নানা প্রলোভন দেখিয়ে গ্রাহকদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে গত বেশ কয়েক মাস ধরেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ‘ইভ্যালি’। ইতিপূর্বে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এ প্রতিষ্ঠানটির পূর্বের পরিচালক রাসেল-শামীমা দম্পতিকে।
আর এদিকে এবার উচ্চ আদালত কর্তৃক গঠিত ইভ্যালির বর্তমান নতুন বোর্ডের চেয়ারম্যান ও আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেছেন, ই-কমার্স কোম্পানি ইভ্যালির ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা নেই। দুটি ওয়্যার হাউসের মোট মূল্য প্রায় ২৫ কোটি টাকা। অ্যামাজন সহযোগিতা করেনি। আভালি সার্ভারে প্রবেশ করা যাচ্ছে কারণ তার পাসওয়ার্ড নেই। এ অবস্থায় বিনিয়োগকারীদের আনতে না পারলে পাওনাদারদের ঋণ পরিশোধ করা অসম্ভব।
শুক্রবার (১ জুলাই) বিকেলে ধানমন্ডিতে ইভালির কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ইভালির দুই ধরনের পাওনাদার রয়েছে বলে তিনি জানান, যারা সরবরাহকারী এবং যারা ক্লায়েন্ট। এখানে সরবরাহকারীরা আরও বেশি পাওনা। ইভালির বর্তমানে যে সম্পদ রয়েছে তা দিয়ে ঋণদাতাদের সন্তুষ্ট করা অসম্ভব। ঢাকার সাভারের ইভ্যালির দুটি ওয়্যার হাউসে প্রায় ২৫ কোটি টাকার পণ্য রয়েছে। এছাড়া নয়টি ছোট-পুরাতন কাভার্ড ভ্যান ও ৫টি গাড়ি পেয়েছি। তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা নেই। যা পাওনাদারদের টাকার তুলনায় কিছুই নয়।
ইভ্যালির সিইও মো. রাসেল ও তার স্ত্রী ইভ্যালির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিন বিনিয়োগকারী আনতে পারবেন বলে উচ্চ আদালতে একটি আর্জি দিয়েছেন। তারা বিনিয়োগকারী আনতে পারলে কোম্পানি চলবে, ঋণদাতারাও টাকা পাবে। এটা নির্ভর করে তারা বিনিয়োগকারীদের আনতে পারবে কি না।
ইভ্যালির সার্ভারের এক্সেস না থাকায় দেনা-পাওনা ও লেনদেনের সঠিক তথ্য পাওয়া যাচ্ছেনা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আমরা ইভ্যালিরএর সার্ভার পরিচালনা করার জন্য অনেক প্রচেষ্টা করেছি, ইভ্যাল এর সার্ভারে অ্যাক্সেস না থাকার কারণে, ঋণ এবং লেনদেনের সঠিক তথ্য পাওয়া যায়নি। আমাদের কাছে পাসওয়ার্ড নেই। আমরা আদালতের অনুমতি নিয়ে কারাগারে গিয়ে রাসেলের সঙ্গেও কথা বলেছি। “তিনি লিখিত দিয়েছেন, ‘পাসওয়ার্ডটি তার মনে নেই। এটা তার ডেস্কের ড্রয়ারে একটি কালো ডায়েরিতে আছে। ‘
আমরা তখন এটুআই, সিআইডিসহ দেশের বেশ কিছু আইটি বিশেষজ্ঞের সাথে বসে পাসওয়ার্ড পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করি, কিন্তু তা সম্ভব হয়নি। সার্ভারের নিয়ন্ত্রক অ্যামাজনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা একটাই কথা বলে, পাসওয়ার্ড ছাড়া কোনো তথ্য পাওয়া যাবে না।
এদিকে অধিক লাভের আশায় বিভিন্ন কোম্পানি থেকে টাকা তুলে ইভ্যালিতে বিনিয়োগ করে রীতিমতো রাস্তায় রাস্তায় ঘুরতে হচ্ছে অনেককে। এখন গ্রাহকদের যেন একটাই দাবি, হয় বিনিয়োগকৃত টাকা, না হয় পন্য দিলেই খুশি তারা।