ওসি প্রদীপ ও তার স্ত্রীর নামে আজ দুর্নীতির রায় ঘোষনা করেছে আদালত। আর এই রায়ে ২১ বছরের জেল দেয়া হয়েছে ওসি প্রদীপের স্ত্রী চুমকিকে। আর সেই থেকেই চুমকির নামে বের হচ্ছে নানা ধরনের সব সংবাদ।
পেশায় গৃহিণী হলেও প্রদীপের স্ত্রী চুমকি দুদকে জমা দেওয়া সম্পদের বিবরণীতে নিজেকে ‘মাছ চাষী’ বলে দাবি করেছেন। সেখানে ১৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা দিয়ে মাছের খামার শুরু করেন বলে জানান তিনি। যা থেকে বছরে কোটি কোটি টাকা আয় করে জমি, গাড়ি ও বাড়ি কিনেছেন।
তবে দুদকের দেওয়া অভিযোগপত্রে বলা হয়, চট্টগ্রাম নগরীর পাথরঘাটায় একটি ছয়তলা বাড়ি, পাঁচলাইশের একটি বাড়ি, ৪৫ ভরি স্বর্ণ, একটি প্রাইভেটকার, একটি মাইক্রোবাস, ব্যাংক হিসাব ও কক্সবাজারে একটি ফ্ল্যাট। চুমকির নামে বাজার। তার ৪ কোটি ৮০ লাখ ৬৪ হাজার ৬৫১ টাকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের বিপরীতে বৈধ ও গ্রহণযোগ্য আয় ২ কোটি ৪৪ লাখ ৬৬ হাজার ২৩৪ টাকা। এ মামলায় দুদক ২ কোটি ৩৫ লাখ ৯৮ হাজার ৪১৭ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের প্রমাণ পায়। এছাড়া চুমকির দাবিকৃত মাছ ধরার ব্যবসার কোনো প্রমাণ নেই।
পাথরঘাটায় ছয় তলা বাড়ি সম্পর্কে চুমকি ওই সময় দুদককে বলেছিলেন, ২০১৩ সালে বাড়িটি তার বাবা তাকে উপহার দিয়েছিলেন। তবে চুমকির অন্য ভাই-বোনদের তার বাবা কোনো সম্পত্তি উইল করেননি। তদন্তে জানা যায়, ২০০৬ সালে শ্বশুরের নামে বাড়ির জমি কিনেছিলেন প্রদীপ। এরপর ছয়তলা বহুতল ভবন নির্মাণ করেন।
প্রদীপ ও চুমকির বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদকের মামলার রায় ঘোষণা করা হয়েছে আজ। রায়ে প্রদীপকে ২০ বছর এবং চুমকিকে ২১ বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত। একইসঙ্গে তাদের চার কোটি টাকা জরিমানা ও সব সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
২০২০ সালের ২৩ আগস্ট মামলাটি দায়ের করেন দুদক কর্মকর্তা রিয়াজ উদ্দিন। পরে গত বছরের ২৬ জুলাই আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন তিনি। তাদের বিরুদ্ধে ৩ কোটি ৯৫ লাখ ৫ হাজার ৬৩৫ টাকার জ্ঞাত আয়ের বাইরে সম্পদ অর্জন, সম্পদের তথ্য গোপন ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগ রয়েছে।
একই বছরের ১ সেপ্টেম্বর চার্জশিটের ওপর শুনানি হয়। গত ২০ সেপ্টেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রিয়াজ উদ্দিনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত মামলার জবানবন্দিতে উল্লেখিত সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দেন। এই মামলায় গত ১৫ ডিসেম্বর তাদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা হয়।
প্রসঙ্গত, ইতিমধ্যে মেজর সিনহার হত্যার জন্য ওসি প্রদীপকে দেয়া হয়েছে মৃত্যুদন্ড। এরপর তার নামে শুরু হয় দুর্নীতির মামলার কার্যক্রম। আর সেই ধারাবাহিকতায় এবার তার এবং তার স্ত্রীর নামে দেয়া হয়েছে নতুন সাজা।