পিএসসির প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) সাবেক চেয়ারম্যানের গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলী ও দুই পরিচালকসহ ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
সোমবার (৮ জুলাই) ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।
এদিকে প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় চালক আবেদ আলীর নাম প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই তাকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা আলোচনা শুরু হয়েছে। সৈয়দ আবেদ আলী এবং তার ছেলে সৈয়দ সোহানুর রহমান ফেসবুকে বেশ সরব দেখা যায়। এ ছাড়া মাদারীপুরের ডাসার উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পেয়েছেন সৈয়দ আবেদ আলী। ফেসবুকে তাদের জীবনযাপন এবং বিভিন্ন কর্মসূচির ছবি দেখে ধারণা করা কঠিন যে তিনি পিএসসির সাবেক চেয়ারম্যানের ড্রাইভার ছিলেন। একজন সামান্য গাড়িচালক হয়েও কীভাবে এত সম্পদ এবং অর্থবিত্তের মালিক বনেছেন তা যেন এখন সবার কাছে পরিষ্কার।
সাবেক পিএসসি চেয়ারম্যানের এই গাড়িচালকের নিজের একটি ডুপ্লেক্স বাড়িসহ কুয়াটায় একটি থ্রিস্টার মানের হোটেল রয়েছে। এ হোটেল সম্পর্কে তার ফেসবুক প্রোফাইলে এক পোস্টে তিনি লিখেন আমাদের নতুন হোটেল এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করলাম আজ। হোটেল সান মেরিনা, কুয়াকাটা। সমুদ্রকন্যার পাড়ে আজীবন নিজের জন্য একটা থাকার ব্যবস্থা।
তার ছেলে সৈয়দ সোহানুর রহমান সিয়াম ছাত্রলীগের ডাসার উপজেলা কমিটির প্রতিষ্ঠাতা সহ-সভাপতি ছিলেন। এ ছাড়া বর্তমানে তিনি ঢাকা উত্তর শাখা ছাত্রলীগের ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। তাকে ফেসবুকে বিভিন্ন সমাজসেবামূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকতে দেখা যায়। এমনও দেখা যায় তিনি বিলাসবহুল জীবনযাপন করছেন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীরা তাদের কর্মকাণ্ড নিয়ে নানা মন্তব্য করেছেন। সরকারের সাবেক অতিরিক্ত সচিব মাহবুব কবির মিলন লিখেছেন, আমার অফিসের গাড়ির চালক যদি কোটি টাকা আয় করেন, তাহলে আমি মিলিয়ন মিলিয়ন আয় করেছি!
গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ডা. ইমরান এইচ সরকার লিখেছেন, পিএসসির প্রশ্ন ফাঁস করে লক্ষ লক্ষ শিক্ষার্থীর জীবন ধ্বংস করা পিশাচ এই আবেদ আলী জীবন। প্রশ্ন বিক্রি করা টাকায় গড়ে তুলেছে নিজের সাম্রাজ্য। এই কুলাঙ্গারের ছবি ছড়িয়ে দিন। এরাই এই জাতির সবচেয়ে বড় শত্রু। সবাই চিনে রাখুক এই কুলাঙ্গারকে।
২০১৮ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতা হাসান আল মামুন পিএসসির সাবেক চেয়ারম্যানের গাড়িচালকের ছবি দিয়ে লিখেছেন,আবেদ চাচা নামাজ থেকে উঠেন, সারাদেশের মানুষের নামাজ পড়া শেষ! উঠে দেখেন সারাদেশের ছাত্র সমাজ আপনার জন্য দোয়া করছে। আপনি কনফার্ম জান্নাতি।
এদিকে অভিনেত্রী সোহানা সাবা এক পোস্টে লিখেছেন, , যারা দেখিয়ে দেখিয়ে ধর্মচর্চার নামে বাড়াবাড়ি করে, পাশে মসজিদ কিংবা নামাজের স্থান রেখে রাস্তায়, খেলার মাঠে, সমুদ্র তটে নামাজ পড়ে ছবি দেয় সোশাল মিডিয়ায়, এদের মাঝে আমি কোন ভালোমানুষ দেখি না। সবগুলোই বাটপার।যারা শুক্রবার “জুম্মা মুবারক” বলে ফেসবুকে পোস্ট দেয়, আর যারা নিজের আমলনামা বাদ দিয়ে অন্যদের পোস্টে কমেন্ট করে -পরকালে দোজখে যাবে!! আর দান খয়রাতের ছবি-হিসাব প্রচার করে মিডিয়া ও সোশ্যাল মিডিয়ায়। সেইগুলোকেও আমার একই ভন্ড মনে হয়।
শুধু এ অভিনেত্রীই নন, আবেদ আলীর বিভিন্ন কর্মকাণ্ড নিয়ে বিভিন্ন শোবিজ তারকা থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ ছবিসহ স্ট্যাটাস দিচ্ছেন।