পদ্মা সেতু বাংলাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় কাঠামো, তাই জনসাধারণকে এর নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে কিছু নিয়ম মেনে চলতে সহায়তা করার অনুরোধ করেছেন। এটি নির্ধারিত নিয়ম রাস্তা এবং সেতুর ক্ষতি কমাতে নির্ধারিত ওজন সীমা মেনে চলারও আহ্বান জানিয়েছে। পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক শফিকুল ইসলাম বলেন, সেতু দিয়ে প্রতিদিন ৭৫ হাজার যানবাহন চলাচল করবে। এতে উপকৃত হবেন দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১টি জেলার তিন কোটি মানুষ। তাই এর ভালো মন্দ সব খেয়াল আমাদেরই রাখতে হবে।
আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পদ্মকন্যা উপাধি দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবদুর রহমান। তিনি বলেন, প্রিয় আপা পদ্মা আপনার প্রতি সাগ্রহে আগ্রহী। আপনাকে এক নজর দেখার অপেক্ষায় পদ্মার পাড়ে লাখো মানুষ। বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগের ৬৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। গণভবন থেকে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আবদুর রহমান বলেন, আপা, গতকাল আমরা কয়েকজন গিয়েছিলাম। পদ্মা তোমার প্রতি অধীর আগ্রহে আছে। সাহসী ও সাহসী মায়ের কন্যা শেখ হাসিনাকে দেখার অপেক্ষায় পদ্মার পাড়ে লাখো মানুষ। অনেকেই বলছেন উৎসব বন্ধ করতে হবে। আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এই সদস্য বলেন, প্রিয় নেত্রী, শুধু জনসমাগম হবে না, উৎসবের সমাবেশ হবে তা আপনি ভাবতে পারবেন না। আনন্দের জোয়ারে সৃষ্টি হয়েছে নতুন পদ্মা, সেই অপেক্ষায় মানুষ। পদ্মা সেতু পার হয়ে ৭৫-এর প্রাণনাশকারীদের জবাব দেব।
পদ্মা সেতুর সমালোচনা করে তিনি বিএনপি নেতাদের বলেন, সেদিন কেউ বলেছিল এখানে ফেরি রাখার দরকার নেই। দৌলতদিয়া পাটুরিয়ায় পাঠাতে হবে। আমি বলিনি ভাই কিছু ফেরি রাখার দরকার। কারণ খালেদা জিয়া এই পদ্মায় উঠবেন না। ওদের পার হতে হলে এই ফেরি পার হতে হবে। সেজন্য তাদের জন্য কয়েকটি ফেরি ছেড়ে দিতে হবে। আবদুর রহমান আরও বলেন, রাজনৈতিকভাবে জিয়ার রাজবংশকে সমূলে উৎপাটন ও নির্মূল করতে হবে। এই অপশক্তি বাংলাদেশ মানে না। তারা ২১ ফেব্রুয়ারি শহীদ মিনারে যেতে চায় না। তারা ৭ই মার্চ মানে না, ২৬শে মার্চ মানে না, ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস পালন করে না কিন্তু নিজেদের মুক্তিযোদ্ধা বলে দাবি করে। সেদিন সোয়াত জাহাজ থেকে অস্ত্র খালাসের এক পর্যায়ে জিয়াউর রহমান অনুপ্রবেশকারী হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। কিন্তু আজ সেই মুক্তিযুদ্ধে নাম লিখিয়েছেন পাকিস্তানের গুপ্তচর হিসেবে। আমাকে আজ নতুন করে শপথ নিতে হবে। কোথাও সেদিন আমাকে বলা হয়েছিল, তুমি পারো না, শুধু এক পক্ষ অন্য দলের সমালোচনা করে? আমি তাদের বলেছি, আমরা যারা প্রাণনাশের কথা স্বীকার করেছি, যারা আমাদের প্রাণনাশ করেছে, তারা খুনিদের সঙ্গে সহাবস্থান করতে পারে না। হয় তারা থাকবে, নয়তো আমরা থাকব, এ ছাড়া উপায় নেই। সেই পথই আমাদের নিতে হবে।
উল্লেখ্য, আর কিছু মুহুর্ত বাদেই উদ্বোধন হতে যাচ্ছে পদ্মা বহুমুখী সেতু। এটি বাংলাদেশের একটি ঐতিহ্যবাহী ও গৌরজ্জলের একটি দৃষ্টান্ত। বহু দিনের দেখা স্বপ্ন সত্যি হবে ২৫শে জুলাই। প্রমত্ত পদ্মা সেতুর উপর দিয়ে কয়েক মিনিটের মধ্যে পার হওয়া যাবে। পদ্মাপাড়ের আশপাশ থেকে শুরু করে দক্ষিণের ২১টি জেলার মানুষ এ নিয়ে উত্তেজনায় ভাসছেন। তবে এই ঢেউয়ের মধ্যে সবচেয়ে বেশি চিন্তা হচ্ছে পদ্মা সেতুর নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখা। এ জন্য সড়ক পরিবহন ও বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ কিছু নির্দেশনা মেনে ব্যবহারকারীদের জন্য কঠোর নিয়ম আরোপ করবে।