সম্প্রতি একের পর এক বেফাঁস বক্তব্য দিয়ে দেশের প্রায় প্রতিটি সংবাদ মাধ্যমের শিরোনামে রয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আবদুল মোমেন। আর সেই ধারাবাহিকতার মধ্যদিয়ে তার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পদে থাকা নিয়ে রীতিমতো চলছে বেশ শোরগোল। তাহলে কি মন্ত্রিসভায় সহসাই কোনো রদবদল হবে?
নাকি নতুন মন্ত্রীদের অন্তর্ভুক্তিও আসন্ন? জোর জল্পনা, আবারও।
আবদুল মোমেন কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী থাকছেন? নাকি ৫ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের পর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নতুন মন্ত্রী দেখা যাবে? চর্চাটা আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী মহল থেকে শুরু করে নানা পর্যায়ে শুরু হয়েছে।
আগামী জাতীয় নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসছে আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতা আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদের মতো অভিজ্ঞ, সৎ ও ব্যক্তিত্বসম্পন্ন নেতাদের মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত করার প্রয়োজনীয়তাও বাড়ছে। গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে পাঁচবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত আওয়ামী লীগের এক প্রবীণ নেতা বলেন, রাজনৈতিক অস্থিরতা যত বাড়বে, আমির হোসেন আমু, তোফায়েলসহ কয়েকজন সিনিয়র নেতার অভিজ্ঞতা দল ও সরকারের কাজে লাগানোর প্রয়োজনীয়তা বাড়বে। বিষয়টি সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারকের বিবেচনায় আছে বলে মনে করেন সিনিয়র এই আওয়ামী লীগ নেতা।
আওয়ামী লীগের একাধিক নীতিনির্ধারক জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন ভারত সফরের কারণে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল মোমেনের কার্যালয় টিকে থাকতে পারে। তবে একটি স্পর্শকাতর মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থেকে আবদুল মোমেন একের পর এক বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন, তাকে ওই মন্ত্রণালয়ে রেখে দিলে সব মহলে ভুল বার্তা যাবে বলেও মনে করছেন তারা। আবদুল মোমেনকে অন্য বিভাগে মন্ত্রী করে কাকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আনা যায়? সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানিয়েছে, তারা এ বিষয়ে ভাবছেন। এ ক্ষেত্রে অনেকেরই প্রথম পছন্দ তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাসান মাহমুদ।
নানা কারণে গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কি নতুন মন্ত্রী পেতে যাচ্ছে? দ্রব্যমূল্যের ক্রমবর্ধমান কারণে হাঁসফাঁস করা নাগরিকদের কতটা স্বস্তি দিতে পারবেন অন্য কেউ, তা নিয়ে সরকারের নীতিনির্ধারকরাও আলোচনা করছেন বলে জানা গেছে। তবে একজন অব্যবসায়ী পেশাজীবীকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে আনা যায় কি-না তা নিয়ে চর্চা ভেতরে ভেতরে আছে। সরকারের নীতিনির্ধারকরা বলেছেন, অফিস পরিবর্তন হলে টিপু মুনশি অন্য কোনো গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ে যেতে পারেন। তাদের ধারণা, সেক্ষেত্রে বর্তমান পূর্ত প্রতিমন্ত্রীকে দেখা যাবে অন্য মন্ত্রণালয়ে।
সরকার ও আওয়ামী লীগের একাধিক নীতিনির্ধারক মনে করছেন, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ, স্বাস্থ্য, রেলপথ, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা, ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ে নতুন মুখ আসলে সব মহলে ইতিবাচক বার্তা যেতে পারে।
এর আগে আওয়ামী লীগ সরকারকে টিকিয়ে রাখতে যা যা করণীয়, তা করতে ভারতকে অনুরোধ করার অভিযোগ উঠে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বিরুদ্ধে। যদিও পরবর্তীতে তিনি নিজেই তা অস্বীকার করেন।