চট্টগ্রাম জেলার পটিয়া উপজেলার একটি এলাকায় গত রবিবার দুপুরের দিকে একটি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে যেখানে এক যুবক প্রাণ হারান। কিণ্তু ঐ যুবকের শেষকৃত্য সম্পন্ন নিয়ে বিপত্তি দেখা দিয়েছে। প্রকৃতপক্ষে তার শেষকৃত্য হিন্দু না মুসলিম রীতিতে সম্পন্ন হবে সে বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে। ঐ যুবকের পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, তিনি হিন্দু, কিন্তু বন্ধুরা বলছেন ভিন্ন কথা তারা দাবি করছেন যে, সে একজন মুসলিম।
বন্ধুদের মতে, তিনি একটি হিন্দু পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন কিন্তু কয়েক বছর আগে আইনিভাবে মুসলিম ধর্ম গ্রহণ করে হন এবং তার নাম রতন থেকে আহমদ নামে পরিবর্তন করেন।
দুর্ঘটনায় যুবকের প্রয়ানের পর দুই পক্ষই ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী অনুষ্ঠান সম্পন্ন করতে চায়। কিন্তু ধর্মীয় পরিচয় শনাক্তে জটিলতার কারণে শেষ পর্যন্ত বিষয়টি আদালতে যাচ্ছে।
জানা গেছে, রোববার (২৯ জানুয়ারি) বিকেলে চট্টগ্রাম পটিয়া বাদামতল এলাকায় দুর্ঘটনায় প্রয়াত যুবকের দেহ দাবি করছেন দুই সম্প্রদায়ের স্বজন ও ঘনিষ্ঠজনরা।
প্রয়াত ঐ যুবকের খালা, মামাত বোন বিপা দাস ও মামাত ভাই ওসিম দাস জানান, রতন দাস হিন্দু পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন এবং হিন্দু ধর্মের সকল আচার-অনুষ্ঠান পালন করেন। আমরা আমাদের নিজস্ব উপায়ে তার শেষকৃত্য করব। সে স্বাবলম্বী না হওয়ায় এখনও বিয়ে করেননি। মায়ের সঙ্গে শহরের আগ্রাবাদ এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন। একটি মোবাইল কোম্পানিতে চাকরি করতেন। কাজ সেরে পটিয়া থেকে ফেরার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় তার প্রয়ান ঘটে।
অপরদিকে প্রয়াত যুবকের নাম আহমেদ দাবি করে তার বন্ধু বন্ধু আব্দুল করিম, রুবেল দাশ গুপ্ত, শাহিন, মো. বাদশাসহ সহকর্মী ও সহপাঠীরা জানান, প্রয়াত আহমেদ মুসলমান ছিলেন। প্রায় তিন বছর আগে তিনি আদালতের মাধ্যমে আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে হিন্দু সম্প্রদায় থেকে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। তিনি ইসলামের বিধান মেনে চলতেন। কিন্তু মায়ের একমাত্র সন্তান হওয়ায় তিনি কখনোই মাকে ছেড়ে যাননি। তিনি তার মাকে খুব ভালোবাসতেন। মায়ের সাথে থাকতেন। তার মা তার মুসলমান হওয়ার কথা জানতেন।
স্নেহাংশু বিকাশ যিনি পটিয়া হাইওয়ে থানার ওসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি এই ঘটনার বিষয় জানান, যুবক সড়ক দূর্ঘটনায় প্রয়াত হওয়ার পর এ বিষয়ে একটি মামলা দায়ের হয়েছে। তবে ঐ যুবক মুসলিম না হিন্দু সেটা নিয়ে যে সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে সেটা সমাধান আদালত করবে। আমরা এখন আদালতের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি।