Wednesday , November 13 2024
Breaking News
Home / opinion / পাল্টা জবাব দেওয়াটাই স্বাভাবিক: নাহিদ

পাল্টা জবাব দেওয়াটাই স্বাভাবিক: নাহিদ

সম্প্রতি বাংলাদেশের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছে যুক্তরাষ্ট্র। এমনকি এই অভিযোগের ভিত্তিতে দেশের প্রশাসনের বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নিষাধাজ্ঞা জারি করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের এমন সিদ্ধান্তকে ঘিরে দেশ জুড়ে এই নিয়ে বিভিন্ন ম হলে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। এবার এই প্রঙ্গে বেশ কিছু কথা জানালেন বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘ভালোবাসি মাতৃভাষা’ গ্রন্থের সংকলক ও ইংরেজি অনুবাদক নাহিদ উকিল জুয়েল।

যুক্তরাষ্ট্র মূলত বিভিন্ন ব/ন্দু/ক/যু/দ্ধে নি/হ/ত সন্ত্রা/সী/দের বিষয়টিকে বিচারবহির্ভূত হ/ত্যা/কাণ্ড হিসেবে ব্যাখ্যা করেছে। ব্যক্তিগতভাবে আমি নিজেও কোনো বিচারবহির্ভূত হ/ত্যা/কাণ্ড সমর্থন করি না। কারণ প্রতিটি মানুষেরই ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকার রয়েছে। যে কোনো অপরাধের শাস্তিই আইন ও আদালতের প্রক্রিয়ায়ই হওয়া উচিত বলে আমি মনে করি। র‍্যা/ব-পু/লি/শ যেহেতু ওয়েল ট্রেইনড। তাদের কাছে জ/ঙ্গি/রা পরাস্ত হওয়াটাই স্বাভাবিক। এই প্রক্রিয়াতেই হয়তো বেশ কিছু জ/ঙ্গি স্প/ট ডে/ড হয়েছে। র‍্যা/ব-পুলি//শেরও কিছু সদস্য আ/হ/ত কিংবা নি/হ/ত হয়েছে। তবে একই সঙ্গে কমনসেন্স দ্বারা আমি এটিও বুঝি, জ/ঙ্গি/দে/র সঙ্গে আ/গ্নে/য়া/স্ত্র, গো/লা/বা/রুদ এসব থাকাটাই স্বাভাবিক। র‍্যা/ব-পু/লি/শের অভিযানে তারা আত্মসমর্পণ না করে আ/ক্র/মণ করলে র‍্যাব-পু/লি/শও হাত পা গুটিয়ে বসে না থেকে পাল্টা জবাব দেওয়াটাই স্বাভাবিক।

প্রথমত, নিউজে ড. বেনজীর আহমেদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা এমনভাবে বলা হলেও বিষয়টি মোটেও ব্যক্তিগত পর্যায়ের নয়। বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের। যুক্তরাষ্ট্র যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, সেটি ব্যক্তি ড. বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে নয়। বরং অভিযোগটি র‍্যাবের বিরুদ্ধে। তারই অংশ হিসেবে র‍্যাবের বর্তমান মহাপরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন চৌধুরী, সাবেক মহাপরিচালক ড. বেনজীর আহমেদসহ (আইজিপি হিসেবে নয়) র‍্যাবের আরও চারজন কর্মকর্তার ব্যাপারে এই নিষেধাজ্ঞা। অথচ মিডিয়ায় ঢালাওভাবে বেনজীর আহমেদের নাম দিয়ে শিরোনাম করা হচ্ছে। এটি অবশ্য টিআরপির খেলা। কারণ সে যখন যে চেয়ারে ছিলেন, সেটি নিয়েই মিডিয়ার আগ্রহ বেশি ছিল। তবে তার জ্যেষ্ঠকন্যা রিশতার বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা চলা অবস্থায় তার নাম এভাবে শিরোনামে আনার ব্যাপারটি আমার কাছে ভালো লাগেনি। কারণ অধিকাংশ মানুষ নিউজের বিস্তারিত না পড়ে শুধু শিরোনাম পড়েই চলে যায়।

দ্বিতীয়ত, বাংলাদেশ হঠাৎ যুক্তরাষ্ট্রের এত মাথা ব্যথার কারণ হয়ে উঠলো কেন? প্রকৃতপক্ষে এই করোনা পরিস্থিতিতে গোটা বিশ্বের অর্থনীতি যেখানে ক্ষতির মুখে পড়েছে, সেখানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার ভিশনারি ও সাহসী সিদ্ধান্তের ফলে চলমান অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রা, মাদক ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতির মাধ্যমে মানুষের জানমালের নিরাপত্তা ও মানবাধিকার নিশ্চিত হওয়াই মূলত পশ্চিমা বিশ্বের এত জ্বলনের কারণ। তাই তো গত ৯-১০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ‘সামিট ফর ডেমোক্রেসি’-তে দাওয়াত পায়নি বাংলাদেশ। তারপর আসলো র‍্যাবের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে এবং তার ছয় কর্মকর্তার যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি। বিষয়টি নিয়ে হয়তো স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় স্টেটমেন্ট দেবে। তবে আমি আমার সামান্য জ্ঞানে কিছু ব্যক্তিগত অবজারভেশন তুলে ধরতে চাই।

র‍্যাব বাংলাদেশ পু/লি/শ বা/হি/নীর অধীনে থাকা একটি কম্পোজিট ফোর্স। এই বাহিনীর নামেই রয়েছে ‘র‍্যা/পি/ড’ শব্দটি। তাই এই বাহিনীর কার্যক্রম কিংবা ম্যান্ডেটেও রয়েছে ভিন্নতা। মানুষের অধিকার ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই র‍্যা/বে/র এত শত অভিযান। জ/ঙ্গি/বা/দ এবং মাদকের বিরুদ্ধে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীঘোষিত জিরো টলারেন্স নীতি বাস্তবায়নেই র‍্যাব তার সর্বশক্তি বিনিয়োগ করেছে এবং অনেকাংশে সফলও হয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যের ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখতে পাই, বিভিন্ন দেশে জ/ঙ্গি/বা/দের উত্থান কিংবা বিস্তারের ইস্যুতেই যুক্তরাষ্ট্র তাদের সেনা মোতায়েন করেছে এবং সেসব দেশের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। সেখানে বাংলাদেশে জ/ঙ্গি/বাদের জন্মের সঙ্গে সঙ্গেই র‍্যা/ব তথা বাংলাদেশ পু/লি/শে/র দুঃসাহসিক অভিযানে জ/ঙ্গি/বাদ হয়েছে ছিন্নভিন্ন।

এক কথায় জ/ঙ্গি/বা/দে/র মূলোৎপাটন হয়ে গেছে। তাই হয়তো এই অজুহাতে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো প্রকার হস্তক্ষেপের সুযোগটি নষ্ট হওয়াতেই তারা আশাহত হয়ে ক্ষেপেছে। মা/দ/কে/র ব্যাপারটিও অনেকটা সেরকম। যেহেতু মা/দ/ক একদম ব্যক্তি পর্যায়ের ইস্যু তাই মা/দ/ক শতভাগ নিশ্চিহ্ন করা সম্ভব নয়। কিন্তু মা/দ/ক ব্যবসায়ীদের দমনে র‍্যা/ব অনেকটাই সফল হয়েছে। মা/দ/ক ও জ/ঙ্গি/বা/দ দমনের ফলে মানুষের জানমালের নিরাপত্তা এবং মানবাধিকার হয়েছে সুসংহত। অথচ বিষয়টিকে যুক্তরাষ্ট্র ব্যাখ্যা করছে মানবাধিকার লঙ্ঘন হিসেবে! হায় সেলুকাস! মাদকের ব্যাপারটিও অনেকটা এরকম। বিশেষ করে বেনজীর আহমেদ যখন ঘোষণা দিলেন ‘হুএভার, হোয়াটএভার, হোয়্যারএভার, কেউই আমাদের অপারেশনের বাইরে নন।’ তখন মা/দ/ক কারবারিরাও তাদের শক্তি বাড়াতে অ/স্ত্র/স/স্ত্র সঙ্গে নিয়েই মা/দ/ক চালান করা শুরু করলো এবং পরিণতিও আগের মতোই হলো। সবচেয়ে বড় কথা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা আইনের প্রতি চূড়ান্ত শ্রদ্ধাশীল বলেই তার নিজের পিতা-মাতা ও পরিবারের সদস্যদের হ/ত্যা/র বিচারটি পর্যন্ত আইনানুগ প্রক্রিয়াতেই সম্পন্ন করেছেন। আমি কনফিডেন্টলি বলতে পারি, যিনি তার নিজের পরিবারের ব্যাপারেই আইন লঙ্ঘন করেননি। তিনি অন্য ব্যাপারেও আইন কিংবা মানবাধিকার লঙ্ঘন হলে কাউকে এক বিন্দু ছাড় দিতেন না।

এত যুক্তিতর্কের প্রয়োজন হয় নাকি? বেনজীর আহমেদ তো সেই মহৎপ্রাণ যার অনন্য প্রচেষ্টায় সুন্দরবনের জ/ল/দ/স্যু/রা আ/ত্ম/সমর্পণ করে দস্যুতা ছেড়ে ফিরেছে স্বাভাবিক জীবনে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে ব্যক্তিগত পর্যায়ে আলোচনা ও সুপারিশের মাধ্যমে এই লোকগুলোকে আইনের কঠিনতা থেকে বাঁচিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফেরানোর মত কাজ কি মানবতা নয়? হলি আর্টিজানে যখন জঙ্গিরা এতগুলো মানুষকে জিম্মি করে রেখেছিলো, তখন ব্যক্তিগত একটি সোশ্যাল কল ফেলে সবার আগে অন দ্য স্পটে হাজির হয়ে অভিযানে নিজে অংশ নেওয়া কি মানবতা নয়? করোনা পরিস্থিতিতে সারাদেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার পাশাপাশি গৃহবন্দি গরিব কর্মহীনদের খাদ্য সহায়তা দেওয়ার ব্যবস্থা করে দেওয়া কি মানবতা নয়? রাজশাহীর বাঘাতে এক বাগানমালিক যখন তার আমের জন্য শামুকখোল পাখির সব বাসা ভেঙে দিতে উদ্যত হয়েছিল, তখন বাগানমালিককে আমের জন্য আর্থিক ক্ষতিপূরণ দিয়ে পাখিগুলোকে রক্ষা করা কি মানবতা নয়? করোনায় মারা যাওয়া প্রত্যেক পুলিশ সদস্যের পরিবারের জন্য ব্যক্তিগত পর্যায় থেকে খাদ্য, পোশাক ও আর্থিক সহায়তা প্রদান কি মানবতা নয়?

এরকম উদাহরণ লিখতে গেলে শেষ হবে না। কয়টা উদাহরণই বা জনসম্মুখে আসে। আমি তো আজ পর্যন্ত দেখলাম না ভাই কখনো তার নিজের কোনো মানবিক কার্যক্রম ফেসবুকে পোস্ট করেছেন। শেষে একটা কথা বলি। চট্টগ্রামের তালসরা মাজার লু/টে/র ঘটনা, লিমন ইস্যু এবং সর্বোপরি নারায়ণগঞ্জের সেভেন মার্ডার ইস্যুর পরও বেনজীর আহমেদ দায়িত্বগ্রহণের সঙ্গে সঙ্গে মানুষ র‍্যা/বে/র ওপর সর্বোচ্চ আস্থা রেখেছিল। র‍্যা/বে/র পুরো কর্মকাণ্ডে তো কত অফিসারই জড়িত ছিল। তবু অন্য সবাইকে বাদ দিয়ে শুধু বেনজীর আহমেদ। বর্তমান ডিজি আব্দুল্লাহ আল মামুন চৌধুরী নাম কেন আনা হলো? এগুলো আসলে দীর্ঘদিনের পুঞ্জীভূত ক্ষোভ থেকে প্রতিশোধের চেষ্টামাত্র। ড. বেনজীর আহমেদ ডিএমপি কমিশনার থাকা অবস্থায় ২০১৩ সালের ৫ মের ঢাকা অবরোধ ন/স্যা/ৎ করেছেন, রাস্তায় সহিংসতা ও অগ্নিসংযোগ ও মানুষ হ/ত্যা বন্ধ করেছেন। স্বাধীনতা ও জনগণের শত্রুদের প্রতিহত করেছেন। তিনি একজন দেশপ্রেমিক।

দেশ ও জনগণের কল্যাণের প্রশ্নে তিনি সদা সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন। বেনজীর তার অবসরের বয়সসীমায় চলে এসেছেন। তিনি নিজ কর্ম দ্বারা পু/লি/শ বাহিনীর ইতিহাসে নিজেকে সবচেয়ে ক্যারিশসমেটিক অফিসার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছেন। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে এই ক্যারিশমার চাহিদা ও জনপ্রিয়তা এখন বিশ্বব্যাপী। এজন্যেই তাকে লক্ষ্য করেই শত্রুপক্ষের এতো ষড়যন্ত্র। তবে বেনজীর আহমেদকে শুধু বলবো, ‘আপনার প্রতি একটাই অনুরোধ, আপনি এসব নিয়ে ভাববেন না। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি কোনো ষড়যন্ত্রেই কোনো কাজ হবে না। কারণ আপনার জন্য পুরো বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণের দোয়া ও সমর্থন আছে। সেই দোয়াতেই আপনি সবসময় ভালো থাকবেন ইনশাআল্লাহ। আপনার জন্য দোয়া ও শুভকামনা।’

যুক্তরাষ্ট্রের এমন সিদ্ধান্তকে ঘিরে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশের সুশীল সমাজের অনেকেই। এমনকি সরকারের বিভিন্ন দফতরের অনেকেই এই নিয়ে বলেছেন নানা ধরনের কথা। ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহরের জন্য স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে।

About

Check Also

আগামীকাল ক্যান্টনম্যান্টে হামলার পরিকল্পনা করেছে আঃলীগ, মিটিংয়ের ভিডিও আসছে: ইলিয়াস হোসেন

ড. বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দল শীঘ্রই মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকারকে বিপদে ফেলতে খুব …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *