Thursday , November 14 2024
Breaking News
Home / Countrywide / পরীক্ষার আগে প্রশ্ন পাঠিয়ে নিজের ছাত্রীকে প্রধান শিক্ষকের খারাপ কাজের প্রস্তাব

পরীক্ষার আগে প্রশ্ন পাঠিয়ে নিজের ছাত্রীকে প্রধান শিক্ষকের খারাপ কাজের প্রস্তাব

দেশের বিভিন্ন বিদ্যালযে এসএসসি’র নির্বাচনী পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আর এই পরীক্ষা নিয়ে সুহেল মিয়া নামের এক প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীকে খারাপ কাজ করার প্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। জানা গেছে, ওই প্রধান শিক্ষক পরীক্ষার একদিন আগে তার এক ছাত্রীকে গণিত পরীক্ষার প্রশ্ন মোবাইলের মাধ্যমে পাঠিয়ে তাকে কুপ্রস্তাব দিয়েছেন। এ ঘটনার পর প্রধান শিক্ষকের শাস্তির দাবি ওঠে। গতকাল রবিবার দুপুর ১২টায় বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

ওই শিক্ষক নেত্রকোনার মদন উপজেলার মাঘান ইউনিয়নের চৌধুরী তালে হোসেন মিছিলজান একাডেমির প্রধান শিক্ষক হিসেবে কর্মরত।

স্থানীয় লোকজন ও ওই ছাত্রীর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, নেত্রকোনার মদন উপজেলার চৌধুরী তালে হোসেন মিছিলজান একাডেমিতে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের নির্বাচনী পরীক্ষা চলছে। রবিবার দুপুর ২টায় স্কুলে গণিত সৃজনশীল পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। ওই পরীক্ষার প্রশ্নপত্র শুক্রবার রাতে এক শিক্ষার্থীর কাছে পাঠিয়ে দেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুহেল মিয়া।

পরে প্রধান শিক্ষক তার ইমো নম্বর দিয়ে ছাত্রীকে আপত্তিকর প্রস্তাব দেন। প্রধান শিক্ষকের আচরণের কথা ছাত্রী তার পরিবারকে জানালে বিষয়টি সবার নজরে আসে। এ ঘটনায় দুপুর ১২টার দিকে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রধান শিক্ষকের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে।

ঘটনাটি এলাকার মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে অনেকেই রোববার প্রশ্নপত্রটি সংগ্রহ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করেন। বিষয়টি ভা’ইরাল হলে অনেকেই প্রধান শিক্ষকের শাস্তি দাবি করেন।

ওই ছাত্রীর বড় ভাই দেশের একটি সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, শুক্রবার রাতে সুহেল স্যার আমার বোনকে ফোন করে ইমোতে ফোন করতে বলেন। কথা বলার পর গণিত পরীক্ষার প্রশ্ন পাঠান imo নম্বরে। পরীক্ষার প্রশ্নের বিনিময়ে বোনের সাথে অনৈতিক কাজের প্রস্তাব দিয়েছে। রোববার স্কুলে প্রধান শিক্ষকের কক্ষে আলাদা সময় না দিলে পরীক্ষার খাতায় নম্বর দেবেন না বলে জানান তিনি। আমার বোন ভয় পেয়েছিলেন এবং এটি সম্পর্কে আমাদের জানান। আমরা কখনো ভাবিনি যে একজন শিক্ষক এমন আচরণ করবেন। আমরা এই শিক্ষকের বিচার চাই।

জয়-বাংলা গ্রামের এক ছাত্রের অভিভাবক জামাল পাশা জানান, এর আগেও বেশ কয়েকজন ছাত্রীর সঙ্গে তিনি এমন আচরণ করেছেন। ফলে অনেক শিক্ষার্থী এই বিদ্যালয় ছেড়ে অন্য বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়। তারা এই শিক্ষকের বিচার দাবি করেন।

জানতে চাইলে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক সুহেল মিয়া বলেন, আমার আইএমও নম্বর থেকে কে বা কারা শিক্ষার্থীকে প্রশ্নপত্র পাঠিয়েছে তা আমি জানি না। প্রেম নিবেদন ও অনৈতিক প্রস্তাবের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি সমাধানের জন্য এলাকার লোকজনের সঙ্গে কথা বলছেন।

বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি জিএম শামসুল আলম চৌধুরী কায়কোবাদ বলেন, বিষয়টি শুনেছি। এ নিয়ে খবর করার দরকার নেই। মদন শহীদ মেমোরিয়াল পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ ও মদন শহীদ মেমোরিয়াল পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি আক্কাস উদ্দিন বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।

উপজেলা একাডেমির তত্ত্বাবধায়ক জ্যোৎস্না বেগম জানান, প্রশ্নপত্র ফাঁস হলে পরীক্ষা বাতিল করা হবে। শিক্ষার্থীকে অনৈতিক প্রস্তাব দেওয়ার বিষয়ে ওই ছাত্রী বা তার পরিবারের কাছ থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তানজিনা শাহরীন যিনি উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা (ইউএনও) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন, তিনি এ ঘটনার বিষয়ে বলেন, আমি ঘটনাটি শুনতে পেরেছি। এটা খুব খারাপ একটি বিষয়। ওই ভু”ক্তভোগী ছাত্রীর পরিবারের পক্ষ থেকে যদি কোনো লিখিত অভিযোগ জানানো হয়, তাহলে আমরা অবিলম্বে ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নিবো। একজন শিক্ষক হিসেবে এ ধরনের জঘ”ন্য ও অনৈতিক প্রস্তাব দিয়েছে এটা কোনভাবেই কোন শিক্ষকের কাছ থেকে কাম্য নয়। তারপর তিনি নিজেই প্রশ্নপত্র ফাঁস করে বড় ধরনের অপরাধ করেছেন।

 

About bisso Jit

Check Also

উপদেষ্টা পরিষদেই বৈষম্য

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে আঞ্চলিক বৈষম্যের অভিযোগ উঠেছে। ২৪ সদস্যের এই পরিষদে ১৩ জনই চট্টগ্রাম …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *