দীর্ঘদিন ক্ষমতায় না থাকায় হতাশাগ্রস্থ হয়ে বিএনপি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন দলের বিভিন্ন নেতাকর্মীরা। তবে এ পরিস্থিতির মধ্যদিয়েও দলকে ছেড়ে যাননি অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার। সব সময় দলকে এগিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে গেছেন তিনি। তবে দুর্ভাগ্যবসত এবার তাকেই বিএনপি থেকে প্রত্যাহার করা হলো। জানা যায়, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টার পদ তেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে তাকে। তবে এ খবরে খুশি হয়েছেন বলে জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী
অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার। দেওয়া তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তৈমুর আলম বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ, আমি খুশি হয়েছি এ খবরে। তারেক রহমান সাহেবকে ধন্যবাদ দিচ্ছি। কারণ, আমি জনতার ও রিকশাওয়ালাগো তৈমুর ছিলাম, রিকশাওয়ালাগো তৈমুর হয়া গেলাম। ঠেলাগাড়িওয়ালাগো ছিলাম।’
সোমবার (৩ জানুয়ারি) বিকাল সাড়ে চারটার দিকে মুঠোফোনে দেওয়া প্রতিক্রিয়ায় এসব কথা বলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির প্রভাবশালী এই নেতা।
দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টার পদ প্রত্যাহার করে নেওয়ার পর নির্বাচনে থাকছেন কিনা—এমন প্রসঙ্গে তৈমুর আলম বলেন, ‘এখনও আছি। গতবার তো দল আমাকে বসায়া দিসিলো। এখন আমার আর কোনও বাধা রইলো না। বসানোর জন্য ফোন করতে পারবে না।’
সোমবার বিকাল সোয়া চারটার দিকে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘তাকে (তৈমুর আলম) পদ থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।’ দলের পদ থেকে নির্বাচনে কোনও প্রভাব পড়বে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে তৈমুর আলম খন্দকার বলেন, ‘না, না, কোনও প্রভাব পড়বে না। বরং যারা ভোটার তারা ভোট দিতে পারবে।’
নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার কোনও সম্ভাবনা আছে কিনা—এমন প্রশ্নের উত্তরে তৈমুর আলমের মন্তব্য, ‘বসবো ক্যান। এবার তো দল বাঁচাইয়া দিসে। গতবার একটা প্রার্থীর পথ সুগম করে দিয়েছিল। এবার যদি দল মনে করে, যে ওই প্রার্থীর পথ সুগম করে দিয়েছে, তাহলে এটা তাদের ভুল সিদ্ধান্ত হবে।’
দলের পদ প্রত্যাহারে নির্বাচনে কী প্রভাব পড়বে—এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘প্রত্যাহারের ফলে আমার নির্বাচনে প্রভাব পড়বে না। আমি নির্বাচন থেকে বসছি না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আগেরবার দলের কথায় বসেছি। এবার আর সেটি থাকছে না। আমাকে নির্বাচন করার পথ সুগম করে দিয়েছে দল। তবে বিএনপি এটি ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমি জনগণের সঙ্গে আছি।’
পদের পর দলেও থাকতে পারবেন কিনা, এমন প্রশ্নের উত্তরে তৈমুর আলম বলেন, ‘এটা দল ভালো জানবে। রাখবে কি রাখবে না, এটা দল বলতে পারবে।’
‘আমি জনগণের সাথেই থাকতে চাই। জনগণই আমার সব’—যোগ করেন তৈমুর আলম খন্দকার।
এর আগে সদ্য বিদায়ী বছরের ২৫ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়কের পদ থেকে তৈমুর আলমকে প্রত্যাহার করা হয়।
পরদিন তিনি বলেছিলেন, তার সঙ্গে আলোচনা করেই ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক হিসেবে একজনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
তবে হঠাৎ করেই বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টার পদ থেকে তাকে সরিয়ে দেয়ায় বেশ শোরগোল চলছে দলের বিভিন্ন নেতাকর্মীদের মাঝে। এছাড়া সম্প্রতি কিছুদিন আগেও বিএনপি থেকে এক যোগে পদত্যাগ করেছেন প্রায় ৬ শতাধিক নেতাকর্মী।