ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র সৈয়দ রাশেদ হাসান চৌধুরী তুরস্কের বারতিন বিশ্ববিদ্যালয়ে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন। মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) তুরস্ক থেকে এক দীর্ঘ ফেসবুক পোস্টে তিনি নিজেই বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
রাশেদের গ্রামের বাড়ি লক্ষ্মীপুর জেলায়। তিনি একাডেমিক স্তরে সর্বোচ্চ (৪ এর মধ্যে ৪ ) সিজিপিএ নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স-মাস্টার্স ডিগ্রি সম্পন্ন করেন। এরপর তিনি তুরস্কের আঙ্কারা বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষক হিসেবে যোগ দেন।
তুরস্কে পিএইচডি ডিগ্রি শেষ করার মাত্র আড়াই মাস পর তুরস্কের বার্টিন বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেন রাশেদ। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের মৌলিক ইসলামিক বিজ্ঞান বিভাগে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে যোগদান করেন।
নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে রাশেদের জীবন। অপমান ও বঞ্চনার শিকার। কিন্তু তিনি থেমে থাকেননি। একমাত্র আল্লাহর উপর ভরসা করেই সে আজ এতদূর পৌঁছেছে।
রাশেদ বলেন, একাডেমিক তিন ধাপেই আমার সর্বোচ্চ সিজিপিএ ছিল। বেশি নম্বর পেয়ে আমি প্রথম ফ্যাকাল্টি হয়েছি। বাংলাদেশ ও তুরস্কের বিশ্বের প্রভাবশালী রাষ্ট্রপতিদের কাছ থেকে স্বর্ণপদক পেয়েছি। আমি বিশ্ববিখ্যাত স্কোপাস (ছ২-ছ৪) এবং বিজ্ঞানের ওয়েবে কয়েক ডজন নিবন্ধ প্রকাশ করেছি।
এত পরিশ্রমের ফলকে আমি পাত্তা দিইনি, উল্টো বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমাকে অপমান ও লাঞ্ছনার শিকার হতে হয়েছে। – রাশেদ
রাশেদ দেশের নিজস্ব বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াতে চেয়েছিলেন। তিনি বলেন, এত পরিশ্রমের ফলকে আমি পাত্তা দিইনি, উল্টো বিভিন্ন মামলায় লাঞ্ছিত ও লাঞ্ছনার শিকার হয়েছি।
দেশে তার নজরে না পড়লেও বিদেশে সঠিক মূল্যায়ন পেয়েছেন। তুরস্কের বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদানের প্রক্রিয়া সম্পর্কে রাশেদ বলেন, তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ফ্যাকাল্টি মেম্বার পদের জন্য তারা ফলাফল, নিবন্ধ, বই, উদ্ধৃতিসহ বিভিন্ন বিষয়ে ১০০ পয়েন্টের পরীক্ষা দেয়।
“যেহেতু আমার অনেক একাডেমিক কাজ আছে, সবকিছু যোগ করলে ৪২৮ পয়েন্ট পর্যন্ত যোগ হয়। তাই, সিনেট বোর্ড, প্রভাষক পদের জন্য মনোনয়ন না করে, সহকারী অধ্যাপক পদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের কাছে চূড়ান্ত সুপারিশ করে। পরবর্তীতে তুরস্কের ইউজিসি আমাকে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে মনোনীত করে।
রাশেদ এই বছর ৩০ জুলাই তুরস্কের আঙ্কারা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ৪ .০০ এর মধ্যে ৪.০০ সিজিপিএ নিয়ে পিএইচডি ডিগ্রি সম্পন্ন করে এবং প্রথম শ্রেণিতে প্রথম নির্বাচিত হয়। এরপর তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে যোগ দেন।
তার আগে, তিনি জুলাই ২০১৯ -এ আঙ্কারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৮ -২০১৯ স্নাতকোত্তর পরীক্ষায় ৪ .০০ এর মধ্যে ৪ .০০ এর সর্বোচ্চ সিজিপিএ এবং ধর্মতত্ত্ব অনুষদে রেকর্ড সংখ্যক নম্বর নিয়ে প্রথম শ্রেণীতে প্রথম হন।
এত সাফল্যের সাথে তিনিই প্রথম বাংলাদেশী যিনি তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগানের কাছ থেকে মোস্ট সাকসেসফুল স্টুডেন্ট অ্যাওয়ার্ড-২০১৯ পেয়েছেন। উপরন্তু, অক্টোবর ২০১৮ সালে, তিনি বাংলাদেশে তার একাডেমিক সাফল্যের জন্য রাষ্ট্রপতি কর্তৃক পুরস্কৃত হন। আবদুল হামিদের কাছ থেকে স্বর্ণপদক গ্রহণ করেন।