বর্তমানে সমাজে অপরাধের মাত্রা কিছুটা বেড়ে গিয়েছে তবে এই ব্যাপারে আইনশৃঙ্গলা বাহিনী রয়েছে কঠোর অবস্থানে। কিশোর গ্যাং নামে দেশের বিভিন্ন স্থানে একদল দুর্বৃত্তদের উপস্থিতির কারণে ঘটছে অনেক দুঃখজনক ঘটনা। এই কিশোর গ্যাংয়ের ছেলেরা খুব আক্রমণাত্নক ও খারাপ হয়ে থাকে। তারা যেকারো ওপর অতর্কিত হামলা চালাতে একটুও দ্বিধাবোধ করে না। সম্প্রতি ঘটে গেল এক ঘটনা। এক পুলিশ সদস্য তার স্ত্রীকে নিয়ে গউরতে বের হয় কিন্তু হঠাৎ করেই সম্মুখীন হয় এক দল দুর্বৃত্তদের। পুলিশ সদস্যের স্ত্রী উর্মি আক্তারকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করার কারণে সেই দুর্বৃত্তদের সাথে পুলিশ সদস্য প্রতিবাদ করলে এক পর্যায়ে তাকে আঘাত করা হয় ছুরি দিয়ে।
স্ত্রীকে নিয়ে হাঁটতে গিয়ে দুর্বৃত্তদের হাতে পুলিশ সদস্য এনামুল হক আহত হওয়ার ঘটনায় ৫ জনকে আটক করেছে পুলিশ। শুক্রবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৬টার দিকে ভোলা শহরের বকপাড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- মোঃ ইব্রাহিম (১৬), রাজীব (১৬), মোঃ রাকিব হোসেন (২১), তারেক পাঠান (১৯) ও তোহান আহমেদ (২৩)। তাদের মধ্যে ইব্রাহিম ও তারেক ছাত্র। তারা দুজনই ভোলা টাউন কমিটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র। ঘটনার পর শনিবার দুপুর পর্যন্ত নগরীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করে পুলিশ। বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. ফরহাদ সরদার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান। এ ঘটনায় পুলিশ সদস্য এনামুল হকের স্ত্রী উর্মি আক্তার বাদী হয়ে শনিবার সকালে ভোলা সদর মডেল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। যার কেস নম্বর ৪১।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঘটনার সময় ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী ইব্রাহিম পুলিশ সদস্যের স্ত্রী উর্মি আক্তারকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেন। তাকে টার্গেট করে উচ্চস্বরে অশ্লীল ভাষায় গালমন্দ করে। তখন ভুক্তভোগীর স্বামী পুলিশ কনস্টেবল এনামুল হক এ ধরনের আচরণের প্রতিবাদ করলে ইব্রাহিমের সঙ্গে তার বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে তা সংঘর্ষে রূপ নেয়। এরপর রাজীব ও তারেক ইব্রাহিমের সঙ্গে যোগ দেন। এনামুল হক পুলিশের কাছে নিজের পরিচয় দিলে বখাটেরা তার দিকে ইশারা করে বলেন, পুলিশ হইছোস তো কি হইছে’। এ কথা বলেই তারা এনামুলকে ছুরিকাঘাত করে। ছুরিকাঘাতে এনামুল হকের শরীরের ৬ জায়গা ক্ষতবিক্ষত হয়। শরীর থেকে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয়।
রাজীবের কাছে ছুরি ছিল বলেও বলা হয়েছে। রাজীভাই ছুরি দিয়ে এনামুলকে শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করেন। স্বামীকে বাঁচাতে গিয়ে স্ত্রী উর্মি আক্তার বখাটেদের হাতে যৌন হয়রানির শিকার হন। পুলিশ রাজিবের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে একটি লোহার রড ও একটি কাঁচি উদ্ধার করে।
অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে উল্লেখ করে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, গ্রেফতারকৃত আসামিদের শনিবার সন্ধ্যায় আদালতে হাজির করা হবে এবং গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে পুলিশ ৫ দিনের রিমান্ড চাইবে।
প্রসঙ্গত, কিশোর গ্যাং ডলটি সাধারণ মানুষের কাছে খুব ভীতির একটি নাম। এই গ্যাংয়ের প্রত্যেকটি সদস্য অনেক মারমুখী হয়ে থাকে। তারা যেকোনো ধরণের অনাকাঙ্খিত ঘতনা ঘটিয়ে ফেলতে পারে যেকোনো সময়। তবে এই কিশোর গ্যাংকে নির্মূল করার জন্য দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী রয়েছে অনেক সতর্ক অবস্থানে। কোনো রকম ছাড় দেওয়া হবে না।