চলতি বছরে প্রতিবারের ন্যায় সরকার থেকে পাঠ্য পুস্তক দেয়া হয়েছে ছাত্রছাত্রীদের কাছে। কিন্তু এবার এই নতুন বই নিয়েই উঠেছে নানা ধরনের আলোচনা সমালোচনা। জানা গেছে নতুন শিক্ষাবর্ষের সপ্তম শ্রেণির বিজ্ঞানের ‘অনুসন্ধানী পাঠ’ বইয়ের একটি অংশ হুবহু নকল করে গুগল থেকে অনুবাদ করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বইটির রচনা ও সম্পাদনার সঙ্গে জড়িত অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও অধ্যাপক হাসিনা খান অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করেছেন।
জাফর ইকবাল এবং হাসিনা খান স্বীকার করেছেন যে বইটির একটি অংশ ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক এডুকেশনাল সাইট থেকে নেওয়া এবং সঠিক অনুবাদে ব্যবহার করা হয়েছে এমন অভিযোগ সত্য।
একটি যৌথ বিবৃতিতে, তারা বলেছে যে ২০২৩ সালে সারা দেশে চালু করা নতুন পাঠ্যক্রম বাস্তবায়নের অংশ হিসাবে, ষষ্ঠ এবং সপ্তম শ্রেণির বিজ্ঞান পাঠ্যপুস্তকগুলি ছাপানো হয়েছে এবং শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। ১৫ জানুয়ারী একটি জাতীয় দৈনিকের একটি অনলাইন মতামত কলাম তাদের নজরে আসে সপ্তম শ্রেণির বিজ্ঞান বই ‘অনুসন্ধানী পাঠ’ সম্পর্কে একটি অভিযোগ।
মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারী) এক যৌথ বিবৃতিতে তারা বলেছে যে ২০২৩ সালে সারাদেশে চালু করা নতুন পাঠ্যক্রম বাস্তবায়নের অংশ হিসাবে ৬ এবং ৭ ম শ্রেণীর বিজ্ঞানের পাঠ্যপুস্তকগুলি ছাপানো হয়েছে এবং শিক্ষার্থীদের কাছে বিতরণ করা হয়েছে। সপ্তম শ্রেণির বিজ্ঞানের ‘অনুসন্ধানী পাঠ’ বইটি নিয়ে তাদের নজরে এসেছে একটি অভিযোগ। তারা বলেন, আমাদের কাছে অভিযোগ সত্য বলে প্রতীয়মান হয়েছে।
বিবৃতিতে তারা বলেন, একই পাঠ্যপুস্তকের সঙ্গে অনেক মানুষ জড়িত, যাদের শ্রম ও নিষ্ঠার ফলে বইটি প্রকাশিত হয়েছে। বিশেষ করে জাতীয় পাঠ্যপুস্তক রচনার ক্ষেত্রে এই সকল লেখকের কাছ থেকে এক ধরনের দায়িত্ব প্রত্যাশিত।
লেখকদের কারো লেখার ব্যাপারে এ ধরনের অভিযোগ সত্য বলে প্রমাণিত হলে এটা আমাদের টিমের জন্য হতাশা ও হৃদয়বিদারক। যদিও সেই অধ্যায়ের আলোচিত অংশটি লেখার জন্য আমরা দায়ী নই, আমরা স্বীকার করি যে দায়িত্বটি সম্পাদক হিসাবে আমাদের উপর। বইটির প্রয়োজনীয় সংশোধন অবশ্যই পরবর্তী সংস্করণে করা হবে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে যে বইটির পরীক্ষামূলক সংস্করণ এ বছর চালু করা হয়েছে এবং আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে যথেষ্ট পরিমার্জন ও সম্পাদনার সুযোগ রয়েছে। তাই উল্লেখিত অভিযোগের বাইরে যে কোনো যুক্তিপূর্ণ মতামতকে গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হবে এবং সে অনুযায়ী পাঠ্যপুস্তকে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন বা পরিমার্জন করা হবে।
অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও অধ্যাপক হাসিনা খান ছাড়াও গ্রন্থ রচনার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন ড. মোহাম্মদ মিজানুর রহমান খান, ডাঃ মোশতাক ইবনে আইয়ুব, রনি বসাক। বইটি সম্পাদনার দায়িত্বে ছিলেন জাফর ইকবাল।
প্রসঙ্গত,এ দিকে এ ধরনের একটি কর্মকান্ড বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য এক প্রকার হুমকি বলে মনে করছেন অনেকে। আর এই সব কর্মকান্ড এখন সমাজে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে শিক্ষা ব্যবস্থাকে।