পুলিশ হেফাজতে বডিবিল্ডার ফারুক হোসেনের মৃ/ত্যুর ঘটনায় বনশাল থানার পরিদর্শক (নিরস্ত্র) মইনুল ইসলামসহ ৫ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি)ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. আসাদুজ্জামানের আদালতে ফারুকের স্ত্রী ইমা আক্তার হ্যাপী এ আ/বেদন করেন।
বুধবার (৩১ জানুয়ারি) মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সংশ্লিষ্ট আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর তাপস কুমার পাল। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ শেষে আদেশের অপেক্ষায় ছিলেন।
মামলায় যাদের আসামি করার আবেদন করা হয়েছে তারা হলেন- বনশাল থানার উপ-পরিদর্শক ইমদাদুল হক, আবু সালেহ, মাসুদ রানা ও বুলবুল আহমেদ।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ফারুক হোসেন ব্যক্তিগত কাজে গত ১২ জানুয়ারি রাত সাড়ে ৯টার দিকে লালবাগের খাজা দেওয়ান সিং লেনে বাসা থেকে বের হন। এক ঘণ্টা পর তিনি তার স্ত্রী হ্যাপিকে ফোন করে জানান, কায়েটুলী ফাঁড়ির কয়েকজন পুলিশ তাকে আটক করে নি/র্যাতন করছে। এ খবর পেয়ে হ্যাপি তার দুই বছরের শিশুকে কোলে নিয়ে সেখানে ছুটে আসেন। তিনি গিয়ে দেখেন, ফারুককে মারধর ও আটক করেছে পুলিশ।
সেখানে উপস্থিত এসআই ইমদাদুল হক, মাসুদ রানা, বুলবুল আহমেদসহ অন্যরা হ্যাপিকে আটক করে স্বামীর মুক্তির দাবি জানান। তখন ইমদাদুল হক তাকে বলেন, ফারুক বড় অপরাধী। তাদের গালিগালাজ করেন।এমনিতে তাকে ছাড়া যাবে না। তাকে মুক্তি দিতে এক লাখ টাকা লাগবে।
এরপর হ্যাপি জানান, তার স্বামী সিটি ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শোয়েবের ব্যক্তিগত দেহরক্ষী। আগে বডি বিল্ডার হয়ে মিস্টার বাংলাদেশ হয়েছেন। তিন ছোট ছেলেমেয়ে নিয়ে ফারুক তার আয়ে চলে।তাকে যেতে দিন, তারা তা এক লাখ থেকে কমিয়ে ৫০ হাজার করে, দাবি করেন পুলিশ সদস্যরা। তাকে অশালীন অফার দিয়ে। এতে রাজি না হওয়ায় আসামিরা ফারুককে বেধড়ক মার/ধর করে। আসামিদের দাবি, ফারুক একজন মা/দক ব্যবসায়ী। তারা কিছুই করতে পারে না। তাদের বড় স্যার জানে কি করতে হবে। কিছুক্ষণ পর ফারুককে মোটরসাইকেলে করে বনশাল থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
আবেদনে আরও বলা হয়, হ্যাপি তখন মইনুল হোসেনের হাত-পা ধরে আকুতি মিনতি করে স্বামীকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। কিন্তু এতে কাজ হয় না। তারা তাকে পরদিন সিএমএম আদালতে যোগাযোগ করতে বলে।
পরদিন হ্যাপি তার স্বামীর খোঁজখবর নিতে আদালতে যান। অনেক কষ্টে সেখানে স্বামীর সঙ্গে দেখা করেন তিনি। স্ত্রীকে মার/ধরের কথা জানান ফারুক। তার কিছু হলে আদালতে বিচার চাইতে বলেন তিনি। হ্যাপি জানতে পারেন, ফারুকের বিরুদ্ধে ১৫০ গ্রাম গাঁ/জার মামলা হয়েছে। ওই দিন বিকেল ৫-৬টার দিকে তিনি বাড়ি ফেরেন।
১৫ জানুয়ারি সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এক ব্যক্তি হ্যাপিকে জানান, ফারুক মা/রা গেছেন। হাসপাতালের মর্গে গিয়ে স্বামীর লা/শ দেখতে পান তিনি। ফারুক তার ঘাড়ে, বুকে ও পিঠে আঘাতের চিহ্ন দেখেছেন।