বিএনপি সভানেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে পাঠানোর মাধ্যমে চিকিৎসার দাবি জানিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিএনপির একটি সমাবেশে যোগ দেওয়ার জন্য রওয়ানা দেওয়ার পর পথে এক ঘণ্টারও অধিক সময় ধরে বিএনপির বর্তমান সময়ের সরব নেত্রী ও সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানাকে আটক করে রাখে পুলিশ।
বিএনপির সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা অভিযোগ তুলে বলেন, আশুগঞ্জ-ভৈরব সংযোগ সেতুর নিকট যাওয়ার পর প্রায় ২৫০ জনের পুলিশের দল আমার গাড়ি থামিয়ে দিয়ে আমার গাড়ি ঘিরে ধরে অবরুদ্ধ করে রাখে। প্রায় এক ঘন্টা ধরে আমার গাড়িটিক এগোতে দেয়নি। সেখানে পুলিশ সদস্যদের সাথে আমার তর্কাতর্কি হয়। আমি তাদেরকে বলতে বাধ্য হয়েছিলাম, তারা আমাকে যদি সমাবেশে যোগ দিতে না দেয়, তাহলে আমি এইখানে রাস্তায় বসে পড়ব।” রুমিন ফারহানা ফোনে দেশের একটি জনপ্রিয় গনমাধ্যমকে এ তথ্য জানান।
শনিবার (৮ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় তিনি জানান, উজান ভাটি হোটেলে নিয়ে তাকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। পরে অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে মুক্তি পেয়ে সমাবেশ স্থলে বেলা ৩টা ১৫ মিনিটের দিকে উপস্থিত হন রুমিন ফারহানা।
তিনি বলেন, সভা প্রথমে হওয়ার কথা ছিল ফুলবাড়ীয়াতে। সেটা বদলে এখন পৌর সভার বাইরে বটতলীতে হবে। পুলিশ ১৪৪ ধারা জারি করার পর আমাদের নতুন জায়গায় সমাবেশ করার জন্য নতুন করে অনুমতি নিতে হয়েছে।
পথে আটকে রাখার বিষয়ে এই সংসদ সদস্য বলেন, ‘আশুগঞ্জ ভৈরব ব্রিজের মুখে প্রায় আড়াইশ পুলিশ আমাকে প্রায় ১ ঘণ্টা রাস্তায় আটকে রাখে। তারা আমাকে ব্রিজে উঠতে দেবে না। সেখানে তাদের সঙ্গে আমার বাক-বিতণ্ডা, কথা কাটাকাটি হয়েছে। তাদেরকে বলেছি, আমাকে যেতে না দিলে আমি রাস্তায় বসে পড়বো। তারা বলেন, আপনি রাস্তা বন্ধ করতে পারবেন না। তখন আমি বলি, আপনি তাহলে আইন যা বলে তা করেন।’
সেখানে ম্যাজিস্ট্রেট ও ইউএনও উপস্থিত ছিলেন জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘ম্যাজিস্ট্রেট আমাকে আইনের কথা বলেছে। তাকে আমি বলেছি, পুরো পেনাল কোড আমার মুখস্ত। আমাকে আইন দেখিয়ে তো লাভ নেই। এক পর্যায়ে তারা আমাকে বলেন, ঠিক আছে, আপনি প্রেসের সঙ্গে মিট করলে উজান-ভাটি রেস্টুরেন্ট পর্যন্ত যেতে পারবেন। এর পরে আর যেতে পারবেন না। তারপর উজান-ভাটিতে গিয়ে বসি, নারী পুলিশসহ প্রায় দুই থেকে আড়াইশ পুলিশ আমাকে ঘিরে রাখে। আমির খশরু মাহমুদ চাচা সেখানে আসেন। তার সঙ্গে সেখানেই কিছু সময় বসেছি। এরপর ৩টার দিকে আমরা রওনা দেই।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যাতে সুষ্ঠুভাবে বজায় থাকে তার জন্য পৌর এলাকার প্রায় ৪০টি পয়েন্টে ভাগ করে ৫০০ জন পুলিশ সদস্যকে মোতায়েন করা হয়। খালেদা জিয়াকে যাতে নিঃশর্ত মুক্তি দেওয়া হয় এবং সেই সাথে তাকে বিদেশে উন্নত চিকিৎসা দেওয়ার সুযোগের দাবিতে পৌরসভা এলাকায় অবস্থিত ফুলবাড়িয়া কনভেনশন সেন্টারে কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেয় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপি। বিএনপির নেতাকর্মীদের তরফ থেকে আরো দাবি করা হয়েছে, তাদের শান্তিপূর্ন সমাবেশ পুলিশ নস্যাৎ করার চেষ্টা করে।