Thursday , November 14 2024
Breaking News
Home / Countrywide / প্রকাশ্যে টাকা দিয়ে ভোট কিনলেন মন্ত্রী

প্রকাশ্যে টাকা দিয়ে ভোট কিনলেন মন্ত্রী

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনে ভোট কিনছেন বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী। ভোটার আইডি কার্ড দেখে প্রমাণ পাওয়া গেছে যে প্রতিটি ভোটারকে দলীয় সমর্থকরা এক হাজার টাকা করে দিচ্ছেন।

স্থানীয়রা বলছেন, নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হলে কেটলি প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ শাহজাহান ভূঁইয়া নির্বাচিত হবেন। এমন ভয়ে নির্বাচনের দুই দিন আগে থেকে টাকা দিয়ে ভোট কেনা শুরু করেন গোলাম দস্তগীর গাজী। তারা বলেন, গত ১৫ বছরে সংসদ সদস্য থাকাকালে গোলাম দস্তগীর গাজী ও তার ছেলেরা কারখানা ও আবাসন প্রকল্পের নামে হাজার হাজার কৃষি জমি আত্মসাৎ করেছেন। এ কারণে দীর্ঘদিন এমপি থাকার পরও তার জনপ্রিয়তা তলানিতে নেমেছে। সুষ্ঠু ভোট হলে কাউকে ভয় দেখিয়ে টাকা দিয়ে ভোট কিনে হেরে যাবেন নিশ্চিত। বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রাপ্ত ভিডিওতে দেখা যায়, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের তারাবো পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ড সভাপতির নির্মাণাধীন বাড়ির নিচতলায় ভোটার আইডি কার্ড দেখে ভোটারদের টাকা দেওয়া হচ্ছে। -১টি নির্বাচনী এলাকা। ভিডিওতে দেখা যায়, টাকা আদায় করতে ভিড় জমিয়েছেন অনেকে। ৯ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মুলজার, আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা রতন মিয়া ও খোরশেদসহ কয়েকজন মিলে টাকা বিতরণ করছেন। ভিডিওটি দেখে স্থানীয়দের কাছ থেকে তাদের নাম নিশ্চিত করা হয়েছে। তাদের মধ্যে, রাষ্ট্রপতি মুলজারের রাজনৈতিক পরিচয় নিশ্চিত করা হয়েছে, তবে অন্য কোন পদে অধিষ্ঠিত তা জানা যায়নি। টাকা বিতরণের বেশ কিছু ভিডিও পেয়েছে বাংলাদেশ প্রতিদিন। আরেকটি ভিডিওতে দেখা যায়, স্থানীয় আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন নেতা জাতীয় পরিচয়পত্র দেখে সন্ধ্যায় একটি কক্ষে টাকা বিতরণ করছেন। ভিডিওতে শোনা যায়, এক নারী বলছেন আমি কখন নিয়েছি? এ সময় ওই ঘরের মেঝেতে বসে থাকা আরেক ব্যক্তি বলেন, তোমার কথা বলিনি, তোমার মাকে নিয়ে গেছে। বাবা নিলেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি মুলজারের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার সময় স্থানীয় এক নারী ভোটারের সঙ্গে কথা হয়। তার নাম জানতে চাইলে সে নিজেকে মুমিনের মা বলে পরিচয় দেয়। টাকা কিসের জন্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, এভাবে দিয়েছেন। তখন পরিচয় গোপন করে প্রতিবেদক বলেন, আমাকে দেবেন না? তিনি বলেন, ভোটার হলে দেব। নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক দোকানদার বলেন, মুলজার সাহেব মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ। তারাবোর ৯ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. তিনিও এ এলাকায় নির্বাচনের দায়িত্বে রয়েছেন। তাই কাছের মানুষকে আগে টাকা দেওয়া। ভোটের জন্য টাকা দেওয়া হচ্ছে কি না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, যারা টাকা পাচ্ছেন তারা এ এলাকার ভোটার। আরো কিছু বললে সমস্যা আছে। রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা আহসান মাহমুদ রাসেল বলেন, এমন অভিযোগ শুনেছি। ভিডিও ফুটেজ দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

স্থানীয়রা বলছেন, রূপগঞ্জের আওয়ামী লীগ দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। গত ১৫ বছরে সুবিধাভোগীরা বর্তমান সংসদ সদস্য গোলাম দস্তগীর গাজীর পক্ষে থাকলেও সুবিধাবঞ্চিতদের প্রায় ৭৫% আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। শাহজাহান ভূঁইয়ার পক্ষে কাজ করছেন। তারা বলল, শাহজাহান শেষ হাসি হাসবেন। কারণ তার নামে কোনো কালি নেই। আওয়ামী লীগকে ভালোবাসতেন, রাজনীতি করতেন। কেউ ক্ষতিগ্রস্থ হয়নি। জমি দখল করেনি। মাদক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক নেই।

About Zahid Hasan

Check Also

উপদেষ্টা পরিষদেই বৈষম্য

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে আঞ্চলিক বৈষম্যের অভিযোগ উঠেছে। ২৪ সদস্যের এই পরিষদে ১৩ জনই চট্টগ্রাম …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *