Thursday , November 14 2024
Breaking News
Home / Countrywide / পদ্মা সেতু তৈরীর বালি দিয়ে এত পরিমাণ বুর্জ খলিফা বানানো যাবে সেটা ধারণারও বাইরে ছিল

পদ্মা সেতু তৈরীর বালি দিয়ে এত পরিমাণ বুর্জ খলিফা বানানো যাবে সেটা ধারণারও বাইরে ছিল

পদ্মা সেতু তৈরী করতে যেয়ে প্রকৌশলীদের অনেক ঝামেলার সম্মুখীন হতে হয়েছে। কেননা পদ্মা সেতু পৃথিবীর দ্বিতীয় স্রোতস্বিনী নদী। পদ্মা সেতু নির্মাণ করতে লেগেছে প্রচুর বালি যা কল্পনাও করা যাবেনা। পদ্মা সেতু নির্মাণ করতে সব থেকে মিহি বালি ব্যবহার করা হয়েছে। সম্প্রতি জানা পদ্মা সেতু নির্মাণ করতে যে বালি লেগেছে সেই বালি দিয়ে ৫৭ টি বুর্জ খলিফা বানানো যেত।

পদ্মা সেতু উদ্বোধন করা হয়েছে। সেতুটি উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই। এই সেতু নিয়ে সারা বিশ্বে চর্চা চলছে। এই সেতু তৈরির জন্য প্রায় ৬৫ লাখ ঘনমিটার বালি ব্যবহার করা হয়েছে। এই বালি দিয়ে ১৯ কোটি ১২ লাখ ৮৭ হাজার বর্গফুট আয়তন বিশিষ্ট বিল্ডিং তৈরি করা যাবে যা ৫৭টি বুর্জ খলিফার সমান।

এখন বুর্জ খলিফার নামটা মাথায় আসলেই বিশ্বের অন্যতম উঁচু স্থাপত্য। কিন্তু বাংলাদেশে পদ্মা সেতুর মোট উচ্চতা ৫৭টি বুর্জ খলিফার সমান! পদ্মা সেতু এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যে এটি ভূমিকম্প সহ্য করতে পারে। মূল সেতুটি ৬.১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ। উভয় পাশে রাস্তার মোট দৈর্ঘ্য ১৪ কিমি। আগামীকাল এই দোতলা সেতুর নিচতলা দিয়ে ট্রেন চলবে।

দোতলায় রাস্তা করা হয়েছে। সেতুটি অতিরিক্ত বোঝা বহন করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। পদ্মা নদী দ্রুত প্রবাহিত হচ্ছে। এই এলাকা ভূমিকম্প প্রবণ। তাই সেতুটি কিছুটা বাঁকানো হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্রোত পদ্মনাভ নদীর তলদেশে সেতুর পিলারের কাছে ৭২ মিটার পর্যন্ত মাটি সরাতে পারে।

তাই এই সেতুকে টিকিয়ে রাখতে হলে ভিত মজবুত হওয়া জরুরি। হিসাব করেই সেখানে পাইলিং এবং পিলার বসানো হয়েছে। ব্যবহার করা হয়েছে ২৬২টি ইস্পাত বা স্টিল ও ৩২টি রডের পাইল । ওই পাইলগুলি নদীর জলের নিচে ১২৫.৫ মিটার বা ৪১১.৫০ ফুট গভীর পর্যন্ত আছে । তাঁদের হিসাবে, পদ্মাসেতুতে যত পাইল বসানো হয়েছে, সব মিলিয়ে সেগুলির মোট উচ্চতা হবে প্রায় ৩৫ হাজার ২৮০ মিটার। যা মাউন্ট এভারেস্টের চারগুণেরও বেশি।

ওই সেতুর নির্মাণে প্রায় ২ কোটি ১৭ লাখ জিও ব্যাগ ব্যবহার হয়েছে। এর কোনওটির ওজন ৮০০ কেজি। জিও ব্যাগে বালি ভরে ফেলা হয়েছে নদীর তলদেশে । পাথর ফেলা হয়েছে প্রায় সোয়া ১০ লাখ ঘনমিটার। এই পরিমাণ পাথরকে ১৩ হাজার বর্গফুট জুড়ে স্তূপ করে রাখলে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পর্বত কেওক্রাডংয়ের থেকেও উঁচু দেখাবে।

কর্মকর্তা ও বিশেষজ্ঞরা জানান, সেতুটি নির্মাণে প্রায় ৭.৫ মিলিয়ন ঘনমিটার বালি ব্যবহার করা হয়েছে। এ বালু দিয়ে ১৯ কোটি ১২ লাখ ৮ হাজার বর্গফুট ভবন নির্মাণ করা যাবে। যা প্রায় ৫৬টি বুর্জ খলিফার সমান। উল্লেখ্য, বিশ্বের অন্যতম উঁচু ভবন বুর্জ খলিফার মোট আয়তন ৩৩ লাখ ৩১ হাজার বর্গফুট।

পদ্মা সেতু এবং সংযোগকারী রাস্তা নির্মাণে ব্যবহার হয়েছে ১ লাখ ৮ হাজার টন রড। এই রড যদি লম্বালম্বি রাখা হয়, তাহলে ব্যবহৃত রডের মোট দৈর্ঘ্য দাঁড়াবে ১ হাজার ২৯৬ কিলোমিটার। যা বাংলাদেশে সব চেয়ে উত্তরের তেঁতুলিয়া থেকে দক্ষিণের আরেক প্রান্ত টেকনাফের দূরত্বের চেয়েও বেশি। আগামী ১০০ বছরে এই সেতুর কোনরকম ক্ষতি হবে না, সেই হিসাব করেই সেতুর নকশা এবং পরিকাঠামো করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, বুর্জ খলিফা বিশ্বের অন্যতম দীর্ঘতম একটি বিল্ডিং। এটা ডুবাইতে অবস্থিত। বিল্ডিংটি তৈরী করতে প্রচুর অর্থ খরচ হয়েছে। বুর্জ খলিফা দেখতে প্রত্যেক বছর অসংখ্য দর্শণার্থী ভিড় করেন ডুবাইতে। অনেক আলোক সজ্জাও করা হয়েছে বুর্জ খলিফায়। পদ্মা সেতুও অনেক আলোক সজ্জায় সজ্জিত করা হয়েছে।

About Shafique Hasan

Check Also

উপদেষ্টা পরিষদেই বৈষম্য

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে আঞ্চলিক বৈষম্যের অভিযোগ উঠেছে। ২৪ সদস্যের এই পরিষদে ১৩ জনই চট্টগ্রাম …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *