বর্তমানে বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে ধর্ম শিক্ষা বিষয়টি বাদ দেয়ার বিষয়ে গুঞ্জন ওঠে, যেটা নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়। তবে বিষয়টি নিয়ে খোলাসা করেছেন বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষা মন্ত্রী দীপু মনি। তারপরও একটি মহল ধর্ম শিক্ষা বিষয়টি পাঠ্যসূচি থেকে বাদ দেওয়ার বিষয় নিয়ে কথা বলছে। এবার এ বিষয়টি নিয়ে খোলাসা করলেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।
তিনি বলেছেন, ধর্মীয় শিক্ষাকে বাদ দেওয়া হচ্ছে, বলা হচ্ছে। গত বছর বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া রোগের পরিস্থিতির কারণে এটি ঘটেছিল। আমাদের পাঠ্যসূচি পড়ুন। ধর্মকে বাদ দেওয়ার প্রশ্নই আসে না। রোববার (৯ অক্টোবর) রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে আঞ্জুমানে রহমানিয়া মইনীয়া মাইজভান্ডারীয়ার আয়োজিত শান্তি মহা সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
রোববার সকালে রাজধানীতে ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উদযাপন উপলক্ষে আঞ্জুমানে রহমানিয়া মইনীয়া মাইজভান্ডারিয়া মিছিল বের করে। সকালে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান থেকে শোভাযাত্রা শুরু হয়। এরপর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শুরু হয় শান্তি সমাবেশ। মাইজভান্ডারিয়া দরবার শরীফের মাওলানা সৈয়দ সাইফুদ্দিন আহমদ আল হাসানীর সভাপতিত্বে শান্তি সভায় দেশ-বিদেশের প্রখ্যাত আলেম, ইসলামী চিন্তাবিদ ও গবেষকগণ বক্তব্য রাখেন।
সমাবেশে বাংলাদেশ ওয়েলফেয়ার পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম বলেন, বাংলাদেশের শিক্ষানীতিতে পাঁচটি বিষয় বাদ দেওয়া হচ্ছে। ক্লাসে পড়ানো হবে, কিন্তু বোর্ডে পরীক্ষা হবে না। যে পাঁচটি বিষয় বাদ দেওয়া হয়েছে তার মধ্যে একটি হচ্ছে ধর্ম শিক্ষা। এদেশের মানুষের প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন, এদেশে ইসলামী শিক্ষাকে বাঁচিয়ে রাখতে বোর্ড পরীক্ষা থেকে ধর্মীয় শিক্ষাকে বাদ দেবেন না।
সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিমের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া রোগের কারণে গত বছর কোনো ক্লাস হয়নি। যার কারণে পরীক্ষা খুব কম হয়েছে। কিন্তু ধর্মীয় শিক্ষা বাদ যায়নি। তিনি (সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম) ভুল বুঝেছেন। আমাদের সিলেবাস পড়ুন। ধর্মকে বাদ দেওয়ার প্রশ্নই আসে না। যারা মিথ্যা বলে, তারাও ইসলামের নামে মিথ্যা বলতে চায়।
বাংলাদেশ ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মিসবাহুর রহমান চৌধুরী বলেছেন, আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী মুসলিম বিশ্বের একমাত্র প্রধানমন্ত্রী যিনি খোলাখুলি বলেছেন যে, তিনি মদীনার সনদের আলোকে তার দেশ পরিচালনা করবেন। কেন এই কথা বললেন? মদিনা সনদ ও বাংলাদেশের সংবিধানের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। আমরাও চাই আমাদের দেশ মদীনা সনদের ভিত্তিতে পরিচালিত হোক।
প্রকৃতপক্ষে, ধর্ম বিষয়টি কোন শ্রেণীর পাঠ্যসূচি থেকে বাদ যাবে না। শুধুমাত্র বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া রোগের পরিস্থিতির কারণে পরীক্ষার সংখ্যা কমিয়ে দেওয়ায় এ বিষয়টি বাদ দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। কিন্তু শ্রেণিকক্ষে পাঠদান থেকে এটা বাদ দেওয়া হবে না কোনভাবে, এমনটাই বলা হয়। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আগের মতোই সকল বিষয়ের পরীক্ষা যেমনটা জানান।