হঠাৎই দেশে বেশ কিছু নিত্যেপ্রয়োজনীয় পন্যের দাম মাত্রাতিরিক্ত হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এরই মধ্যে অন্যতম একটি পন্য পেঁয়াজ। গত কয়েক বছর ধরে এই পেঁয়াজ কান্ডে বেশ বিপাকে পড়েছে বাংলাদেশ সরকার। এমনকি নানা ধরনের প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েছে। বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশী এবার এই পেঁয়াজ প্রসঙ্গে বেশ কিছু কথা তুলে ধরলেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশী বলেছেন, পেঁয়াজের জ্বালায়ই আমি অস্থির হয়ে পড়েছি। পরিসংখ্যানের একটা ঝামেলা রয়েছে। আমাদের প্রয়োজন ২৪-২৫ লাখ টন পিয়াজ। উৎপাদনও হয় এমনই ২৫-২৬ লাখ টন। তাহলে আমদানি কেন? এমন প্রশ্ন আসে। সেক্ষেত্রে বক্তব্য হচ্ছে প্রায় ২০ শতাংশ পিয়াজ আমাদের নষ্ট হয়। রবিবার (২৪ অক্টোবর) রাজধানীর একটি হোটেলে বণিক বার্তা ও বাংলাদেশ কৃষি সাংবাদিক ফোরাম (বিএজেএফ) আয়োজিত ‘বাংলাদেশের ৫০ বছর কৃষির রূপান্তর ও অর্জন’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে এই অভিমত ব্যক্ত করেন তিনি।
তিনি বলেন, সেপ্টেম্বর-অক্টোবর থেকেই আমাদের পিয়াজ কমতে থাকে। তখন ভারত থেকে আনতে হয়। এ ক্ষেত্রে ভারতের উপর আমরা ৯০ শতাংশ নির্ভরশীল। ভারত বন্ধ করে দিলে অথবা দাম বাড়ালে এর প্রভাব বাজারে পড়ে। কৃষিবিদদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনারা পিয়াজের এমন বীজ আনেন যাতে সেপ্টেম্বর অক্টোবরে আমরা পিয়াজ পাই। উৎপাদন বাড়ানো গেলে, নষ্ট কমলে আগামী ৩-৪ বছরের মধ্যে পিয়াজের বাজারে কোনো সমস্যা হবে না। পণ্যের মজুত ও চাহিদা সম্পর্কে কৃষি মন্ত্রণালয় সঠিক তথ্য দেয় না জানিয়ে তিনি বলেন, গত বছর কৃষি মন্ত্রণালয় হিসাব দিলো ১ কোটি ৫ লাখ টনের মতো আলু উৎপাদন হবে। আর আমরা ৭০-৭৫ লাখ টন আলু খাই। তার মানে আলু সারপ্লাস থাকবে। কিন্তু গত বছরের বাজারের চিত্র কিন্তু সেটা বলে না। গত বছর আলুর দাম ৪০ টাকায় ঠেকলো। কোল্ডস্টোরেজ থেকে বেরোতে বেরোতে আলু ৩৫-৩৬ টাকা হয়ে গেলো, আলু এক্সপোর্ট হলো না। তার মানে হিসাবে একটা গণ্ডগোল রয়েছে। হয় আলুর উৎপাদন কম হয়েছে, নয়তো আলুর চাহিদা আরও বেশি।
গত কয়েক বছর ধরে পেঁয়াজের সংকট দেখা দেওয়ায় বাংলাদেশ সরকার এই সংকট মোকাবিলায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি করেছে। মূলত প্রতিবেশী দেশ ভারতের নেওয়া পদক্ষেপে এমন সংকটময় পরিস্তিতির সম্মুখীন হয়েছে বাংলাদেশ। পূর্ব কোন নির্দেশনা ছাড়াই ভারত পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করে দেওয়ায় বাংলাদেশের পেঁয়াজের বাজারে সংকট দেখা দেয়।