Thursday , November 14 2024
Breaking News
Home / Entertainment / পাবনার রাশেদ হয়ে উঠলেন মিস্টার বিন

পাবনার রাশেদ হয়ে উঠলেন মিস্টার বিন

মিস্টার বিন বহুল আলোচিত এবং জনপ্রিয় একটি চরিত্র। বাচ্চা থেকে বৃদ্ধ প্রায় সবারই খুবই পছন্দের একটা চরিত্র মিস্টার বিন। হাস্য রসিকতায় ভরা এর অনুষ্ঠান দেখে হাসে না এমন লোক খুব কমই আছে। যেন বিনোদনের সেরা একটি মাধ্যম। তবে এই মিস্টার বিনের কি ডুপ্লিকেট কাউকে ভাবা যায়! হ্যাঁ এমন একজনকে পাওয়া গিয়েছে তাও আবার আমাদের এই বাংলাদেশে।

কদিন আগেই দেশের বেসরকারি টেলিভিশনে একটি নাটক প্রচারিত হয়। টয়া ও শাওন অভিনীত ওই নাটকে মিস্টার বিনকে দেখা যায়। অবাক হয়েছিলেন দর্শকরা, প্রশ্ন তৈরি হয়েছিল- মিস্টার বিন কেন দেশীয় নাটকে। ভালো করে খেয়াল করার পর বোঝা যায়, মিস্টার বিন চরিত্রে অভিনয় করেছেন যিনি, তিনি বাংলাদেশি এক তরুণ। হুবহু মিস্টার বিন। তরুণের নাম রাশেদ শিকদার।

পাবনা অ্যাডওয়ার্ড কলেজে পড়ুয়া রাশেদ শিকদার পেশায় ম্যাজিশিয়ান। ২০১৪ সালে এসএসসি পাস করে ঢাকায় চলে আসেন। এখানে-সেখানে ম্যাজিক দেখাতেন। ২০১৭ সালে ম্যাজিক দেখানোর সুযোগ ঘটে দেশের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন চ্যানেল বিটিভিতে৷ এভাবেই চলছিল রাশেদের জীবন। চেহারায় মিস্টার বিনের ছাপ থাকায় বিভিন্ন জায়গায় কথা শুনতে হতো। সেসব কথাকে বরাবরই নেতিবাচকভাবেই নিতেন। কিন্তু এক সহকর্মী এম রহমান যখন বলে বসেন, ‘রাশেদ, তোমার চেহারা অবিকল মিস্টার বিনের মতো। তুমি এটাকে কাজে লাগাতে পারো।’

তখনই চিন্তার সুতা ছেঁড়ে রাশেদের। করোনাকালে যখন দেশের শিল্প-সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক অঙ্গন বিপর্যস্ত, তখনই চিন্তা করতে থাকেন কী করা যায়। সোশ্যাল মিডিয়ায় হাজির হলেন মিস্টার বিন রূপে।

বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মে হাজির হতেন মিস্টার বিন, যিনি ম্যাজিক দেখানোর পাশাপাশি মিস্টার বিনের মতোই অভিব্যক্তি প্রকাশ করেন। করোনাকাল স্তিমিত হওয়ার সময় থেকে ছোটখাটো অনুষ্ঠানে ডাক পড়ে রাশেদের। মিস্টার বিন রূপে হাজির হতেন। টেলিভিশন চ্যানেলেও ডাক পড়ে। এরপর ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ও টেলিভিশন নাটকে। এখন রাশেদকে দেখলেই মানুষজন বিশেষ করে শিশুরা মিস্টার বিন ভেবে ভুল করে থাকে।

রাশেদ জানালেন, ‘শিশুরা টেলিভিশনে মিস্টার বিন দেখে তারা যখন বাস্তবে আমাকে দেখে, কোনোভাবেই বিশ্বাস করতে চায় না যে আমি আসল নই।’

এই বিষয়টিকেই কাজে লাগাতে চান রাশেদ। নিজের অনেক পরিকল্পনা রয়েছে। এখন শুধু সুযোগের অভাব। রাশেদ কালের কণ্ঠকে বলেন, বাচ্চারা যেহেতু মিস্টার বিনকে পছন্দ করে, আর আমাকে দেখলে তাদের প্রিয় মিস্টার বিনই মনে করে, সেহেতু আমি এমন কিছু অনুষ্ঠান করতে চাই যেন শিশুদের মনে নৈতিকতাবোধ ছোট থেকেই গড়ে ওঠে। শিশুদের বিনোদনের সঙ্গে দিতে চাই নৈতিক শিক্ষা। জানি না আমার সেই ইচ্ছা পূরণ হবে কি না।’
মিস্টার বিন হওয়ার পর থেকেই রাশেদ অনেক অম্লমধুর অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হচ্ছেন।

‘কদিন আগে হাতিরঝিলে বেরিয়েছিলাম। লোকজন আমাকে ঘিরে ধরল। সবাই আমার সঙ্গে ছবি তুলতে চায়। আমিও সে সুযোগ দিচ্ছিলাম। একসময় দেখা হলো ভিড় এতটাই হয়ে গেল যে ওই রাস্তায় জ্যাম লেগে গেল। পুলিশ হাজির হয়ে গেল সেখানে৷ জানতে চাইল কী হয়েছে? আমাকে দেখেই তারা বুঝে ফেলল যে ছবি তোলার জন্যই ভিড়। পরে তারা আমাকে ওখান থেকে উদ্ধার করল।’

রাশেদ জানান, এমন অনেক ঘটনাই ঘটছে। তাই শুধু শিশুদেরই নয়। বিনোদনের মাধ্যমে সমাজের বিশৃঙখল অবস্থাগুলোর পরিবর্তন করতে চান। তিনি বলেন, ‘সুস্থ ধারার অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মানুষের ভাবনার পরিবর্তন ঘটাতে চাই। এর জন্য প্রয়োজন পৃষ্ঠপোষক।’

এই মুহূর্তে রাশেদ ব্যস্ত নাটক ও ছোট ছোট সোশ্যাল মিডিয়ার কনটেন্ট নির্মাণে। কালের কণ্ঠকে বললেন, ‘বেশ কয়েকটি নাটকের কাজ করছি। যেখানে আমার চরিত্রকে ব্যবহার করে চিত্রনাট্য রচনা করা হচ্ছে, যদিও আমি মুখ্য চরিত্র নই। এ ছাড়া যারা ইউটিউব, ফেসবুক কনটেন্ট নির্মাণ করেন, তারা আমাকে নিয়ে ছোট ছোট ফিল্ম বানাচ্ছেন।’

সুস্থ ধারার বিনোদন দেওয়াই এখন রাশেদের মুখ্য উদ্দেশ্য। সোশ্যাল মিডিয়াকেন্দ্রিক ছড়িয়ে পড়া অসুস্থ ধারার বিনোদন তাঁকে পীড়া দেয়। কেননা সংক্রামক হয়ে ছড়িয়ে পড়া সেসব বিনোদন শিশুদেরও প্রভাবিত করছে। আরেকটি অবদমিত ইচ্ছার কথা জানালেন রাশেদ, তা হলো প্রকৃত মিস্টার বিন- অর্থাৎ রোয়ান অ্যাটকিনসনের সঙ্গে দেখা করা। বললেন, ‘আমার অত্যন্ত পছন্দের অ্যাটকিনসনের সঙ্গে জীবনে একবার হলেও দেখা করতে চাই।’

আমাদের দেশের বিনের ইচ্ছাটা অনেক সুন্দর। মানুষতো বিনোদনের জগতে শুধুই নিজের শ্রেষ্ঠত্ব খুঁজে, নিজেকে গড়ে তুলতে চাই শ্রেষ্ঠ হিসাবে। কয়জনে ভাবে সমাজের কথা! বিনোদন এর ভিতরেও যে সমাজের সুস্থতা বজায় রাখার দরকার আছে এটা সবাই ভাবে না। তবে এই সুষ্ঠু ধারা বজায় রাখা টাই এখন রাশেদ এর মূল উদ্দেশ্য।
pay by phone best casinos

About Babu

Check Also

গোপনে বিয়ে করলেন তৌহিদ আফ্রিদি, জানা গেল কনের পরিচয়

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঘিরে যখন সারা দেশের মানুষ ছাত্রদের পাশে দাঁড়িয়েছেন, তখন বেশ নিরব ছিলেন …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *