মালদ্বীপের পার্লামেন্টে সরকার ও বিরোধী সাংসদের মধ্যে মারামারি হয়েছে। মন্ত্রিসভায় নতুন চার মন্ত্রীর অনুমোদন নিয়ে উভয় পক্ষের সংসদ সদস্যদের মধ্যে মতানৈক্য লড়াইয়ে রূপ নেয়। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ভিডিওগুলিতে দেখা যাচ্ছে তারা একে অপরকে ঘুষি মারছে এবং লাথি মারছে। স্পিকারের বক্তব্য বিঘ্নিত করতে একজন এমপিকে হর্নও বাজাতে দেখা গেছে। ইন্ডিপেনডেন্টের খবর।
এদিকে, সংসদে লড়াইয়ের পর মালদ্বীপের চীনপন্থী প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জুর বিরুদ্ধে অভিশংসন প্রক্রিয়া শুরু করতে যাচ্ছে দেশটির প্রধান বিরোধী দল মালদ্বীপিয়ান ডেমোক্রেটিক পার্টি (এমডিপি)। সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠ এমডিপিও মুইজ্জুর সরকারকে অভিশংসন করতে সংসদ সদস্যদের স্বাক্ষর সংগ্রহ করতে শুরু করেছে।
সংসদে বিরোধী দল এমডিপি মালদ্বীপের নবনির্বাচিত রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ মুইজ্জুর মন্ত্রিসভা কর্তৃক নিযুক্ত চার নতুন সদস্যের সংসদীয় অনুমোদন স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর পর গত রোববার শুরু হয় তোলপাড়। ক্ষমতাসীন পিপলস ন্যাশনাল কংগ্রেস (পিএনসি) এবং মালদ্বীপ প্রগ্রেসিভ পার্টির (পিপিএম) সদস্যরা এর প্রতিবাদে বিক্ষোভ শুরু করেন। এতে পার্লামেন্টের অধিবেশন বাধাগ্রস্ত হয়।
ভিডিওতে দেখা যায়, আবদুল্লাহ শাহিম আবদুল হাকিম নামে এক এমপি আরেক এমপি আহমেদ ঈসাকে ঘুষি মেরে মাটিতে ফেলে দেন। এরপর দুই সংসদ সদস্যের মধ্যে ধস্তাধস্তিতে আবদুল হাকিম নিচে পড়ে মাথায় আঘাত পান। পরে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
ঘটনার দিন সংবাদ সম্মেলনে এমডিপি ঘটনার পরিস্কার করে বলেন, আব্দুল্লাহ শাহিম আব্দুল হাকিম আত্মপক্ষ সমর্থনের চেষ্টা করেন। এমডিপি সংসদ সদস্য হিসান হুসাইন বলেন, সরকারপন্থী এমপিরা যা করেছেন, এমডিপি এমপিদের আত্মপক্ষ সমর্থন ছাড়া উপায় ছিল না।
আরেক এমপি হাসান জারির এমডিপির একজন এমপির হামলায় আঙুলে আঘাত পান। হট্টগোলের সময় এমপিরা যাতে মাইক্রোফোন হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে না পারেন, সে জন্য এগুলো খুলে ফেলা হয়।
সংসদ সদস্যদের মধ্যে এমন হাতাহাতির ঘটনার পর মন্ত্রীদের অনুমোদনের দাবিতে সংসদের বাইরে বিক্ষোভ করেন ক্ষমতাসীন জোটের সদস্য ও সমর্থকরা। স্পিকার মোহাম্মদ আসলাম ও ডেপুটি স্পিকার আহমেদ সেলিমের বিরুদ্ধেও অনাস্থা প্রস্তাব উত্থাপন করেছে জোটটি।
মালদ্বীপে ক্ষমতাসীন জোট সরকার গঠন করলেও পার্লামেন্টে তাদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই। সেখানে এখনও নিয়ন্ত্রণ রয়েছে সাবেক প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম সোলির দল এমডিপির।