শিক্ষা জাতির মেরুদন্ড আর সেই শিক্ষাদানের একমাত্র কারিগর হচ্ছে একজন শিক্ষক। ছাত্র-ছাত্রীদের নৈতিকতা শিক্ষা দিয়ে নিজেরাই যদি অনৈতিক কাজ করে সেটা সমাজের সকল শ্রেনির মানুষের কাছে নিন্দনীয়। সম্প্রতি এক শিক্ষক এক ডাক্তারের সাথে অনৈতিক কাজ করেন। তার একটি ভিডিও সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তুমুল আকারের ভাইরাল হয়েছে।
নাটোরে আলোচিত কলেজ শিক্ষক ও চিকিৎসক ডা. আমিনুল ইসলাম লিপনের অন্তরঙ্গ ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর ওই শিক্ষককে ৭ দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। নাটোর সিটি কলেজের সভাপতি ও অধ্যক্ষের যৌথ স্বাক্ষরিত নোটিশটি প্রথমে কলেজের পিয়নের মাধ্যমে পাঠানো হলেও তিনি তা না পাওয়ায় ডাকযোগে পাঠানো হয়। গতকাল সকালে কলেজের একজন ল্যাব সহকারী ও অফিস সহকারী সরাসরি শিক্ষকের বাসায় নোটিশ নেন।
এ সময় তারা ঘরে ধাক্কা দিলে দরজা না খুলে ভেতর থেকে তাদের পরিচয় জানতে চান। পরিচয় হওয়ার পরও তিনি দরজা খোলেননি। খেয়ালও করেননি। পরে তারা কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেন। এরপর নোটিশটি ডাকযোগে এবং শিক্ষকের ব্যক্তিগত ই-মেইলে পাঠানো হয়। কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি অ্যাডভোকেট ইশতিয়াক আহমেদ দোলার ও অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেন খান স্বাক্ষরিত কারণ দর্শানোর নোটিশে বলা হয়েছে, কলেজের গভর্নিং বডির সভায় আপনার চাকরির নিয়ম লঙ্ঘন ও পেশাগত অসদাচরণ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ১৩ আগস্ট। পেনড্রাইভে ডাক্তার আমিনুল ইসলাম লিপনের সঙ্গে আপনার ৪০ মিনিটের পর্নো ভিডিও ও ছবিসহ পাঠানো দুটি চার্জশিট আপনার বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা প্রমাণ করে।
এ ছাড়া ওই চিকিৎসক আপনার সঙ্গে অনৈতিক যৌ/ন আচরণে লিপ্ত হওয়ার খবর গত ১১ আগস্ট দৈনিক মানবজমিনের প্রথম পাতায় বিভিন্ন স্থানীয় ও জাতীয় পত্রিকা, টিভি ও অনলাইন নিউজ পোর্টালে প্রকাশিত হয়।
এসব ঘটনায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সুনাম মারাত্মকভাবে ক্ষুন্ন হয়েছে। কলেজের শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও কর্মচারীরা বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েছেন। একজন দায়িত্বশীল কলেজ শিক্ষক হিসাবে, আপনার উল্লিখিত কার্যকলাপগুলি পেশাদার অসদাচরণ এবং ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অ্যাফিলিয়েটেড প্রাইভেট টিচার্স কন্ডিশন অফ সার্ভিস রেগুলেশনস (সংশোধিত) ২০১৯ এর ধারা ১৭ এ অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ। আপনাকে নিয়ম অনুযায়ী অভিযুক্ত করা হয়েছে। আপনাকে এই নোটিশ প্রাপ্তির ৭ (সাত) কার্যদিবসের মধ্যে নিম্নস্বাক্ষরকারীর কাছে লিখিতভাবে আপনার উত্তর জমা দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে যে কেন বেসরকারী শিক্ষক প্রবিধানের ধারা ১৭ A অনুযায়ী আপনার বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। সংশোধনী) ২০১৯। এ বিষয়ে জানতে শিক্ষিকা নাজমুন নাহার সাথীর মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি। এদিকে ওই কলেজের কয়েকজন শিক্ষক জানান, ওই শিক্ষকের সঙ্গে একই স্টাফ রুমে বসতে রাজি নন কলেজের শিক্ষকরা। এ ছাড়া কয়েকজন শিক্ষক তাদের সঙ্গী ছুটি না নিয়ে কলেজে যাওয়া থেকে বিরত থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। অন্যদিকে কলেজ শিক্ষকের অসংযত যৌ/ ন আচরণের বিচার দাবি করে কলেজের অধ্যক্ষ ও কলেজ গভর্নিং বডির সভাপতির কাছে লিখিত আবেদনও করেছেন কলেজের শিক্ষার্থীরা।
ওই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। একের পর এক তাকে নিয়ে বৈঠকের জন্য বার্তা পাঠান বিপরীত দিক থেকে কোনো সাড়া পায়নি স্কুল কর্তৃপক্ষ। তবে তারা জানিয়েছে সাত দিনের মধ্যে যদি কারণ দর্শাতে না পারে সে ক্ষেত্রে তার বিরুদ্ধে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।