বিশ্বের সকল দেশের পাসপোর্টের মর্যাদা এক নয়। উন্নত দেশ গুলোর পাসপোর্টের মর্যাদা সব থেকে বেশি। একটি দেশের পাসপোর্ট সে দেশের একজন নাগরিকের অন্যতম পরিচয়পত্র। দেশের বাইরে গেলে সবার আগে পাসপোর্টের প্রয়োজন। এই পাসপোর্ট ছাড়া কোনো দেশ সে দেশে প্রবেশের সুযোগ দেয় না। এবার বিশ্বের সব থেকে শক্তিশালী পাসপোর্টের তালিকা প্রকাশ্যে এলো। এই তালিকায় বিশ্বের অনেক উন্নত দেশ রয়েছে। এছাড়া উন্নত দেশের মানুষের আচার আচারণের ভিত্তিতেও পাসপোর্টের মর্যাদা দেওয়া হয়। এদিকে, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সব দেশের পাসপোর্টের মর্যাদা এক নয়। বিভিন্ন দেশের পাসপোর্টের মর্যাদা নির্ধারণের জন্য একটি আন্তর্জাতিক স্বীকৃত সূচক রয়েছে। আর এর মাধ্যমে জানা যায় বিশ্বের কোন দেশের পাসপোর্ট কতটা শক্তিশালী।
কোনো পাসপোর্ট ব্যবহার করে কতটি দেশে ভিসামুক্ত ভ্রমণ করা যায়— এর উপর ভিত্তি করে ‘হেনলি পাসপোর্ট ইনডেক্স’ তৈরি করা হয়। ২০০৬ সাল থেকে পাসপোর্টের মর্যাদার সূচক প্রকাশ করে আসছে হেনলি পাসপোর্ট ইনডেক্স। এ সূচকে দেখা যায়, সব দেশের পাসপোর্ট সমান শক্তিশালী নয়। যেমন যুক্তরাষ্ট্রের পাসপোর্ট আর পাকিস্তানের পাসপোর্টের মধ্যে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে মর্যাদার দিক থেকে রয়েছে বিস্তর ফারাক। যুক্তরাষ্ট্রের পাসপোর্টধারী যে কেউ বিশ্বের যতো দেশে বিনা ভিসায় ভ্রমণ করতে পারবেন, পাকিস্তানের পাসপোর্টধারীরা ততো দেশে পারবেন না।
২০২১ সালের হেনলি পাসপোর্ট ইনডেক্স প্রকাশিত হয়েছে। আন্তর্জাতিক এয়ার ট্রান্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশনের তথ্যের ওপর ভিত্তি করে এ ইনডেক্স তৈরি করে সংস্থাটি।
অন্যান্যবারের মতো এ বছরও জাপানের পাসপোর্ট এ তালিকার শীর্ষে। জাপানের পাসপোর্টধারী ব্যক্তি প্রায় গোটা বিশ্বেই ভিসা ছাড়া ভ্রমণ করতে পারবেন।
নিচে ২০২১ সালে বিশ্বের সবচেয়ে দামি পাসপোর্টগুলোর তালিকা দেওয়া হলো। ব্রাকেটে ওই পাসপোর্ট ব্যবহার করে কতটি দেশে ভিসা ছাড়া ভ্রমণ করা যাবে, সেই সংখ্যা উল্লেখ করা হয়েছে।
১. জাপান (১৯৩টি দেশ)
২. সিঙ্গাপুর (১৯২টি দেশ)
৩. জার্মানি, দক্ষিণ কোরিয়া ( ১৯১টি দেশ)
৪. ফিনল্যান্ড, ইতালি, লুক্সেমবার্গ, স্পেন (১৯০টি দেশ)
৫. অস্ট্রিয়া, ডেনমার্ক (১৮৯টি দেশ)
৬. ফ্রান্স, আয়ারল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস, পর্তুগাল, সুইডেন (১৮৮টি দেশ)
৭. বেলজিয়াম, নিউজিল্যান্ড, সুইজারল্যান্ড, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র (১৮৭টি দেশ)
৮. চেক প্রজাতন্ত্র, গ্রিস, মাল্টা, নরওয়ে (১৮৬টি দেশ)
৯. অস্ট্রেলিয়া, কানাডা (১৮৫টি দেশ)
১০. হাঙ্গেরি (১৮৪টি দেশ)
বিশ্বের ১৮০টিরও বেশি দেশে বিনা ভিসায় ভ্রমণে সক্ষম পাসপোর্টের তালিকা যেমন লম্বা, তেমনি বিশ্বের মাত্র ৪০টি দেশেরও কম দেশে ভ্রমণ সম্ভব এমন পাসপোর্টের তালিকাও ছোট নয়। নিচে সূচকের শেষ দিকে থাকা পাসপোর্টগুলোর তালিকা দেওয়া হলো।
১০৮. উত্তর কোরিয়া (৩৯টি দেশ)
১০৯. নেপাল (৩৮টি দেশ)
১১০. ফিলিস্তিন ভূখণ্ড (৩৭টি দেশ)
১১১. সোমালিয়া (৩৪টি দেশ)
১১২. ইয়েমেন (৩৩টি দেশ)
১১৩. পাকিস্তান (৩২টি দেশ)
১১৪. সিরিয়া (২৯টি দেশ)
১১৫. ইরাক, ইরান (২৮টি দেশ)
১১৬. আফগানিস্তান (২৬টি দেশ)
এ সূচকে বাংলাদেশি পাসপোর্টের অবস্থান ১০৬তম। বাংলাদেশের পাসপোর্ট ব্যবহার করে ৪১টি দেশে ভিসামুক্ত ভ্রমণ করা সম্ভব বলে জানানো হয়েছে ওই সূচকে। ভারতের অবস্থান এ তালিকায় ৯০তম। সেদেশের পাসপোর্ট ব্যবহার করে ৫৮টি দেশে ভিসামুক্ত ভ্রমণ করা যাবে। তালিকায় চীনের অবস্থান ৭২তম। চীনা পাসপোর্ট ব্যবহার করে ৭৮টি দেশে ভিসামুক্ত ভ্রমণ করা যাবে। সূচকে রাশিয়ার পাসপোর্টের অবস্থান ৫১তম। ওই দেশের পাসপোর্ট ব্যবহার করে ১১৯টি দেশে বিনা ভিসায় প্রবেশ করা যাবে।
এবারের সূচকে মর্যাদার দিক থেকে আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিলের পাসপোর্ট একই অবস্থানে—১৯তম। এ দুই দেশের পাসপোর্টধারীরা বিশ্বের ১৭০টি দেশে বিনা ভিসায় প্রবেশ করতে পারবেন।
সৌদি আরবের পাসপোর্টের অবস্থান ৭১তম, এ পাসপোর্টধারীরা ৭৯টি দেশে ভিসামুক্ত ভ্রমণ করতে পারবেন। এছাড়া ইসরাইলের পাসপোর্টের অবস্থান ২৩তম। ওই পাসপোর্টধারীরা বিশ্বের ১৫৯টি দেশে ভিসামুক্ত ভ্রমণ করতে পারবেন। সূত্র:সারাবাংলা
উল্লেখ্য, প্রতি বছর পাসপোর্টের মর্যাদার তালিকা করা হয়। গত কয়েক বছর ধরে এই পাসপোর্টের মর্যাদার তালিকায় সবার আগে জাপানের নাম উঠে এসেছে। দেশটির সাধারণ নাগরিকরা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সব থেকে বেশি সুযোগ সুবিধা পেয়ে থাকেন। এরপর বিশ্বের বেশ কয়েকটি উন্নত দেশের পাসপোর্টের মর্যাদা উপরের দিকে রয়েছে। তবে বাংলাদেশের পাসপোর্টের মর্যাদা আগের অবস্থানে রয়েছে। বাংলাদেশের পাসপোর্ট ব্যবহার করে ৪১টি দেশে ভিসামুক্ত ভ্রমণ করা যাবে বলে এই সূচকে উঠে এসেছে।