Thursday , November 14 2024
Breaking News
Home / Countrywide / পিটার হাসের বিরুদ্ধে ভিন্ন এক অভিযোগ তুললেন বিচারপতি মানিক

পিটার হাসের বিরুদ্ধে ভিন্ন এক অভিযোগ তুললেন বিচারপতি মানিক

অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেছেন, মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস ফালতু ক্লেইম করা মানুষদের ডেকে তাদের কথা শুনছেন। অথচ জিয়াউর রহমান যে ১৫শর বেশি মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যা করেছেন তাদের পরিবারের কাছে কিছুই জানতে চান না। তাদের পরিবারের কাউকে ডেকে বলবেন না আপনার পরিবারের কী হয়েছে। এটা স্পষ্ট যে জনাব পিটার হাস এখন বিএনপি-জামায়াতের হয়ে কাজ করছেন।

রোববার (১০ ডিসেম্বর) বিশ্ব মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন।

জিয়ার শাসনামলে পহেলা আগস্ট মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার এবং রাষ্ট্রীয়ভাবে গুম হওয়া পরিবারগুলোর ব্যানারে এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।

মানববন্ধনে বিচারপতি মানিক বলেন, এখানে যারা আছেন এবং যারা নেই তাদের সবার দাবি, পবিত্র সংসদ এলাকা থেকে মানবাধিকার বিরোধী খু”নি জিয়ার কবর চিহ্ন মুছে ফেলা হোক। এই দাবি দীর্ঘদিনের। এটা করা আবশ্যক. তিনি মরনোত্তোর বিচার দাবি করেন। তার মরনোত্তোর বিচার করলে এটা অন্তত প্রমাণ করতে হবে যে জিয়া একজন খুনি। আমরা খুনি জিয়া ও তার সহযোগীদের বিচারের জন্য একটি কমিশন গঠনের দাবি জানিয়েছি। আমাদের দাবি এখনও পূরণ হয়নি। আমরা আশা করি, শিগগিরই এই কমিশন গঠন করে খু”নি জিয়ার সব হ”ত্যার বিচার হবে।

তিনি বলেন, ‘১৯৭৭ সালে একটি জাপানি বিমান হাইজ্যাকের ঘটনাকে কেন্দ্র করে পাকিস্তানপন্থি জিয়াউর রহমান বিচার নামক প্রহসনে অনেক মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যা করেছিল। ওই হাইজ্যাকে বাংলাদেশের কারো কোনো সম্পৃক্ততা ছিল না। কিন্তু জিয়াউর রহমানের সেই বিচারে এক মিনিটে একজন মানুষের ফাঁসির আদেশ দেওয়া হয়েছিল। বিচারকালে তখন যেসব ম্যাজিস্ট্রেটরা দায়িত্বরত ছিলেন তারাই শিকার করেছে। জেনারেল মীর শওকত আলীও এ ঘটনা শিকার করে বলেছিলেন সেখানে বিচার হয়নি। বিচারের নামে প্রহসন হয়েছে। নিয়মঅনুযায়ী ফাঁসির পরে তার লাশটি পরিবারের কাছে হস্তান্তর করার কথা। কিন্তু সেসব লাশ কি পানিতে ফেলে দিয়েছে, নাকি জ্বালিয়ে দিয়েছে কেউ আজ পর্যন্ত জানে না। ১৫ শত মানুষেরা স্বজনরা জানে না তাদের প্রিয়জনের লাশ কোথায় আছে। কবর দেওয়া হয়েছে কি না। এমনকি তাদের মৃত্যু দিবসও জানে না।’

“যারা আজিমপুর কবরস্থানে কবর খননের দায়িত্বে ছিল তাদের এই লা”শগুলোকে গণকবর দিতে বলা হয়েছিল। অনেকে কবরও পায়নি। কারো লা”শ ভেসে গেছে। কাউকে আবার বনে বাঘের মুখে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে৷ এসব কাজ করে জিয়াউর রহমান নরপিচাশের পরিচয় দিয়েছেন। ৭৭ সালে তার ঘৃণিত কাজ নিয়ে বিশ্ব বিবেক কথা বললেও তৎকালীন সেসব দেশের প্রশাসকরা কিন্তু কথা বলেনি। এসব হত্যাকাণ্ড নিয়ে আজও কেউ কথা বলছে না।

শামসুদ্দিন চৌধুরী বলেন, প্রতিবছর ১০ ডিসেম্বর মানবাধিকার দিবস আসে কিন্তু খু”নি জিয়ার মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে কেউ কথা বলে না। জিয়া এসব হ”ত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন পাকিস্তানি প্রেসক্রিপশনে। এর আগে পাকিস্তানি প্রেতাত্মাদের নির্দেশে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার মধ্য দিয়ে জিয়ার হত্যার রাজনীতি শুরু হয়। চার নেতাও নিহ”ত হন। অসংখ্য মুক্তিযোদ্ধা ও সেনা কর্মকর্তাকেও হ”ত্যা করা হয়। হ”ত্যার এই ধারা অব্যাহত রেখেছেন তার পাকিস্তানপ্রেমী স্ত্রী খালেদা জিয়া।

তিনি বলেন, ২০০১ সালের নির্বাচনের আগে ও পরে পাঁচ বছর খালেদা জিয়ার নির্দেশে শত শত মানুষকে হ”ত্যা করা হয়েছে। বিশেষ করে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনকে হ”ত্যা করা হয়। শত শত হিন্দু নারী নির্যাতন করা হয়। অনেকে দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। ২০০২ সালে খালেদা জিয়া অপারেশন ক্লিনহার্টের নামে বহু মানুষকে হ”ত্যার নির্দেশ দেন। এই জিনিসগুলো কারো চোখে পড়ে না।

এই অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি বলেন, বাংলাদেশের মাটি থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের নির্মূল করার জন্য খু”নি জিয়া এসব পরিকল্পনা করেছিলেন। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি সেনারা বাংলাদেশে যে গণহ”ত্যা চালিয়েছিল তা ছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সবচেয়ে বড় গণহ”ত্যা। কিন্তু আজও আমরা সেই গণহত্যার স্বীকৃতি পাইনি। বিশ্ব বিবেকের কাছে আমার প্রশ্ন, আপনি কি আপনার ইচ্ছা অনুযায়ী গণহত্যার মানদণ্ড নির্ধারণ করেন নাকি যে গণহত্যাগুলো আসলে ঘটেছিল সেগুলো নিয়ে কথা বলেন? ৭৭ সালের ঘটনা সারা বিশ্ব জানে। সে সময় বিবিসি ও রয়টার্স এসব খবর খুব গুরুত্ব দিয়ে প্রচার করে। তাদের প্রতিবেদনে বিচারের নামে প্রহসন বেরিয়ে এসেছে।

জিয়াউর রহমানের শাসনামলে নিহত ও নিখোঁজ হওয়া পরিবারের সদস্যদের স্মরণে মানববন্ধন করা হয় স্বজনদের। একই সঙ্গে মেজর জিয়া মরনোত্তোর বিচার দাবি করেন।

About bisso Jit

Check Also

উপদেষ্টা পরিষদেই বৈষম্য

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে আঞ্চলিক বৈষম্যের অভিযোগ উঠেছে। ২৪ সদস্যের এই পরিষদে ১৩ জনই চট্টগ্রাম …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *