অবশেষে, পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) এবং বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারির পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) কেন্দ্রীয় সরকার গঠনে ঐকমত্যে পৌঁছেছে। চুক্তি অনুযায়ী পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী পদে লড়বেন নওয়াজ শরিফের ভাই শেহবাজ শরিফ ও আসিফ আলি জারদারি। মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) পিএমএল-এন ও পিপিপির সমন্বয় কমিটি সরকার গঠন চুক্তি চূড়ান্ত করেছে।
গত ৮ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে কোনো দলই সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক আসন না পাওয়ায় দেশে ঝুলন্ত সংসদ ঘিরে চরম অনিশ্চয়তা তৈরি হয়। দেশটির প্রধান তিনটি রাজনৈতিক দল সরকার গঠনের জন্য জোট গঠনের জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। এর মধ্যে পুরনো দুই জোটের শরিক পিএমএল-এন ও পিপিপি নতুন সরকার গঠনের সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে।
মঙ্গলবার গভীর রাতে দেশটির রাজধানী ইসলামাবাদে এক সংবাদ সম্মেলনে পিপিপি চেয়ারম্যান বিলাওয়াল জারদারি ভুট্টো এই চুক্তির ঘোষণা দেন। সংবাদ সম্মেলনে বিলাওয়ালের পাশে বসেছিলেন শাহবাজ শরিফ। তিনি বলেন, সরকার গঠনের জন্য দুই দলের যথেষ্ট আসন রয়েছে এবং অন্যান্য ছোট দলের সমর্থন রয়েছে।
গত ৮ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান নেতৃত্বাধীন পিটিআই সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা সর্বোচ্চ ৯২টি আসনে জয়ী হলেও ৭৯টি আসন নিয়ে জাতীয় পরিষদের বৃহত্তম দল হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে পিএমএল-এন। আর পিপিপি পেয়েছে ৫৪টি আসন। অন্য আরও চারটি দলকে সঙ্গে নিয়ে ৩৩৬ আসনের জাতীয় পরিষদে সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিশ্চিত করেছে পিএমএল-এন ও পিপিপি।
পাকিস্তানে সরকার গঠন নিয়ে শুরু হওয়া টানাপোড়েন ঘিরে ব্যাপক উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। মন্থর গতির প্রবৃদ্ধি আর রেকর্ড মুদ্রাস্ফীতির পাশাপাশি ক্রমবর্ধমান জঙ্গি হামলার মাঝে অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় ও কঠোর সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য দেশটিতে স্থিতিশীল প্রশাসন দরকার বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
এমনকি বিলাওয়াল ভুট্টোর পিপিপি সরকারের মেয়াদের কোনো পর্যায়ে শাহবাজ শরিফের মন্ত্রিসভায় যোগ না দিলেও দলটি রাষ্ট্রপতিসহ অন্যান্য শীর্ষ সাংবিধানিক পদ পাবে। এ ছাড়া দেশের বৃহত্তম প্রদেশ পাঞ্জাবের মন্ত্রিসভায় যোগ দেবে না দলটি।
• কী পাবে পিপিপি?
প্রেসিডেন্ট পদ, সিনেট চেয়ারম্যান, পাঞ্জাবের গভর্নর, খাইবার পাখতুনখোয়ার গভর্নর, বেলুচিস্তানের মুখ্যমন্ত্রী, জাতীয় পরিষদের ডেপুটি স্পিকার।
অন্যদিকে, কেন্দ্র ও পাঞ্জাবে সরকার গঠনের জন্য পিএমএল-এন পিপিপি-র সমর্থন পাবে। নওয়াজ শরিফের দলও বেলুচিস্তানের মুখ্যমন্ত্রী পদে পিপিপি-র মনোনীত প্রার্থীকে ভোট দেবে।
• পিএমএল-এন কী পাবে?
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী, জাতীয় পরিষদের স্পিকার, সিন্ধু ও বেলুচিস্তানের গভর্নর।
দেশের সংবিধান অনুযায়ী ২৯ ফেব্রুয়ারির মধ্যে জাতীয় পরিষদের অধিবেশন ডাকতে হবে। ওই অধিবেশনেই নতুন প্রধানমন্ত্রীর জন্য ভোটগ্রহণ করা হবে। খবর জিও নিউজের।