মুনিয়া হ/”ত্যা মামলাটি এক সময় দেশের আলোচিত ঘটনা ছিল এবং একসময় সেটি নিয়ে গনমাধ্যমে বেশ লেখালেখি শুরু হয়। এই আলোচিত মামলাটির পিবিআই প্রতিবেদন দাখিল করা হয় গতবুধবার অর্থাৎ ১৯ অক্টোবর। প্রতিবেদনটি চূড়াণ্ত করার মাধ্যমে ঢাকা মুখ্য নগর আদালতে দাখিল করা হয়। মুনিয়ার মামলাটির দায়ের করেন বোন নুসরাত তানিয়া এবং মামলায় তার প্রয়ানকে হ”/ত্যা দাবি করার মাধ্যমে কয়েকজনকে অভিযুক্ত করা হয় এবং এই মামলাটি ভিত্তিহীন বলে প্রমাণিত হয়েছে। মোসারাত জাহান মুনিয়া প্রকৃতপক্ষে আত্মহনন করেছিলেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে পিবিআই মামলা বাতিলের জন্য সিএমএম আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেছে ।
ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ইয়াসমিন আরা এ প্রতিবেদন গ্রহণ করেন। পিবিআইয়ের পক্ষে এ আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক গোলাম মুক্তার আসরাফ উদ্দিন।
উল্লেখ্য, গত ২৮ এপ্রিল রাতে গুলশানের একটি ফ্ল্যাট থেকে মোশারত জাহান মুনিয়ার নিথর দেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় বসুন্ধরা গ্রুপের এমডি সায়েম সোবহান আনভীরের বিরুদ্ধে গুলশান থানায় আত্মননের প্ররোচনার অভিযোগে একটি হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়। এ ঘটনায় গুলশান থানার পুলিশ তদন্ত করে আত্মহননের প্ররোচনার কোনো প্রমাণ পায়নি বলে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে। এমনকি ময়নাতদন্তের রিপোর্টেও বোঝা যায় মুনিয়া আসলে আত্মহনন করেছেন।
গত বছরের জুলাইয়ে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। কিন্তু এই চূড়ান্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ আবেদন করেন মুনিয়ার বোন নুসরাত তানিয়া। সেই সংক্ষুব্ধ আবেদনটিও খারিজ হয়ে যায়। কিন্তু এরপর গত সেপ্টেম্বরে বসুন্ধরা গ্রুপের এমডি সায়েম সোবহান আনভীরসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় দফা হয়রানিমূলক মামলা দায়ের করা হয় এবং এ মামলায় বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যানসহ বেশ কয়েকজনকে জড়িত করার চেষ্টা করা হয়। যার সাথে এই ঘটনার কোন সম্পর্ক ছিল না। মুনিয়ার বোন নুসরাত জাহান বাদী হয়ে ঢাকার নারী সংশ্লিষ্ট ট্রাইব্যুনাল-৮ এ মামলাটি করেন। আদালত মামলাটি গ্রহণ করে পিবিআইয়ের কাছে তদন্ত হস্তান্তর করেন। পিবিআই দীর্ঘ তদন্ত শেষে আজ চূড়ান্ত প্রতিবেদনে বলেছে, হ/”ত্যার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। মুনিয়া আত্মহনন করেছেন। পিবিআই প্রতিবেদনে বলা হয়, হ/”ত্যার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে স্পষ্ট প্রমাণিত হয়েছে এটি আত্মহনন। পিবিআই এই আত্মহননের ঘটনায় কোনো প্ররোচনাও পায়নি।
পিবিআই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গুলশান থানার প্রথম মামলার তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে যে এটি আত্মহননের উদ্দেশ্য ছিল না এবং তদন্ত যথাযথ প্রক্রিয়ায় পরিচালিত হয়েছিল। পিবিআই প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রসিকিউশন হ/”ত্যার প্রমাণ দিতে পারেনি। বরং পিবিআই তাদের তদন্ত প্রতিবেদনে বলেছে, মামলাটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, হয়”রানিমূলক ও চাপের কৌশল। ফলে নুসরাতের ‘মুনিয়া হ/”ত্যা মামলা’ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন প্রমাণিত হওয়ায় এ মামলা চলবে না জানিয়ে প্রতিবেদন দেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, গত বছরের অর্থাৎ ২০২১ সালের ২৬ এপ্রিল রাতের দিকে গুলশানে অবস্থিত একটি অভিজাত ও ফ্ল্যাট থেকে মোসারাত জাহান মুনিয়ার নিথর দেহ ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়ার পর সেটা উদ্ধার করে পুলিশ। এই ঘটনার পর একজনকে অভিযুক্ত করে তার বোন নুসরাত জাহান গুলশান থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় আসামি করা হয়েছিল সায়েম সোবহান আনভীরকে যিনি হলেন বসুন্ধরা গ্রুপের ম্যানেজিং ডিরেক্টর। মামলাটিতে উল্লেখ করা হয় আনভীরের সাথে মিনিয়ার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল এবং আনভীর গুলশানে একটি অভিজাত ফ্ল্যাটে লক্ষাধিক টাকা ভাড়া দেয়ার মাধ্যমে রেখেছিল।