চিপসের প্যাকেট খুললেই ভেতরে উপহার হিসেবে মিলছে ১০০ থেকে শুরু করে ১ হাজার টাকার নোট। চকচকে এই নোট দেখলে প্রথমে বোঝার উপায় নেই এটি আসল না নকল। টাকার গায়ে লেখা ‘খেলনা টাকার নমুনা’ দেখলে বোঝা যাবে এটি আসলেই নকল। প্যাকেটে নেই উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান কিংবা মেয়াদোত্তীর্ণের কোনো তারিখ। বিএসটিআইয়ের অনুমোদনহীন নিম্নমানের এসব চিপস এভাবেই টাঙ্গাইলের সখীপুরে ছড়িয়ে পড়েছে।
স্থানীয়রা বলছেন, এটি ছোট বাচ্চাদের খেলনা হলেও অনেকের কাছে এটি প্রতারণার নতুন হাতিয়ার। উপজেলার অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আশপাশের মুদি দোকান ও চায়ের দোকানে এসব চিপ বিক্রি হচ্ছে। ম্যানুফ্যাকচারার কোম্পানি, চিপসের প্যাকেটে মেয়াদ শেষ হওয়ার তারিখ নেই। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি।
বুধবার সকালে উপজেলার প্রতিমা বাঁকী দক্ষিণ চৌরাস্তা বাজারে এসব চিপসহ বিল্লাল হোসেন (২০) নামে এক যুবককে আটক করে স্থানীয়রা। এ সময় বিল্লাল জানান, সিলেট থেকে একদল যুবক সখীপুরে এসে পণ্য বিক্রি করে। সম্প্রতি তারা এসব চিপস ঢাকা থেকে এনে সখীপুরের গ্রামীণ দোকানে পাইকারি বিক্রি করে।
উপজেলার বাসরচালা বাজারে এসব চিপস নেওয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক আনোয়ার হোসেন বলেন, কিছু অসাধু ব্যক্তি শিশুদের প্রলোভন দেখিয়ে নিম্নমানের চিপস বিক্রির অভিনব পন্থা অবলম্বন করছে। মূলত বিএসটিআই অনুমোদন ছাড়াই নিম্নমানের খাদ্যসামগ্রী বিক্রি করছে তারা। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি সম্বলিত ১০০ , ২০০, ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোটের নমুনা একটি সাদা মোড়কে পাঁচ টাকার চিপসের প্যাকেট কিনে পাওয়া যাচ্ছে। এই খেলনার টাকার লোভে শিশুরা পরিবার থেকে টাকা দিয়ে নিম্নমানের এসব চিপস কিনে খাচ্ছে।
হাতিয়া ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক মোজাম্মেল হক বলেন, খেলনার নোটের লোভে শিশুরা বারবার দোকানে চিপ কিনতে যাচ্ছে। এই নিম্নমানের চিপগুলিও শিশুদের স্বাস্থ্যের ঝুঁকি তৈরি করে। এ ছাড়া এ ধরনের টাকা নিয়ে প্রবীণদের বিভ্রান্ত করার আশঙ্কাও রয়েছে। এতে বৃদ্ধরা অর্থের পার্থক্য না বুঝে প্রতারিত হবেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা বাজার মনিটরিং কমিটির সদস্য সচিব ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মঞ্জুরুল মোর্শেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, খেলনা নোটের আকার-আকৃতি যদি আসল নোটের মতো হয় তবে তা অবশ্যই চিন্তার বিষয়। এ বিষয়ে তদন্তে প্রয়োজনে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে।