সরকার পরিবর্তনের পর, আগের সরকারের আমলে চাকরিচ্যুত, বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো ও বরখাস্ত হওয়া পুলিশ কর্মকর্তাদের পুনর্বহাল কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে অন্তত আটজন চাকরিচ্যুত এবং ১০ জন বরখাস্ত কর্মকর্তাকে পুনর্বহাল করা হয়েছে।
অনেকে তাদের পুনর্বহালের জন্য আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ই প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালে মামলা করেছিলেন। কেউ মামলার রায়ের ভিত্তিতে, আবার কেউ মামলা প্রত্যাহারের শর্তে চাকরি ফিরে পেয়েছেন। এদিকে অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো ৫১ জন কর্মকর্তার একটি তালিকা তৈরি করা হয়েছে।
আগের সরকারের সময় ২৮ জন পুলিশ কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত বা বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়, এবং আরও ২৮ জনকে ওএসডি করা হয়েছিল। চাকরিচ্যুত কর্মকর্তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক এ কে মাহফুজুল হক। তিনি দাবি করেন, তার চাকরিচ্যুতি ছিল রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। বর্তমানে চাকরি ফিরে পাওয়ার দাবিতে ২৮ জন চাকরিচ্যুত কর্মকর্তা এবং ওএসডি হওয়া কর্মকর্তারা আবেদন করেছেন।
জানা গেছে, যাঁদের চাকরির বয়স শেষ হয়েছে, তাঁরা চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের দাবি জানিয়েছেন। ইতোমধ্যে কয়েকজনকে বিভাগীয় মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়ে পুনর্বহাল করা হয়েছে।
পুলিশের সাবেক আইজি মোহাম্মদ নুরুল হুদা চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের সমালোচনা করে বলেন, দক্ষ জনবল থাকা সত্ত্বেও ধারাবাহিকভাবে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া বাহিনীর শুদ্ধি কার্যক্রমকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ ৬ মাস বা ১ বছরের বেশি হওয়া উচিত নয়।
বর্তমানে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজি) বাহারুল আলম এবং ডিএমপির কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাদ আলীকে দুই বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। র্যাবের মহাপরিচালক এ কে এম শহিদুর রহমানের এক বছরের চুক্তি নবায়ন করা হয়েছে।
চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ এবং পুনর্বহাল প্রক্রিয়ায় ব্যক্তিগত পছন্দের ভূমিকা এবং রাজনৈতিক প্রভাব নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, যোগ্য ও দক্ষ কর্মকর্তাদের ফিরিয়ে আনার মাধ্যমে পুলিশ বাহিনীর কার্যকারিতা বৃদ্ধি করা সম্ভব। তবে এসব প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে, যাতে বাহিনী ও জনগণ উভয়ে উপকৃত হয়।