Wednesday , December 25 2024
Breaking News
Home / Education / পরীক্ষায় পাস নম্বর কেন ৩৩ হলো

পরীক্ষায় পাস নম্বর কেন ৩৩ হলো

স্কুল-কলেজ পরীক্ষায় ১০০ নম্বরের মধ্যে ৩৩ নম্বর পেতেই হয়। নয়তো কপালে জোটে ফেলের তকমা। স্কুল জীবনে পাস বা ফেল, কখনও ভেবে দেখেছেন কেন পরীক্ষায় পাস করার জন্য ৩৩ শতাংশ নম্বর পেতে হবে? কেন বেশি বা কম নম্বর নয়?

মজার বিষয় হল, ৩৩ শতাংশ নম্বর পাস মার্ক হিসেবে শুধু বাংলাদেশেই নয়, ভারত ও পাকিস্তানেও স্বীকৃত যেখানে পাস করার জন্য ছাত্রদের একই নম্বর পেতে হয়। এতক্ষণে, কেউ কেউ হয়তো ধরে নিয়েছেন যে উপমহাদেশে পাস মার্কস ৩৩ মূলত ব্রিটিশ ঔপনিবেশিকতার উত্তরাধিকার।

১৭৫৭ সালে নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে পরাজিত করার পর ব্রিটিশরা উপমহাদেশের নিয়ন্ত্রণ নেয়। এর ১০০ বছর পর ব্রিটিশ ভারতের জনগণ স্বাধীনতা ফিরে পেতে প্রথমবারের মতো সফল আন্দোলন করে ১৮৫৭ সালে, যা সিপাহি বিদ্রোহ নামে পরিচিত। ১৮৫৮ সালে উপমহাদেশে প্রথমবারের মতো মেট্রিকুলেশন পরীক্ষা চালু হয়। কিন্তু পাস নম্বর কত হবে তা নির্ধারণ নিয়ে বোর্ড কর্তৃপক্ষ দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়ে যায় এবং ব্রিটেনে কনসালটেশনের জন্য চিঠি লেখেন।

তখন ব্রিটেনে স্থানীয় শিক্ষার্থীদের পাস করতে ৬৫ শতাংশ নম্বর পেতে হতো। ‘The people of subcontinent are half as intellectual and efficient as compared to the British’ অর্থাৎ বুদ্ধি ও দক্ষতায় উপমহাদেশের মানুষকে ইংরেজদের তুলনায় অর্ধেক মনে করা হতো।

একই ক্রমানুসারে ম্যাট্রিকুলেশনের পাস মার্ক ৩২.৫ হিসাবে ৬৫ এর অর্ধেক হিসাবে নির্ধারিত হয়। ১৮৫৮ থেকে ১৮৬১ সাল পর্যন্ত পাস নম্বর ছিল ৩২.৫। ১৮৬২ সালে গণনার সুবিধার জন্য এটি ৩৩-এ উন্নীত করা হয়। তারপর থেকে এই ৩৩ নম্বরটি পাসমার্ক হিসাবে বিবেচিত হয়। কিন্তু অনেক সময় ৩২ নম্বর পেলেও পাস হয়ে যায়।

ভারত, পাকিস্তান এবং বাংলাদেশ সম্পূর্ণরূপে ব্রিটিশদের কাছ থেকে এই মানদণ্ড নকল করেছে। ১৬০ বছর পেরিয়ে গেলেও শিক্ষাব্যবস্থায় ঔপনিবেশিক প্রভুদের নিয়ম অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করা হয়। বলা বাহুল্য, কিছু কিছু ক্ষেত্রে আমাদের মস্তিষ্ক এখনও উপনিবেশিত!

About bisso Jit

Check Also

১২ বছরে যত পরীক্ষা হয়েছে, সেগুলো নিয়ে কী হবে বুঝতে পারছি না: পিএসসি চেয়ারম্যান

বাংলাদেশ পাবলিক ওয়ার্ক কমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যান মো. সোহরাব হোসেন বলেন, ১২ বছর ধরে অনেক পরীক্ষা …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *