গতকাল রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে বিএনপির নেতাকর্মী এবং পুলিশের মাঝে সংঘ”র্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘ”র্ষে একজন প্রয়াত হয়েছেন বলে জানা গেছে। বিএনপির সাথে পুলিশের এই সংঘ”র্ষের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতিবাদ মিছিল বের করে দলটির নেতাকর্মীরা। নয়াপল্টনে বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে বেশ কিছু সংখ্যক নেতাকর্মীদের আটক করে নিয়ে যায় পুলিশ, এমনটাই জানা গেছে। ঘটনাস্থল থেকে বিএনপি নেতাকর্মীদের তুলে নিয়ে যায় পুলিশ এবং তাদের তুলে নিতে এরপর সেখানে একের পর এক প্রিজন ভ্যান আসে।
বুধবার বিকেল ৪টার পর থেকে কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে বিএনপির নেতাকর্মীদের গ্রেফতার শুরু করে পুলিশ।
এদিকে, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি আবদুল কাদের জুয়েলসহ অনেক নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
পল্টন থানায় আসামিদের রাখার জায়গা না থাকায় আটকদের শাহবাগসহ আশপাশের থানায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে।
উল্লেখ্য, বুধবার বিকেল ৩টার দিকে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সড়ক আটকিয়ে দলটির নেতাকর্মীরা জড়ো হলে পুলিশ তাদের সরিয়ে দিতে গেলে দুই পক্ষের মধ্যে ব্যাপক সং”ঘর্ষ হয়। . সকাল থেকেই নয়াপল্টন কার্যালয়ের সামনে জড়ো হতে থাকেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। একপর্যায়ে সমাবেশ বড় হয়ে রাস্তার একপাশ অবরোধ করে। এ অবস্থায় পুলিশ তাদের সরিয়ে দিতে গেলে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। সংঘ”র্ষের একপর্যায়ে পুলিশ টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মতিঝিল জোনের ডিসি হায়াতুল ইসলাম খান গণমাধ্যমকে বলেন, সমাবেশস্থল নিয়ে আলোচনা চলাকালে সং”/ঘর্ষ শুরু হয়। আজ সকাল থেকেই পল্টনে জড়ো হতে থাকেন বিএনপি নেতারা। এক পর্যায়ে পুরো রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। আমরা বারবার তাদের চলে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করছি। কিন্তু তারা আমাদের কথা শোনেনি। এক পর্যায়ে তাদের সরিয়ে দিতে গেলে তারা পুলিশের ওপর হা”মলা চালায়। আমাদের কয়েকজন সদস্য আহত হয়েছেন। এ সময় কয়েকজনকে আটক করা হয়।
১০ ডিসেম্বর বিএনপির বিভাগীয় সভাকে ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে উঠছে পল্টন এলাকা। গতকাল (মঙ্গলবার) সন্ধ্যায় নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন বিএনপির শত শত নেতাকর্মী।
বিএনপি চায় তারা নয়াপল্টনে সমাবেশ করতে। তবে পুলিশ বলছে, রাস্তায় কোনো সমাবেশ বা কোনো জমায়েত করা যাবে না। রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপিকে সমাবেশের অনুমতি দিয়েছে পুলিশ। তবে বিএনপি সেখানে সমাবেশ করবে না বলে অনড়। পরে আরামবাগে আইডিয়াল স্কুলের সামনের সড়কে বিএনপি সমাবেশের অনুমতি চাইলে পুলিশ তাতে সাড়া দেয়নি।
পরবর্তীতে পুলিশের পক্ষ থেকে দুটি স্থান প্রস্তাব করে, যার একটি হলো টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা মাঠ এবং অপরটি হলো পূর্বাচলের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা মাঠ। পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বিএনপি চাইলে এই দুটি স্থানে সমাবেশ করতে পারে, তাতে পুলিশের কোন আপত্তি নেই। এদিকে বিএনপির পক্ষ থেকে কোন স্থানে সমাবেশ হবে, সে বিষয়ে এখনও কোন নির্ধারিত স্থানের কথা জানায়নি। এদিকে আগামী ১০ ডিসেম্বর সমাবেশ হবে এমনটাই জানিয়েছেন বিএনপি’র নেতারা।