Saturday , November 23 2024
Breaking News
Home / Countrywide / পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের সময় ‘দম্ভ’করে যে কথা বলে আয়াতকে ৬ টুকরো করা আবির

পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের সময় ‘দম্ভ’করে যে কথা বলে আয়াতকে ৬ টুকরো করা আবির

সাম্প্রতিক সময়ে চট্টগ্রামে আলিনা ইসলাম আয়াত নামের ৫ বছর বয়সী একটি শি”/শুকে নৃশং”/সভাবে আবির আলী নামে ১৯ বছর বয়সী ঘা”তক নিথর করে। আলিনাকে তুলে নেওয়ার পর আবির আলী ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ নেওয়ার জন্য এমন ধরনের পরিকল্পনা করে। এই কাজে ব্যবহার করার জন্য সে একটি নতুন সিম ও ব্যবহার করা একটি মোবাইল ফোনও কিনে নিয়েছিল। কিন্তু সেই ওই সিমটি কেনা মোবাইলে চালু করার চেষ্টা করে বিফল হয়। এই ঘটনার পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যখন তৎপর হয়ে ওঠে তখন সে সুজোগ না পেয়ে মুক্তিপণ দাবি না করে চুপচাপ ছিল। গ্রেফতার হওয়ার পর জিজ্ঞাসাবাদেও হ”/ত্যাকারী ব্যক্তি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে ‘দাম্ভ’ও দেখিয়েছেন।

এ নি”/র্মম ঘটনাটি চট্টগ্রামসহ সারাদেশে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। নিথর হওয়া মেয়েটি থানাধীন বন্দরটিলা নয়াহাট এলাকার শাহেদা ইসলাম তামান্না ও সোহেল রানার একমাত্র সন্তান।

যেভাবে ঘটনার সূত্রপাত

গত ১৫ নভেম্বর নগরীর ইপিজেড থানাধীন বন্দরটিলা নয়াহাট বিদ্যুৎ অফিস এলাকার মসজিদে প্রতিদিনের মতো আরবি পড়তে যাচ্ছিল আয়াত। ওই মসজিদে এলাকার অন্যান্য ছেলে-মেয়েদের সঙ্গে আছরের নামাজের পর আরবি পড়ানো হয়।

পিবিআই কর্মকর্তারা জানান, আবির একবার আয়াতকে কোলে তুলে নেয়। তখন আয়াতের সহপাঠী আসমিন তা দেখে ফেলে। এ কারণে তাকে ছেড়ে দেয় সে। পরে আবির তাকে পিছন থেকে ডাক দেয়। আয়াত কাছে আসতেই তাকে চেপে ধরে আবিরের বাবার ভাড়া বাসায় নিয়ে যায়। সেখানে তাকে লুঙ্গি দিয়ে শ্বাসরো”ধ করে হ”/ত্যা করে। নিথর দেহটি একটি ব্যাগে ভরে সেখান থেকে মায়ের বাড়িতে নিয়ে যায়। দুই বাড়ির মধ্যে দূরত্ব পাঁচ কিলোমিটার। এখানে উল্লেখ্য, গত কয়েক মাস ধরে আবিরের বাবা-মা আলাদা থাকছেন।

পিবিআই পরিদর্শক মো. ইলিয়াছ খান সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ” আয়াতের বডির ব্যাগটি মায়ের বাড়িতে নিয়ে আসার পর প্রথমে টয়লেটের ওপর একটি খালি জায়গায় রেখে দেয়। সেখান থেকে আবার আয়াতের বাড়িতে যায় এবং স্বজনদের সাথে তাকে খুজতে বের হয়। পরে রাত সাড়ে ১০টার দিকে সে তার মায়ের বাড়িতে ফিরে আসে। সেখানে মাকে বলা হয় আয়াতকে পাওয়া যাচ্ছে না।আমিও বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ নিয়েছি। দীর্ঘদিন তাদের বাসায় ছিলাম, একটু গিয়ে তার মা-বাবাকে সান্ত্বনা দিয়ে আসো। এই বলে সে ওই বাড়িতে মা ও বোনকে পাঠায়। এদিকে খালি বাড়িতে আবির আয়াতের নিথর দেহ কেটে ছয় টুকরো করে। টুকরোগুলো দুটি বস্তায় ভরে একটি বস্তা বেড়িবাঁধ এলাকায় এবং অন্য বস্তা বঙ্গোপসাগরে স্লুইস গেটের মুখে ফেলে দেয়।’

প্রয়াত আয়াতের দাদা মঞ্জুর হোসেন সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, “আমার বাড়ির পাশে একটি ভাড়া বাসা আছে। সেখানে আবির আলীর পরিবার ২১ বছর ধরে বসবাস করে। মাঝপথে দুবার ছেড়ে অন্য জায়গায় গেলেও ৪-৫ মাস পর ফিরে আসে। দীর্ঘদিন আমার বাড়িতে থাকার ফলে পারিবারিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এমনকি আমাদের বাড়িতে আবির আলীর জন্ম হয়। আবিরের মা আলো বেগম ও বাবা আজমল আলীর আট মাস আগে বিচ্ছেদ হয়। এর পর আজমল আলী আমার ভাড়া বাড়িতে থাকেন কিন্তু মা নতুন বাসা ভাড়া নেন। পাঁচ কিলোমিটার দূরে ইপিজেড থানাধীন আকমল আলী এলাকায় নতুন করে ঘর ভাড়া নেয়। আবির সেখানে তার মা ও ছোট বোনের সাথে থাকত। কিন্তু সে তার বাবার বাড়িতে আসা-যাওয়া করত।

তিনি আরও বলেন, ‘আয়াত সারাদিন চিৎকার করে সারা বাড়ি মা”তিয়ে রাখতো। আমার একমাত্র নাতনিকে এভাবে হারাবো বুঝিনি। আমি আমার নাতনি হ”/ত্যার বিচার চাই। যে আমার নাতনিকে নির্ম”/মভাবে হ”/ত্যা করেছে তার মৃ”/ত্যু চাই।

পিবিআই পরিদর্শক ইলিয়াছ খান বলেন, “১৫ নভেম্বর বিকেলে আয়াত নিখোঁজ হওয়ার পর তার বাবা ইপিজেড থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করেন। ইপিজেড পুলিশ নিখোঁজ ডায়েরিটি তদন্ত করে। এছাড়াও পিবিআই ছায়া তদন্ত করে। তদন্তের একপর্যায়ে পিবিআই মামলার বিভিন্ন এলাকা থেকে সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে। সেগুলো পর্যালোচনা করে দেখা যায় আবির বাজার ব্যাগে করে কী যেন নিয়ে যাচ্ছে। এ কারণে বৃহস্পতিবার রাতে তার বাড়ি থেকে তাকে আটক করা হয়। পরে জিজ্ঞাসাবাদে আয়াত স্বীকার করে। তাকে অপহ”/রণ করে নিথর করে নিথর দেহটি সাগরে ও স্লুইস গেটের মুখে ছয় টুকরো করে ফেলে দেওয়া হয়।

পিবিআইয়ের এক কর্মকর্তা সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘আবির হ”/ত্যার দায় স্বীকার করার পর সে পিবিআই কর্মকর্তাদের দম্ভ দেখিয়ে বলেছে, আমি সব আলামত নষ্ট করেছি। আমি কোনো কিছুই রাখিনি। যেগুলো দিয়ে আপনারা আমাকে ফাঁসাতে পারবেন।’

মাস দেড়েক পূর্বে ঐ চতুর আবির আয়াতকে গোপন স্থানে তুলে নেওয়ার পরিকল্পনা করে। সে জানায় যে ভারতীয় চ্যানেলে প্রচারিত ক্রাইম পেট্রোল এবং সিআইডি- দেখে এই ঘটনা ঘটানোর পরিকল্পনা করে। এই সকল সিরিয়াল দেখে সে ঘটনা ঘটানোর যে আলামত, সেসব নষ্ট করা ও হ”/ত্যার কৌশল আয়াত্ব করে নেয় বলে জানায় আবির।

About bisso Jit

Check Also

সংস্কারের নামে ভয়াবহ দুর্নীতি-লুটপাট

সংস্কার ও উন্নয়নের নামে কয়েকগুণ বেশি ব্যয় দেখিয়ে হরিলুটের ব্যবস্থা করা হয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *