কিছুদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও গণমাধ্যমে পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে নিয়ে শুরু হয়েছে সমালোচনার ঝড়। একেরপর এক বিতর্কে মুখে পড়ছেন তিনি। বাংলাদেশের মানুষ বেহেশতে আছেন এবং বাংলাদেশের বর্তমান সরকার শেখ হাসিনাকে টিকিয়ে রাখতে ভারতের কাছে নিবেদন এসকল বিষয় নিয়েই মানুষের সমালোচনার মুখে পড়েছেন তিনি। এ বিষয় নিয়ে সাম্প্রতিক বিরোধী দলের নেতাদের বক্তব্য বেশ আলোচনায় আসে।
সরকার পুলিশকে প্রশ্রয় দিচ্ছে, ভারতে পাণ্ডুলিপি করছে এবং ক্ষমতায় থাকার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রর হাত পা ধরছে। দেশ ও দেশের সার্বভৌমত্ববিরোধী এসব কর্মকাণ্ডের জন্য পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন ও বর্তমান সরকারকে ক্ষমতা থেকে অপসারণ করতে হবে।
রোববার বিকেলে রাজধানীর পুরানা পল্টন মোড়ে এক পথসভায় গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা এসব কথা বলেন।
জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি প্রত্যাহার এবং পণ্যের মূল্য হ্রাসের লক্ষ্যে, মঞ্চ গণতন্ত্র আজ ২৭শে আগস্ট বিক্ষোভ ও মিছিলের কর্মসূচিকে সামনে রেখে গণবিজ্ঞপ্তি, লিফলেট বিতরণ ও সড়ক সমাবেশের আয়োজন করেছে।
নাগরিক ঐক্যের চেয়ারম্যান মাহমুদুর রহমান মান্না আজকের অনুষ্ঠানে বলেন, সরকার এখন পুলিশের প্রশংসা করছে, তারা ভারতের প্রশংসা করছে এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে হাত পা ধরেছে। সরকার অবিলম্বে সরে না গেলে, আরও সময় পেলে আবারও ক্ষমতা দখলের ষড়যন্ত্র ও ষড়যন্ত্রের জাল ফেলবে। তিনি সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে আরও ঐক্য ও আন্দোলনের আহ্বান জানান।
মাহমুদুর রহমান আরও বলেন, ‘আজ সকালে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ষড়যন্ত্র হচ্ছে। আমরা ইতিমধ্যে বেশ কয়েকবার বলেছি, ষড়যন্ত্র কোন ব্যাপার না। আমরা আপনার পদত্যাগ চাই। আমরা আপনাকে ক্ষমতায় দেখতে চাই না। আমরা বিশ্বাস করি তিনি ক্ষমতায় থাকার যোগ্য নন। তিনি যতদিন ক্ষমতায় থাকবেন, দেশ ততই দুর্ভাগা হবে।
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) চেয়ারম্যান আ স ম আবদুর রব উল্লেখ করেছেন, যেকোনো দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বা পররাষ্ট্র সচিবকে বিদেশ সফরের আগে সরকার প্রধানের কাছ থেকে তথ্য গ্রহণ করতে হবে। তিনি বলেন, আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দেশকে বিদেশের কাছে বিক্রি করতে চান। আপনি কার কাছ থেকে এই রিপোর্ট নিয়েছেন? এটি 24 ঘন্টার বেশি মন্ত্রিসভায় রাখার বিষয়ে নয়। তিনি এখনও পদত্যাগ করেননি। এমনকি তাকে দল থেকে বহিস্কার করা হয়নি। মানে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য সরকারের বক্তব্য।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক প্রশ্ন করেন, আবদুল মোমেনের মতো একজন ‘দায়িত্বহীন, দেশবিরোধী ও বিশ্বাসঘাতক’ কীভাবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করতে পারেন? তিনি বলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী একবার যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে ভারতকে বলেছিলেন, শেখ হাসিনার সরকারকে সমর্থন দিতে বাংলাদেশে হস্তক্ষেপ করতে হবে। তিনি চ্যান্সেলর ও বর্তমান সরকারের পদত্যাগ দাবি করেন।
অনুষ্ঠানে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকিসহ গণতান্ত্রিক অঙ্গনের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। তারা লিফলেট বিতরণ করে পুরানা পল্টন মোড় থেকে শান্তিনগরে মিছিল করে।
বাংলাদেশ সরকার ভারতের নিয়ন্ত্রণে চলে এমনই মন্তব্য করছেন বিরোধী দলের নেতারা। পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দেওয়া বক্তব্যের পর সারা দেশের মানুষের কাছে এ বিষয়টি পুরো পুরি স্পষ্ট হলে হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিরোধীদলের নেতাদের। তারা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবি নিয়ে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় হরতাল পালন করছেন।