প্রাইজ বন্ডকে লটারি বন্ডও বলা হয়। কিন্তু এই লটারি সেই লটারি নয়। অর্থাৎ নব্বই দশকে ক্রীড়া উন্নয়ন তহবিলের প্রচারমূলক বিজ্ঞাপন যদি লাইগা যায়- এই ধরনের লটারি নয়। এই প্রাইজ বন্ড ভেঙ্গে যেকোন সময় টাকা ফেরত আনা যাবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের ( Bangladesh Bank ) সমস্ত নগদ অফিস, বাণিজ্যিক ব্যাংক এবং পোস্ট অফিস থেকে ক্রয় অথবা বিক্রয় উভয়ই করা যেতে পারে।
আপনি একটি জাতীয় প্রাইজ বন্ড কিনেছেন? আপনি যদি ক্রয় করেন, দ্রুত ফলাফলের সাথে আপনার বন্ড নম্বরগুলি মিলিয়ে নেন৷ আপনিও হতে পারেন সেই সৌভাগ্যবানদের মধ্যে একজন যারা লটারি জেতা সত্ত্বেও এখনও তাদের পুরস্কার দাবি করেননি। জাতীয় সঞ্চয় বিভাগের সর্বশেষ তথ্য অনুসারে, প্রায় ২৩ শতাংশ বিজয়ী গত সাড়ে তিন বছরে তাদের পুরস্কার দাবি করেননি। মোট ৩৫ কোটি ৬৮ লাখ টাকা এখনো বিতরণ করা হয়নি।
প্রাইজ বন্ড বিজয়ীরা ফলাফল প্রকাশের ২ বছরের মধ্যে পুরস্কারের অর্থ দাবি করতে পারবে। বাংলাদেশ সরকার ১৯৭৪ সালে এই ধরনের প্রাইজ বন্ড চালু করে। তখন প্রতিটি বন্ডের মূল্য ছিল ১০ থেকে ৫০ টাকা, কিন্তু ১৯৯৫ সালে মূল্য সংশোধিত করে ১০০ টাকা করা হয়। বাণিজ্যিক ব্যাংক, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং স্থানীয় পোস্ট অফিসগুলো প্রাইজ বন্ড বিক্রি করে। সঞ্চয় অধিদফতরের কর্মকর্তারা জানান, প্রাইজবন্ড লটারি চালু হওয়ার পর থেকে ভালো কোনো প্রাইজমানি দাবি করা হয়নি। আগে লটারির ফলাফল শুধু সংবাদপত্রে প্রকাশিত হতো। এরপর বাংলাদেশ ব্যাংকের ( Bangladesh Bank ) ওয়েবসাইটে একটি সার্চ অপশন যুক্ত করা হয়। সংবাদপত্র বা ওয়েবসাইটে প্রাইজ বন্ডের ফলাফল খোঁজার ঝামেলা কমাতে সরকার প্রাইজ বন্ড রেজাল্ট ইনকোয়ারি সফটওয়্যার (পিবিআরআইএস ) নামে একটি সফটওয়্যার তৈরি করেছে।
সঞ্চয় অধিদফতরের পরিচালক শাহ আলম ( Shah Alam ) বলেন, বড় অঙ্কের অর্থের জন্য হিসাববিহীন হওয়ার প্রবণতা রয়েছে। কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, যেহেতু রেজাল্টের সঙ্গে ৭ম প্রাইজবন্ড নম্বর মেলানো কঠিন কাজ তাই অনেকেই আগ্রহী নন। কখনও কখনও তারা ঠিকমতো মেলাতে পারে না। আর কখনো রেজাল্ট দেখতে বা প্রাইজবন্ড হারাতে ভুলবেন না, বলেন তিনি। ফলাফল পরীক্ষায় আগ্রহ হারিয়েছেন এমন একজন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা রাশেদুল হাসান। ( Rashedul Hasan. ) তিনি বলেন, কয়েক বছর আগে আমি ১০০ টাকা মূল্যের ৪টি প্রাইজবন্ড কিনেছিলাম। সে সময় পুরস্কারের ঘোষণা শুধু সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়। কিন্তু কবে নাগাদ ঘোষণা করা হবে তা জানা কঠিন ছিল। তিনি বলেন, “আমি নিয়মিত সংবাদপত্র পড়ি না… ফলাফল ঘোষণার পর আমি কয়েকদিনের পুরনো পত্রিকা সহ বেশ কয়েকটি পত্রিকা কিনি।” কিছুদিন পর আমি বিরক্ত হয়ে পত্রিকা দেখা বন্ধ করে দিলাম এবং প্রাইজবন্ড বিক্রি করে দিলাম।
সঞ্চয় বিভাগ টাকা মূল্যের ৩,০৮২টি পুরস্কার ঘোষণা করেছে৷ প্রতি বছর ৩১শে জানুয়ারি, ৩০শে এপ্রিল , ৩১শে জুলাই এবং ৩১শে অক্টোবর ১০ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। প্রথম পুরস্কার ৬ লাখ টাকা এবং দ্বিতীয় পুরস্কার ৩ লাখ ২৫ হাজার টাকা। ১ লাখ টাকার ২টি তৃতীয়, ৫০ হাজার টাকার ২টি চতুর্থ এবং ১০ হাজার টাকার ৪০টি পঞ্চম পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। এক বছরে দেওয়া পুরস্কারের মোট মূল্য দাঁড়ায় ৪৩ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। সঞ্চয় বিভাগের মতে, তারা ২০১৮-১৯ আর্থিক বছরে মাত্র ৩০.২৫ কোটি টাকা বিতরণ করেছে। ২০১৯-২০ অর্থবছরে ২৭ কোটি ১৭ লাখ এবং ২০২০-২১ অর্থবছরে ৪০ কোটি ৪১ লাখ। ডিসেম্বরে শেষ হওয়া ২০২১-২২ আর্থিক বছরের প্রথমার্ধে ১৯ কোটি ৯১ লাখ টাকা বিতরণ করা হয়েছে। সঞ্চয় বিভাগের একজন কর্মকর্তা বলেন, “এখনও ১.৮৬ কোটি টাকার পুরস্কারের টাকা কেউ দাবি করেনি।”
উল্লেখ্য, প্রাইজ বন্ডের ড্র বছরে চারবার অনুষ্ঠিত হয়: ৩১ জানুয়ারি, ৩০ এপ্রিল, ৩১ জুলাই এবং ৩১ অক্টোবর । ঢাকা বিভাগীয় কমিশনারকে নিয়ে গঠিত একটি কমিটি উক্ত ড্র পরিচালনা করেন। তবে কেনার দুই মাস পর প্রাইজবন্ড ড্রয়ের আওতায় আসে। ড্র অনুষ্ঠানের দুই বছর পর্যন্ত পুরস্কারের অর্থ দাবি করা যাবে। এসব দাবি না করলে পুরস্কারের টাকা সরকারি কোষাগারে ফেরত দেওয়া হয়। তবে বর্তমানে অনেক প্রাইজ বন্ড সরবরাহ কারি রয়েছে যাদের ড্রতে নাম থাকা সত্বেও না জানার কারনে উক্ত প্রাপ্য পুরুস্কার গ্রহন করতে সক্ষম হননি। ফলে সেটি সরকারি কোষাগারে জমা রয়েছে বলে সামাজিক গনমাধ্যেম কর্মীদের জানিয়েছেন উক্ত বিষয়ে সংশ্লিষ্টরা।
prizebond-result.com
এইখানে সহজে জানা যায় ফ্রীতে, আপনারা এমন একটা করেন।