বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার (২৫ অক্টোবর) সকাল ১১টার দিকে তার উত্তরার ১৪ নম্বর সেক্টরের ১৮ নম্বর রোডের বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এর আগে পুলিশ তার বাড়ি ঘেরাও করে। ঢাকা মহানগর উত্তর জামায়াতের প্রচার-মিডিয়া সেক্রেটারি আতাউর রহমান সরকার এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, মতিউর রহমান আকন্দ খুবই অসুস্থ। তার ওপেন হার্ট সার্জারি করা হয়েছে। ২৪ অক্টোবর রাতে তাকে ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গতকাল এমআরআই করা হয়। আজ হাসপাতালে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এসময় পুলিশ তাকে আটক করে অ্যাম্বুলেন্সে করে নিয়ে যায়।
পরিবারের সদস্যরা জানান, মতিউর রহমান আকন্দ খুবই অসুস্থ। গতকাল (মঙ্গলবার) রাতে এমআরআই করা হয়। চিকিৎসকের পরামর্শে তাকে আজ রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করার কথা ছিল। তিনি দীর্ঘদিন ধরে হার্টের সমস্যায় ভুগছিলেন। তার বাইপাস সার্জারি করা হয়েছে।
গত ২৮ অক্টোবর মতিঝিল শাপলা চত্বরে সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছিল জামায়াত। তখন থেকেই প্রশাসনের বিশেষ নজরদারিতে ছিল দলটির নেতারা।
২০১৩ সালের পর আলোচনার বাইরে থাকলেও চলতি বছরের ১২ জুন ঢাকায় সমাবেশ করে আবারও আলোচনায় আসে জামায়াত। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য সাধারণ নির্বাচনকে সামনে রেখে জামায়াতে ইসলামী রাজনীতির মাঠে বেশ সক্রিয়। এমনকি দল সমর্থিত ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবির রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন শহর ও উপশহরে ব্যাপক বিক্ষোভ করছে।
সোমবার (২৩ অক্টোবর) ঢাকায় সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে জামায়াত। তাদের লক্ষ্য একই তত্ত্বাবধায়ক ইস্যুতে সরকারের পতন ও সুষ্ঠু নির্বাচন।
দলটি সর্বশেষ এ বছরের ১২ জুন অনুমতি নিয়ে সমাবেশ করেছিল, তারপর থেকে প্রশাসন কোনো অনুমতি দেয়নি। কিন্তু জামায়াত তাদের কর্মসূচি বন্ধ করেনি। তারা বিনা অনুমতিতে ঢাকাসহ সারাদেশে মিছিল-সমাবেশ করেছে। তবে ২৮ অক্টোবর নিয়ে দলটির ভিন্ন চিন্তা রয়েছে। জামায়াতের একটি সূত্র জানায়, ২৮ অক্টোবরের সমাবেশ সফল করতে তারা সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে। ইতোমধ্যে সংগঠনটি বিভাগ, মহানগর, শহর, থানা ও ইউনিটসহ সব পর্যায়ে সভা করছে।
জামায়াতের একটি কেন্দ্রীয় সূত্র জানায়, ২৮ অক্টোবর প্রশাসন অনুমতি না দিলেও যে কোনো মূল্যে সমাবেশ বাস্তবায়ন করবে দলটি। মতিঝিলের জায়গা না পেলেও এর আশপাশে যে কোনো জায়গায় নিজেদের শক্তি দেখাবে।
এক দফা দাবিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাস্তবায়নের আন্দোলনকে বেগবান করতে গত ২৮ অক্টোবর সুশৃঙ্খলভাবে জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের আহ্বায়ক এবং এক বিবৃতিতে বলা হয়, কার্যনির্বাহী পরিষদ দেশবাসী ও সর্বস্তরের জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। সরকারের কোনো ধরনের উসকানি, অসাংবিধানিক ও গণতন্ত্রবিরোধী অপকর্মে সংগঠনকে বিভ্রান্ত না করা।
২৮ অক্টোবরের সমাবেশে সহযোগিতার জন্য ডিএমপির কাছে জামায়াতের আবেদন প্রত্যাখ্যান করে প্রশাসন। এরপর গণমাধ্যমে বার্তা দেয় দলটি। বার্তায় জামায়াত বলেছে, ‘সাংবিধানিক অধিকার অনুযায়ী ২৮ অক্টোবর রাজধানী ঢাকার শাপলা চত্বরে শান্তিপূর্ণ গণসমাবেশ বাস্তবায়নে সহায়তা চেয়ে পুলিশ কমিশনারের কাছে চিঠি দিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। পুলিশকে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ বাস্তবায়নে সহযোগিতা করতে হবে, বাধা দিতে নয়।