বিডিআর বিদ্রোহের পেছনের কাহিনি এখনও রহস্যে ঘেরা। ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারিতে ঢাকার পিলখানায় সংঘটিত ভয়াবহ হত্যাকাণ্ডে ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন নিহত হন। ঘটনার ১৫ বছর পরও এর মূল পরিকল্পনা ও উদ্দেশ্য অজানা রয়ে গেছে।
সম্প্রতি সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল মইন উ আহমেদ এই ঘটনার বিষয়ে মুখ খুলেছেন। ফ্লোরিডা থেকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “সেনাবাহিনীকে ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে এই হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়েছিল।” মইন সরকারের তদন্ত কমিশনের উদ্যোগের প্রশংসা করে বলেন, “এই কমিশনের মাধ্যমে হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত সত্য উদ্ঘাটিত হবে।”
জেনারেল মইন তাঁর স্মৃতিকথা ‘পিলখানায় পৈশাচিক হত্যাকাণ্ড’ শিরোনামের একটি বইতে এ ঘটনা নিয়ে আরও তথ্য তুলে ধরবেন বলে জানান। তিনি এ সময় তাঁর বিরুদ্ধে ছড়ানো গুজব নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেন।
মইন জানান, বিদ্রোহের খবর প্রথমে সেনাবাহিনীর সদর দপ্তরে পৌঁছানোর পরই তিনি পদক্ষেপ নেন। ৪৬ ব্রিগেডকে ‘অপারেশন রিস্টোর অর্ডার’-এর অধীনে প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সেনাবাহিনীর সদস্যদের এলাকাটি থেকে পিছিয়ে যেতে বলা হয়। এদিকে, বিদ্রোহীরা ভারী অস্ত্র ব্যবহার করে সেনাবাহিনীর প্রতিরোধ পরিকল্পনায় বাধা সৃষ্টি করে।
তৎকালীন পরিস্থিতি বর্ণনা করতে গিয়ে মইন বলেন, “বিদ্রোহ শুরুর পর সকালে বিডিআরের ডিজি মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদের সঙ্গে আমার শেষবারের মতো কথা হয়। পরে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও সফল হইনি।” মইনের মতে, বিদ্রোহীরা পরিকল্পিতভাবে বেশিরভাগ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে ফেলে সেনাবাহিনীর উপস্থিতির আগেই।
মইন আরও বলেন, “র্যাব সদস্যরা আগে থেকেই পিলখানায় পৌঁছেছিল, কিন্তু তাদের ঢুকতে অনুমতি দেওয়া হয়নি। অনুমতি পেলে তারা বিদ্রোহ দমন করতে পারত।”
এ ঘটনার তদন্তে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র রয়েছে কি না, তা তুলে ধরার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তদন্ত কমিশনের প্রধান এ এল এম ফজলুর রহমান। মইন আশা প্রকাশ করেন, তদন্তের মাধ্যমে বিডিআর হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত চিত্র জাতির সামনে আসবে।