ভারতীয় টিভি চ্যানেল এবিপি আনন্দের বিরুদ্ধে বাংলাদেশি এক যুবকের পাসপোর্ট আটকে জোরপূর্বক সাক্ষাৎকার নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। জানা গেছে, ফরিদপুরের শুভ্র কর্মকার নামের এক যুবক সম্প্রতি চিকিৎসার উদ্দেশ্যে ভারতে গেলে পেট্রাপোল সীমান্তে তার পাসপোর্ট আটকে সাক্ষাৎকার নেয়া হয়। ওই সাক্ষাৎকারে শুভ্র বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ তোলেন, যা নিয়ে দেশজুড়ে তুমুল বিতর্ক শুরু হয়েছে।
শুভ্র কর্মকার সাক্ষাৎকারে বলেন, “বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর অনেক অত্যাচার হচ্ছে। তাদের বাড়িঘর দখল, মন্দির ও শ্মশান পুড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। এমনকি শিশু ও নারীদের ওপর নির্যাতন চলছে। আমরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছি।” তিনি আরও বলেন, বর্তমান সরকার প্রধান ড. মুহাম্মাদ ইউনূসের শাসনামলে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে, যা দরিদ্রদের ওপর বড় আঘাত হেনেছে।
তবে শুভ্রর এই বক্তব্য তার পরিবার এবং স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতারা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও মিথ্যা বলে দাবি করেছেন। তার বাবা সুনীল চন্দ্র কর্মকার জানান, পাসপোর্ট কেড়ে নিয়ে জোরপূর্বক এসব কথা বলানো হয়েছে। তিনি বলেন, “আমাদের এলাকায় কখনো এমন ঘটনা ঘটেনি। আমার ছেলে যা বলেছে তা মিথ্যা এবং জোরপূর্বক বলানো হয়েছে।”
স্থানীয় স্বর্ণ ব্যবসায়ী ও জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা শুভ্রর বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছেন, ফরিদপুরের হিন্দু সম্প্রদায় শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করছে এবং ব্যবসা পরিচালনা করছে। মেঘনা জুয়েলার্সের স্বত্বাধিকারী স্বপন কুমার কর্মকার বলেন, “শুভ্রের বক্তব্য পুরোপুরি মিথ্যা। সে মানসিকভাবে অসুস্থ। এমন কোনো ঘটনার সত্যতা নেই।”
ফরিদপুর কোতয়ালী থানার ওসি মো. আসাদউজ্জামানও বিষয়টি নাকচ করে বলেন, “এখানে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর কোনো হামলা বা নির্যাতনের ঘটনা ঘটেনি। শুভ্রের বক্তব্য মনগড়া এবং ভিত্তিহীন। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এ ঘটনায় জেলাজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় হিন্দু নেতারা এবং সাধারণ মানুষ শুভ্রর বক্তব্যের নিন্দা জানিয়ে এর পেছনের কারণ তদন্তের দাবি করেছেন।