ভারতের মেঘালয় থেকে নেমে আসা প্রবল পাহাড়ি ঢলের কারণে শেরপুরের তিনটি উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে, যেখানে এখন পর্যন্ত ৩ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
ঢলের পানি ভাটির দিকে নেমে আসায় নালিতাবাড়ী, ঝিনাইগাতী, এবং শ্রীবরদী উপজেলার নতুন নতুন এলাকাগুলো প্লাবিত হয়েছে। একইসঙ্গে নকলা উপজেলার নিম্নাঞ্চলেও পানি প্রবেশ করেছে। এ পর্যন্ত ২০টি ইউনিয়নের অন্তত ১২২টি গ্রাম পানির নিচে রয়েছে, যেখানে প্রায় ৬০ হাজার মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে।
নালিতাবাড়ীতে আশ্রয়ের খোঁজে যাওয়ার সময় এক নারীসহ তিনজনের মৃত্যু হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদ রানা। স্থানীয় প্রশাসনের পাশাপাশি ফায়ার সার্ভিস ও স্বেচ্ছাসেবীদের সঙ্গে সেনাবাহিনীর একটি দল উদ্ধার কার্যক্রমে নেমেছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, নালিতাবাড়ী ও ঝিনাইগাতী উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতি অত্যন্ত ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। পাহাড়ি ঢলের তোড়ে বহু ঘরবাড়ি ধসে পড়েছে, ধান ও সবজির ক্ষেত তলিয়ে গেছে, এবং পুকুরের মাছসহ গৃহপালিত পশু-পাখি ভেসে গেছে। এতে কৃষকরা ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। এছাড়া, ঢলের পানিতে রাস্তাঘাট ডুবে যাওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে।
শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে সেনাবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিস উদ্ধার কার্যক্রম শুরু করেছে। ঝুঁকিতে থাকা অন্তত ১,০০০ পরিবারকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। ঝিনাইগাতীর দীঘিরপাড় গ্রামে শুক্রবার রাতে তিন মাস বয়সী এক শিশুকে একটি রেসকিউ টিম ঘরের সিলিং থেকে উদ্ধার করেছে।
উপজেলা প্রশাসন সকল স্কুলকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা করেছে এবং বন্যাকবলিতদের মধ্যে বিশুদ্ধ পানি ও শুকনো খাবার বিতরণ করছে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রতিটি ইউনিয়নে পৃথক টিম গঠন করা হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, নালিতাবাড়ী ও ঝিনাইগাতীর বেশ কয়েকটি স্থানে পাহাড়ি ঢলের কারণে নদীর পাড় ভেঙে গেছে। ভাঙন ঠেকাতে জরুরি ভিত্তিতে কাজ চলছে।