কিশোরগঞ্জে অবস্থিত ভিন্ন একটি ঐতিহাসিক মসজিদ হিসেবে পরিচিত ‘পাগলা মসজিদ’। প্রতিদিন এই মসজিদে বিপুল পরিমান অর্থ দান করে থাকেন মানুষ। এই দানবাক্স খোলা হয় প্রতি ৩ মাস অন্তর এবং পাওয়া যায় বিপুল পরিমান অর্থ। এবার পাওয়া গেল এ যাবৎ কালের সর্বোচ্চ ৪ কোটি ১৮ লাখ ১৬ হাজার ৭৪৪ টাকা পাওয়া গেছে। যেটা অতীতের সকল রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে।
আজ শনিবার (৭ জানুয়ারি) সকালে পাগলা মসজিদের আটটি দানবাক্স খুলে ২০ বস্তা টাকা পাওয়া গেছে। সারাদিন গণনার পর জানা গেল এই টাকার পরিমাণ।
গণনার তত্ত্বাবধানে থাকা অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এটিএম ফরহাদ চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বাংলাদেশি টাকা ছাড়াও ডলার, পাউন্ড, রিয়াল, দিনার, রিঙ্গিত ও দিনারসহ বিপুল পরিমান বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালঙ্কার পাওয়া গেছে। এ কাজে মাদ্রাসার ১১২ ছাত্র, ব্যাংকের ৫০ স্টাফ, মসজিদ কমিটির ৩৪ জন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ১০ জন সদস্য অংশগ্রহণ করেছেন।’
কিশোরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র ও পাগলা মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক পারভেজ মিয়া বলেন, ‘মসজিদের অনুদান থেকে প্রাপ্ত অর্থ পাগলা মসজিদ এবং এই মসজিদ কমপ্লেক্সের অন্তর্ভুক্ত মাদ্রাসা, এতিমখানা ও গোরাস্তানের ব্যয় নির্বাহে ব্যবহৃত হয়। জেলার বিভিন্ন মসজিদ, মাদ্রাসা, এতিমখানাকে সহায়তা করার পাশাপাশি দরিদ্র ছাত্র ও অভাবীদের মধ্যে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়। এ ছাড়া বিভিন্ন সামাজিক কাজের জন্যও টাকা দেওয়া হয়।
পারভেজ মিয়া বলেন, “সমস্ত টাকা ব্যাংকে জমা হবে। বর্তমানে পাগলা মসজিদ কমপ্লেক্সকে ঘিরে একটি বড় প্রকল্প হাতে নেওয়া হচ্ছে। এটি বাস্তবায়িত হলে মসজিদ কমপ্লেক্সটি আরও সুন্দর হবে।
এর আগে, দান বাক্সগুলি শেষবার খোলা হয়েছিল তিন মাস এক দিন পর গত ১ অক্টোবর, ২০২২-এ । তখন রেকর্ড ৩ কোটি ৮৯ লাখ ৭০ হাজার ৮৮২ টাকা ও বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালঙ্কার পাওয়া যায়। এবার তিন মাস ছয় দিন পর দানবাক্স খোলা হয়েছে।
পাগলা মসজিদে প্রতিদিন মানুষ তাদের মনোবাসনা পুরনের জন্য দান করে থাকে মানুষ। এই মসজিদটি কিশোরগঞ্জ জেলার একটি নাম করা ঐতিহাসিক ধর্মীয় স্থাপনা। যেটাতে রয়েছে সুউচ্চ মিনার এবং তিনটি গম্বুজ। অনেকে এই মসজিদে মানত করে সুফল পেয়ে থাকেন বলে জানা যায়। মানুষ তাদের আশার কথা কাগজে লিখেও এই মসজিদের দান বাক্সে ফেলেন।