেতাকর্মীদের অনুরোধ তিনি বিবেচনা করবেন বলে আশ্বাস দেন।
জানা যায়, মঙ্গলবার বিকেলে এম এম শাহীনের পক্ষে তৃণমূল বিএনপির মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন তার নেতাকর্মীরা। পরে বুধবার তিনি তৃণমূল বিএনপির দলীয় মনোনয়নও পান। তবে মনোনয়ন ফরম ছিঁড়ে যাওয়ায় নির্বাচনে তার অংশগ্রহণ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক ঠিকানা পত্রিকার সম্পাদক এম এম শাহীন এক সময় জাসদ ছাত্রলীগের কর্মী ছিলেন। ১৯৯৩ সালে নিউ ইয়র্ক ছেড়ে দেশে ফিরে বিএনপিতে যোগ দেন তিনি। ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি বিএনপির ধানের শীষ মার্কা নিয়ে এমপি নির্বাচিত হন।
২০০১ সালে চার দলীয় জোট গঠিত হলে মৌলভীবাজার-২ (কুলাউড়া) আসন জামায়াতকে ছেড়ে দেওয়া হয়। তখন উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এম এম শাহীন স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে অংশ নেন। সেবার ডাকসুর সাবেক ভিপি সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদকে ৬ হাজার ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করে তিনি এমপি নির্বাচিত হন। এর মাধ্যমে দেশব্যাপী আলোচনায় আসেন এম এম শাহীন।
২০০৭ সালের নির্বাচনে বিএনপি তাকে মনোনয়ন দিলে তিনি একক প্রার্থী হিসেবে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। কিন্তু সেই নির্বাচন স্থগিত করা হয় এবং ১১ জানুয়ারী, ২০০৭-এ দেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়। দেশের শাসন ব্যবস্থা ফখরুদ্দিন-মঈনুদ্দিনের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়। এরপর মাইনাস টু ফর্মুলা নিয়ে হাজির হয় সরকার।
পরবর্তীতে প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দল (পিডিপি) গঠন করেন সাবেক বিএনপি নেতা ফেরদৌস আহমেদ কোরেশী। ১৪ দলের বৈঠকের পর আবারও আলোচনায় আসেন এম এম শাহীন। ফলে তিনি বিএনপি থেকে বাদ পড়েন। পরে তিনি ২০০৮ সালে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন।পরবর্তীতে ২০১৮ সালে নৌকা প্রতীক নিয়ে বিকল্প প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে পরাজিত হন।