পাকিস্তানের সাথে ঘরের মাঠে নির্ধারিত খেলার মধ্যে অনুষ্ঠিত হচ্ছে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ যেটা শেষ হচ্ছে আজ (সোমবার)। গত যে দুটি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে তার ফলাফল বিষয়টি আলোচনায় তেমন না এলেও আলোচনায় এসেছে মিরপুরের শেরে বাংলা স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে পাকিস্তানের পতাকা উড়ানোর বিষয়টি। কয়েকজন পাকিস্তানি নাগরিক সমর্থকদের পাশাপাশি বেশ কিছু বাংলাদেশের নাগরিকও পাকিস্তানি পতাকা হাতে নিয়ে উল্লাস করতে দেখা গেছে। বিভিন্ন গনমাধ্যম এবং সামাজিক মাধ্যমে এই বিষয় নিয়ে গত কয়েকদিন ধরেই তোলপাড় চলছে।
মহান মুক্তিযুদ্ধে গণহত্যা চালানো পাকিস্তানিদের সমর্থনে এমন উল্লাস মেনে নিতে পারেনি দেশের সিংহভাগ মানুষ। আজ খেলা শুরুর আগে মিরপুর স্টেডিয়াম গেটের সামনে কিছু তরুণকে দেখা যায় ব্যানার হাতে দাঁড়িয়ে থাকতে। তারা পাকিস্তানি পতাকা নিয়ে স্টেডিয়ামে আসা বাংলাদেশি নাগরিকদের প্রতিরোধের ঘোষণা দেয়। তারা গ্যালারিতে পাকিস্তানি পতাকা ও জার্সি পরিহিত বাংলাদেশি সমর্থক দেখলে প্রতিবাদ জানাবেন বলেন জানান।
‘পাকিস্তানি দালাল রুখবে তারুণ্য’ ব্যানারে অবস্থান নেওয়া ওই সংগঠনের আহ্বায়ক হামজা রহমান অন্তর বলেন, ‘৩০ লাখ শহীদ ও ২ লক্ষাধিক মা-বোনের আর্তনাদের বিনিময়ে পাওয়া স্বাধীনতা। সেই স্বাধীনতার শত্রু যারা আজও রাষ্ট্রীয়ভাবে ক্ষমা চায়নি, ক্ষতিপূরণ দেয়নি। যারা আজেও ষ’ড়য/ন্ত্র অব্যাহত রেখেছে, তাদের হয়ে এদেশীয় দালাল গোষ্ঠীকে ৭১ এর মতোই প্রতিহ’ত করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ আমরা।’
মিরপুর সরকারি বাংলা কলেজের শিক্ষার্থী মারুফ আহমেদ বলেন, ‘বাংলাদেশ পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলছে, নিজের দেশে, নিজের ঘরের মাঠে। কিন্তু যখন দেখি বাংলাদেশের নাগরিক হয়ে কিছু লোক পাকিস্তানের জার্সি-পতাকা নিয়ে পাকিস্তানকে সমর্থন করে- তখন আর ঘরে বসে থাকা যায়না। কারণ, এই বাংলাদেশের ৩০ লক্ষ মানুষের প্রাণ নিয়েছে পাকিস্তান। লক্ষ মা বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে আমরা এই বাংলাদেশ পেয়েছি। তাই আমরা তরুণ প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ রক্ষায় নব্য রাজাকারদের প্রতিহ’ত করতে মাঠে এসেছি।’
উল্লেখ্য, এই দেশের নাগরিক হয়েও কোন মানসিকতা নিয়ে বাংলাদেশ এবং পাকিস্তানের ম্যাচে পাকিস্তানকে সমর্থন করে সেটা ভাববার বিষয় বলে জানিয়েছেন সচেতন নাগরিকেরা। তাদের মানসিকতা কোন স্থানে রয়েছে সেটা এখন দেখার বিষয়। এই বিষয়টিকে হালকাভাবে নেওয়া উচিৎ হবে না বলেও জানিয়েছেন তারা। শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে পাকিস্তানী পতাকা হাতে নিয়ে উল্লাস করা এক তরুন দেশের একটি অন্যতম সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিকে বলেন, ‘তারা আমাদের ভাই, তাদের জয়ে আনন্দ পাওয়টা স্বাভাবিক। যে কোনো দলকে সমর্থন করা যায়, এটা কোনো বিষয় নয়।’