আনিসুল হক হলেন বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের একজন প্রখ্যাত রাজনীতিবীদ এবং সেই সাথে তিনি একজন প্রবীন আইনজীবী। আনিসুল হক বর্তমানে বাংলাদেশের আইনমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন। এই সম্মানীয় পদে অধিষ্ঠিত হবার পর তিনি সততা ও নিষ্ঠার সহিত দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন।সম্প্রতি তিনি তার এক বক্তব্যে বলেছেন বিশ্বব্যাংক পদ্মাসেতুতে অর্থায়ন না করায় আমাদের আত্মমর্যাদা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে।
পদ্মা সেতুতে বিশ্বব্যাংক অর্থায়ন থেকে সরে এসেছে বলে মন্তব্য করেছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক এমপি।
মঙ্গলবার (২৬ জুলাই) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এ কে আবদুল মোমেন সম্পাদিত ‘আমাদের অর্থ আমাদের পদ্ম সেতু’ গ্রন্থের প্রকাশনা উৎসবে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আইনমন্ত্রী এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানের আয়োজন করে চন্দ্রাবতী একাডেমি।
আইনমন্ত্রী বলেন, নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের ফলে আমাদের আত্মসম্মান অনেক বেড়েছে। বাংলাদেশের মানুষের নিজেদের প্রতি দৃঢ় বিশ্বাস আছে। তিনি বলেন, আজ আমরা বঙ্গবন্ধুর ‘আমাদের কেউ আটকে রাখতে পারবে না’ বলার পর্যায়ে পৌঁছেছি। বাঙালিকে কেউ আটকে রাখতে পারবে না, ইনশাআল্লাহ।
তিনি বলেন, বিশ্বব্যাংকের দুর্নীতির অভিযোগে পদ্মা সেতু না করলে কিংবা নিজস্ব অর্থায়নে আজ পদ্মা সেতু না করলে ব্যাপারটা অন্যরকম হতো। হয়তো একসময় পদ্মা সেতু হতো, দক্ষিণবঙ্গের সঙ্গে যোগাযোগ থাকত, কিন্তু আজ যে মর্যাদা আছে তা পেত না।
আনিসুল হক বলেন, বিশ্বব্যাংক যখন পদ্মা সেতু প্রকল্পে অর্থায়ন বন্ধ করে দিয়েছিল, তখন অনেকেই আতঙ্কে ছিলেন যে, এটা আর না হবে। তবে ওই সেতু নির্মাণ সম্ভব হয়েছে।
তিনি বলেন, বিশ্বব্যাংক ভেবেছিল তাদের অর্থায়ন ছাড়া বাঙালিরা পদ্মা সেতু নির্মাণ করতে পারবে না। তারা পদ্মা সেতুর অর্থায়ন বন্ধ করার পর অনেকেই বলেছেন, এই সেতু নির্মাণ করা যাবে না বা বাংলাদেশের অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করা হাস্যকর হবে। তবে জননেত্রী শেখ হাসিনা সেদিন দৃঢ় সংকল্প নিয়ে বলেছিলেন, আমরা আমাদের টাকায় পদ্মা সেতু নির্মাণ করব। তাঁর এই দৃঢ় চেতনা বাঙালির মধ্যে আবেগকে আবার জাগিয়ে তুলেছে।
পদ্মা সেতু দুর্নীতির তদন্ত চেয়েছিলেন বিশ্বব্যাংকের কর্মকর্তারা। আমরা বললাম, তুমি এটা করতে পারবে না। আমরা আমাদের আইন অনুযায়ী তদন্ত করব। পরে বিষয়টি তদন্ত করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। কানাডার আদালতেও পদ্মা সেতুতে দুর্নীতির কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলে জানান আইনমন্ত্রী।
এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম, বই প্রকাশক অধ্যাপক ড. শামসুল হক এবং চন্দ্রাবতী একাডেমির স্বত্বাধিকারী কামরুজ্জামান খন্দকার কাজল।
প্রসঙ্গতা, বিশ্বব্যাংক বিশ্বায়নের লক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকেন। বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশকে ঋণ দিয়ে সহায়তা করে বিশ্বব্যাংক। বিশ্বব্যাংকের সদর দপ্তর অবস্থিত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানীতে। বিশ্বের প্রায় সব দেশ নিয়েই বিশ্বব্যাংক গঠিত।