বাংলাদেশ নিয়ে প্রতিনিয়ত আলোচনা হয়ে থাকে আন্তর্জাতিক অনেক গণমাধ্যমে। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রায়শই বাংলাদেশ নিয়ে হয়ে থাকে নানা ধরনের আলোচনা। এবার হয়নি তার ব্যতিক্রম। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারী প্রতিনিয়ত বাংলাদেশে চলমান ও সমসাময়িক অনেক বিষয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে তুলে ধরেন।এ নিয়ে নতুন করে দিয়ে এটার একটি লেখনী তুলে ধরা হলো হুবহু:-
বাংলাদেশে একটি অবাধ এবং সুষ্ঠু নিবার্চন আয়োজনে রাজনৈতিক দল, যুবসমাজ এবং পুলিশসহ সকলের দায়িত্ব রয়েছে বলে মনে করেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিল (এনএসসি)’র স্ট্র্যাটেজিক কমিউনিকেশন পরিচালক অ্যাডমিরাল জন কিরবি।
রাজনৈতিক সহিংস পরিবেশে অবাধ এবং সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারেনা বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বাংলাদেশের নির্বাচন প্রক্রিয়ায় ভারতের ভূমিকা নিয়ে সরাসরি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি বাইডেন প্রশাসনের এই শীর্ষ কর্মকতা।
বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের ফরেন প্রেস সেন্টারে বাংলাদেশের আগামী জাতীয় নির্বাচন, দেশের বিগত দু’টি নির্বাচনে আঞ্চলিক দুই প্রভাবশালী দেশ ভারত এবং চীনের ভূমিকা এবং বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন কর্তৃত্ববাদী প্রধানমন্ত্রীর প্রতি সমর্থন প্রসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান জানতে চাইলে এই মন্তব্য করেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের স্ট্র্যাটেজিক কমিউনিকেশন পরিচালক অ্যাডমিরাল জন কিরবি।
যুক্তরাষ্ট্র প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের পররাষ্ট্রনীতি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে ওয়াশিংটন ভিত্তিক বিদেশি সাংবাদিকদের সঙ্গে আলোচনা করতে স্টেট ডিপার্টমেন্টের ফরেন প্রেস সেন্টারে এই ব্রিফ্রিংয়ের আয়োজন করা হয়।
ব্রিফ্রিংয়ে বাংলাদেশের নাজুক গণতান্ত্রিক পরিস্থিতি উল্লেখ করে স্টেট ডিপার্টমেন্ট এবং হোয়াইট হাউস করেসপন্ডেন্ট মুশফিকুল ফজল আনসারী জানতে চান, “যুক্তরাষ্ট্র শুরু থেকেই বাংলাদেশে সত্যিকারের নির্বাচন আয়োজনের তাগাদা দিয়ে আসছে। এই তাগাদার ভিতরেও আমরা ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের দুটি প্রহসনমূলক নির্বাচন দেখতে পেলাম। আঞ্চলিক দুই শক্তি ভারত এবং চীন শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন কর্তৃত্ববাদী সরকারকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। শেষ দুটি নির্বাচনেও আমরা দেখেছি শেখ হাসিনাকে যেকোনো উপায়ে ক্ষমতায় রাখতে কতোটা তৎপর ছিলো প্রতিবেশি ভারতীয় কর্তৃপক্ষ। সামনে আরেকটি জাতীয় নির্বাচন। বাংলাদেশের জনগণ চাচ্ছে একটি নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনটি সুষ্ঠুভাবে হোক। যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যাশা মতো গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ধরে রাখতে অন্তত আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠানে ভারত সমর্থন দিবে বলে কী আপনি মনে করেন? যেমনটি আমরা লক্ষ্য করছি এ বিষয়ে আপনারা তৎপরতা জোরদার করেছেন।”
জবাবে অ্যাডমিরাল জন কিরবি বলেন, “আমি ভারতের তরফে কোনো কথা বলতে পারিনা। আমি কেবল যুক্তরাষ্ট্রের দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরতে পারি। বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক দৃঢ় করার লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। জলবায়ু উন্নয়ন, অর্থনীতি, মানবিক কার্যক্রমে সহায়তা, নিরাপত্তা-এসকল ইস্যুতে অংশীদার হিসেবে সহযোগিতার ওপর জোর দেয়া হচ্ছে, একিসঙ্গে এগুলোর ভবিষ্যত সম্ভাবনার দিকগুলোও রয়েছে।”
তিনি বলেন, “সকলের অংশগ্রহণমূলক এবং গণতান্ত্রিক বাংলাদেশকে আমরা সমর্থন করি, যে বাংলাদেশ নিয়ে সবাই গর্ব করতে পারে। শক্তিশালী গণতন্ত্রের ভিত্তির ওপরই একটি দেশ সমৃদ্ধ হয়, যেখানে সকল জনগণ নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করার সুযোগ পাবে, আইনের শাসন থাকবে।”
আগামী নির্বাচন অবাধ এবং সুষ্ঠুভাবে আয়োজন করতে বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট সকলের ভূমিকা রাখার তাগিদ দিয়ে অ্যাডমিরাল কিরবি বলেন, “অবাধ এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করাটা ভোটারসহ সকলের দায়িত্ব। দায়িত্ব রয়েছে সকল রাজনৈতিক দল, যুব সমাজ এবং পুলিশের।”
রাজনৈতিক সহিংস পরিবেশে অবাধ এবং সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারেনা বলেও উল্লেখ করেন বাইডেন প্রশাসনের এই শীর্ষ কর্মকর্তা।
প্রসঙ্গত, এ দিকে এই বিষয় নিয়ে বাংলাদেশকে আরো বেশি সতর্ক হতে বার বার নির্দেশ দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এ ছাড়াও নির্বাচনে যেন সকলেই অংশ নেয় এমন অংশগ্রহণ মূলক নির্বাচন দিতে নির্দেশ দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।