গল্পের গুণগত মান দিয়ে একটি সিনেমা দর্শকের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়ে ওঠে। তাই ভালো চলচ্চিত্র নির্মাতারা সব সময় বলেন, সিনেমার ভিত্তি হলো তার গল্প। মৌলিক গল্পের সিনেমা সবসময় দর্শকদের প্রেক্ষাগৃহে আনতে ভূমিকা পালন করে।
এবারের ঈদে বাংলাদেশের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে শাকিব খান অভিনীত ‘তুফান’ নামের একটি চলচ্চিত্র। মুক্তির পর থেকেই নানা অভিযোগের মুখে পড়ে সিনেমাটি।
মূল অভিযোগ ছিল ‘তুফান’ তৈরি করা হয়েছে বহু ভারতীয় সিনেমাকে মিশিয়ে। মুক্তির পর থেকে সিনেপ্লেক্সে কিছু দর্শক হলেও সিঙ্গেল স্ক্রিনে ছিল দর্শকরা।
এদিকে গত ৫ জুলাই ভারতের পশ্চিমবঙ্গে মুক্তি পায় ‘তুফান’। অনেক চেষ্টার পরও কলকাতায় যে শাকিবের বাজার এখনো তৈরি হয়নি, তা আবারও পরিষ্কার হলো এই সিনেমার মাধ্যমে। কলকাতায় ফ্লপ হয়েছে ‘তুফান’।
অর্ধশতাধিক প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেলেও শাকিবের সিনেমা নিয়ে ভারতীয় দর্শকরা নেতিবাচক মন্তব্য করেছেন। সেখানে মোটেও চলছে না সিনেমাটি।
এ প্রসঙ্গে কলকাতার এক সাংবাদিক বলেন, ‘শাকিবের তুফান কলকাতাতে একবারেই চলছে না। আর চলবেই বা কেন! এই গল্পের সিনেমাতো আমাদের দর্শক আগেই দেখেছে। অনেক সিনেমার গল্প নিয়ে একটা জগাখিঁচুড়ি বানানো হয়েছে। কলকাতার স্মার্ট দর্শক অনেক এগিয়ে আছে। তারা অনেক আগেই এসব দেখে ফেলেছে। তাছাড়া শাকিবের বাজার নেই কলকাতায়। শাকিবের সিনেমা দর্শক দেখতে চায় না। এর আগেও শাকিবের অন্য সিনেমাগুলো কলকাতায় মুক্তি দিলেও সেগুলো সেভাবে চলেনি। এবারও বিভিন্ন প্রেক্ষাগৃহে গিয়ে আমরা খোঁজ নিয়ে দেখেছি সেখানে দর্শক একেবারেই নেই।’
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে তুফান সংশ্লিষ্টরা অনেক ফাঁকা আওয়াজ তুললেওতারা পুরোটাই ব্যর্থ। প্রথম দুইদিন সিনেমাহল ফাঁকা। আমাদের দর্শকরা এখন প্রভাসের ‘কল্কি’ নিয়েই ব্যস্ত। পরের সপ্তাহেও আসছে হিন্দি সিনেমা। সুতরাং আগামী সপ্তাহে যে তুফান একেবারেই বিলীন হয়ে যাবে, সেটা স্পষ্টই বোঝা যায়। তাছাড়া এই তুফানে শাকিবের বিপরীতে অভিনয় করেছেন আমাদের (কলকাতা) মিমি চক্রবর্তী, যার নিজের দেশেই তার কোনো বাজার নেই।’
এদিকে ঢাকা কর্তৃপক্ষ সোশ্যাল মিডিয়ায় মিথ্যা প্রচারণা চালাচ্ছে যে কলকাতা শহর তুফানের পোস্টারে ছেয়ে গেছে।
এ প্রসঙ্গে কলকাতার এই সাংবাদিক বলেন, ‘কোথাও তুফানের পোস্টার নেই। এক দুই জায়গায় কয়েকটি পোস্টার রয়েছে। এটা দিয়েতো গোটা কলকাতা বোঝায় না।’
কলকাতার অনেকেই জানান, তুফান মূলত সেখানকার প্রযোজনা সংস্থা এসভিএফ-এর সিনেমা। আইনি জটিলতা এড়াতে এবং ঢাকার বাজার দখল করতে এটি একটি বাংলাদেশি প্রযোজনা সংস্থার নামে বাংলাদেশে মুক্তি পায়।
এদিকে কলকাতায় ব্যর্থ হয়ে বিষণ্ণ মনে শনিবার বিকেলের ফ্লাইটে বাংলাদেশে ফিরেছেন শাকিব খান। সেখানে গিয়েছিলেন সিনেমার প্রচারণার জন্য। এবার কলকাতা কিছু করবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। কিন্তু তার ইচ্ছা পূরণ হয়নি।
সেখানকার সিনেমা সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ‘কলকাতায় এতো সুপারস্টার থাকতে শাকিব গিয়েই সেখানকার বাজার দখল করে নেবেন, এটা ভাবার কোনো কারণ নেই। অনেক সময় এমনও হয়েছে, মৌলিক গল্পের সিনেমা হলে দর্শক তা দেখেন, কিন্তু তুফান’র গল্প নিয়েও রয়েছে নকলের অভিযোগ। তাহলে ব্যর্থ হওয়াটাই স্বাভাবিক। সবচেয়ে বড় কথা, এ ধরনের গল্প এখানকার দর্শকরা আগেই দেখে ফেলেছেন।’
প্রসঙ্গত, একজন গ্যাং’স্টা’রের গল্প নিয়ে তৈরি হয়েছে এ সিনেমা।